ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি বুয়েটসহ বড় ভার্সিটি রাজি হলেই ছোটরা রাজি ॥ ফের বৈঠক কাল

ভার্সিটিতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার অনিশ্চয়তা কাটছে না

প্রকাশিত: ১১:০৬, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ভার্সিটিতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার অনিশ্চয়তা কাটছে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি ঘোষণা দিলেও বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আপত্তির কারণে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার অনিশ্চয়তা কাটছে না। ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাকিয়ে আছে ঢাবি ও বুয়েটসহ বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। তারা রাজি না হলে ছোট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সমন্বিত পরীক্ষায় আসবে না। ইউজিসির সঙ্গে বৈঠকে অনেক উপাচার্য জানিয়ে দিয়েছেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়নে ঢাবি ও বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকিয়ে আছেন তারা। এ অবস্থায় বৈঠকেই জাতির স্বার্থে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার আওতায় আসার আহ্বান জানিয়েছে ইউজিসি। ঢাবি বুয়েটের জন্য সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা পরিকল্পনা আটকে থাকবে না জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ঢাবি ও বুয়েট সিদ্ধান্তহীনতার জন্য গোটা জাতির আকাক্সক্ষা অপূর্ণ থাকতে পারে না। কারও ‘ইগো’ যেন অন্যদের প্রভাবিত করতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। সোমবার ইউজিসিতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক বৈঠকে এমন মতামতই উঠে এসেছে। ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় ছিলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম শেখ এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মহিউদ্দিন আহমাদ। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি ইউজিসি ঘোষণা দেয়, চলতি বছর থেকেই দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পরে একই মত দেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি। তবে ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশে পরিচালিত চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি, চবি, রাবি, জাবি) এবং বুয়েট এখনও এ বিষয়ে কথা দেয়নি। ওসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শীঘ্রই ইউজিসি বৈঠকে বসবে বলে জানিয়েছেন চেয়াররম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। যদিও ভর্তি প্রক্রিয়ায় নানা জটিলতা ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বায়ত্তশাসন বা স্বাতন্ত্র বজায় রাখতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে একমত হতে পারছে না ঢাবি প্রশাসন। এক্ষেত্রে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ঢাবি শিক্ষকদের মাঝেও। এমনকি সমন্বিত পরীক্ষার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ডাকসু। সোমবারের বৈঠকে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম বলেন, ইউজিসির সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানাই। বুয়েট যদি পাশে থাকে তবে গুচ্ছপদ্ধতি এগিয়ে নেব আমরা, তবে বুয়েট অংশ না নিলে চুয়েট থাকবে না। রুয়েট উপাচার্য ড. রফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, বুয়েট হচ্ছে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান, তারা আমাদের আদর্শ, তাই বুয়েটকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত বা গুচ্ছপদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা চাই ইউজিসির আহ্বানে বুয়েট এগিয়ে আসবে, নতুবা এটি বাস্তবায়ন করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমাদ বলেন, সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে, তবে বড় কোন বিশ্ববিদ্যালয় না এলে এ কার্যক্রমে যুক্ত হতে আমাদের নানা ধরনের বাধার মুখে পড়তে হবে। উপাচার্যদের মতামতের পর ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, সকল স্থান থেকে আমরা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। এ বিষয়ে কিছু চাপও রয়েছে, এতে কিছু আসে যায় না। অভিভাবক ও নারী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেব। কারও ইগো যেন অন্যদের প্রভাবিত করতে না পারে সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ইউরোপ ও ভারতে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে আমরা কেন সেটি বাস্তবায়ন করতে পারব না? ঢাবি বুয়েটের জন্য কোন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে না। তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য অন্যদের ভোগান্তি হবে তা মেনে নেয়া হবে না। আমরা জাতির স্বার্থে যে কোন মূল্যে সমন্বিত ভর্তি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করব। যদি কেউ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না আসে তারা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়বে। আমরা এবার একটি উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাই। এটি চালু হলে আগামীতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়া ছাড়া কোন বিকল্প থাকবে না।
×