ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ তহবিল গঠন

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে প্রত্যেক ব্যাংক পাবে ২০০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে প্রত্যেক ব্যাংক পাবে ২০০ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশে বিশেষ ব্যবস্থায় তহবিল সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে। একাধিক প্রক্রিয়ায় সেই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া যাবে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অব-সাইট সুপারভিশন থেকে প্রকাশিত এক সার্কুলারের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। জানা গেছে, তারল্য সঙ্কট ও আস্থাহীনতার কারণে ধারাবাহিক দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। বাজারে টানা দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল চায়। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতামত জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিবাচক সাড়া দেয়। অর্থ মন্ত্রণালয় শেয়ারবাজারে তারল্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। এরপর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশে বিশেষ তহবিল গঠন এবং বিনিয়োগের নীতিমালা বিষয়ে সোমবার সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়, আর্থিক খাতের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকসমূহের নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগের আইন রয়েছে। দেশের পুঁজিবাজার ও মুদ্রা বাজারের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন হিসেবে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্রমাগত তারল্য প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান (মার্চেন্ট ব্যাংক ও ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউস) এবং অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসকে শুধুমাত্র পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশে বিশেষ ব্যবস্থায় এ তহবিল সরবরাহের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে। একাধিক প্রক্রিয়ায় সেই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া যাবে। রেপোর সুদের হার ৫ শতাংশ নির্ধারিত থাকবে এবং কোন প্রকার অকশনের প্রয়োজন হবে না। এছাড়া ব্যাংকসমূহের অতিরিক্ত তারল্য হতে ট্রেজারি বন্ড বা বিল রেপোর মাধ্যমে এই তারল্য সুবিধা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক হতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চাহিদা অনুসারে সর্বোচ্চ ৯০ দিন মেয়াদী রেপো প্রদান করা হবে। এ সুবিধা ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সার্কুলারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ব্যাংক বা ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি (মার্চেন্ট ব্যাংক/ডিলার লাইসেন্সধারী ব্রোকারেজ হাউস) কর্তৃক কোন তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিজ ব্যাংকের কোন শেয়ার ক্রয় করা যাবে না। অন্য কোন তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উক্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ২ শতাংশের বেশি ক্রয় করা যাবে না। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভিন্ন অন্য কোন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ওই কোম্পানির মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ১০ শতাংশের বেশি ক্রয় করা যাবে না। ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি নয় এরূপ মার্চেন্ট ব্যাংক/ব্রোকারেজ হাউস (ডিলার) কর্তৃক কোন ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উক্ত কোম্পানির মোট ইস্যুকৃত শেয়ারের ২ শতাংশের বেশি ক্রয় করা যাবে না। মেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মোট ইউনিটের ১০ শতাংশ এবং বেমেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মোট ইউনিটের ১৫ শতাংশের বেশি ক্রয় করা যাবে না।
×