ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আমতলীতে ইটভাঁটিতে দেদার পুড়ছে বনের কাঠ

প্রকাশিত: ১০:০০, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 আমতলীতে ইটভাঁটিতে  দেদার পুড়ছে  বনের কাঠ

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ৯ ফেব্রুয়ারি ॥ বরগুনার আমতলী-তালতলী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ড্রাম চিমনির অবৈধ ইটভাঁটি গড়ে উঠছে। এসব ভাঁটিতে দেদার পুড়ছে কাঠ। নীরব পরিবেশ অধিদফতরের লোকজন। ভাঁটির মালিকরা পরিবেশ অধিদফতরের লোকজনকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছেন এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এতে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। জানা গেছে, আমতলী ও তালতলী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স ও কৃষি অফিসের ছাড়পত্র ছাড়া ১০ টি ড্রাম চিমনির (ব্যারেল) ইটভাঁটি রয়েছে। এসব ভাঁটিতে স্বল্প উচ্চতার ড্রাম চিমনি ও ৫০-৬০ ফুট উচ্চতার অস্থায়ী চিমনি স্থাপন করা হয়েছে। জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানোর জন্য গ্রাম, বাঁশবাড়িয়া চর ও ফারতার বনাঞ্চল থেকে বিভিন্ন জাতের গাছ কেটে স্তূপ করে রাখছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক হুমকির আশঙ্কা করেছে পরিবেশবাদীরা। উপজেলার আমতলী সদর, চাওড়া ও কুকুয়া ইউনিয়নে ১০ টি ড্রাম চিমনির ভাঁটি রয়েছে। ভাঁটিগুলো হলো উপজেলার রায়বালা গ্রামের বিবিসিকো, মহিষডাঙ্গা এলাকায় এমসিকে, চালিতাবুনিয়ার এইচএসবি, মধ্য চন্দ্রার (ইব্রাহিমপুর) এমএসবি, পাতাকাটার এইচআরডি। এ সকল অবৈধ ভাঁটির জেলা প্রশাসন, কৃষি অফিস ও পরিবেশ অধিদফতরের কোন অনুমোদন নেই। পরিবেশ অধিদফতরের লোকজনকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে মালিকরা কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছেন। ইব্রাহিমপুর গ্রামের এমএসবি ব্রিকসের মালিক সেলিম হাওলাদার বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছি। পরিবেশ অধিদফতরের লোকজন জেনেও কিছু বলছে না। কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রায়বালা গ্রামের বিবিসিকো ব্রিকসের মালিক হান্নান মৃধা বলেন, কাঠ দিয়ে ইট পোড়াতে কোন অনুমতি লাগে না। তিন বছর ধরে ছাড়পত্র ছাড়াই তো ইট পোড়ালাম। কেউ তো কিছু করতে পারল না। এএমবি ব্রিকসের মালিক আবুল মৃধা পরিবেশ অধিদফতর, জেলা প্রশাসক ও কৃষি অফিসের ছাড়পত্র ছাড়া ভাঁটি নির্মাণের কথা স্বীকার করে বলেন, জেলা প্রশাসন অফিস থেকে লোকজন এসে জরিমানা করে গেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, উপজেলার কোন ইটভাঁটিতে ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। আমার ছাড়পত্র ছাড়াই ভাঁটি নির্মাণ করছে। পরিবেশ অধিদফতর বরিশাল বিভাগীয় কর্যালয়ের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম বলেন, আমতলীতে ৯টি এবং তালতলীতে ১টি ভাঁটির পরিবেশ অধিদফতরের কোন ছাড়পত্র নেই। পরিবেশ অধিদফতরের নীতিমালা লঙ্ঘন করে ওই ১০টি ভাঁটি নির্মাণ ও কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ওই সকল ভাঁটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, এ সকল অবৈধ ভাঁটিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×