ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাত বছর চলছে এ কার্যক্রম

অনুমোদনহীন মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ভর্তি ॥ ক্লাস বর্জন, বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 অনুমোদনহীন মেডিক্যাল  কলেজে ছাত্র ভর্তি ॥ ক্লাস বর্জন, বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও গত সাত বছর ধরে ছাত্র ভর্তি করেও তাদের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারী শাহমখদুম মেডিক্যাল কলেজ নামের একটি চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে রবিবার সকাল থেকে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন কর্মসূচী পালন শুরু করছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না। বিএমডিসির অনুমোদন ছাড়াই গত সাত বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে, যা গুরুতর অনিয়ম। এদিকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন না পাওয়ায় ভবিষ্যত জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রাজশাহীর বেসরকারী শাহমখদুম মেডিক্যাল কলেজের ২০০ শিক্ষার্থী। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে। ফলে রবিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন কর্মসূচী পালন করছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না। শাহমখদুম মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা জানায়, এই কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত বছর মাত্র চারজন এমবিবিএস পাস করেন গত বছরের মার্চে। কিন্তু এমবিবিএস পাস করেও কলেজটির বিএমডিসির অনুমোদন না থাকায় ওই শিক্ষার্থীরা গত এক বছর ধরে ইন্টার্নশিপ করতে পারছেন না। এতে করে তারা প্র্যাক্টিস করারও অনুমতি পাচ্ছেন না। এমনকি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসকও হতে পারছেন না। পাস করা ওই চার শিক্ষার্থী হলেন, মামুনুর রশিদ, রুমা খাতুন, জিন্নাহ ও মৌ খাতুন। সূত্রমতে, এখন পর্যন্ত মোট সাতটি ব্যাচে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় কলেজটিতে। এর মধ্যে প্রথম ২টি ব্যাচ ও চতুর্থ ব্যাচে ২৫ জন করে এবং পরবর্তীতে ৫০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন মিলে। তবে কলেজটিতে শুরু থেকেই অনুমোদন না থাকা, শিক্ষক সঙ্কট এবং হাসপাতালে রোগী না থাকায় আসন ফাঁকা থেকে যায়। ফলে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন কলেজটিতে। কলেজের এমবিবিএস পাস করা শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নানা সঙ্কটের মধ্যেও তিনি গত বছর ১২ মার্চ এমবিবিএস পাস করেন। কিন্তু কেন ইন্টার্নশিপ করতে পারছি না, সেটি জানতে বার বার মেডিক্যাল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে গেছি। কিন্তু তারা আমাকে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। উল্টো আমাকেই নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে, যেন আমি বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করি।’ এদিকে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল ইসলাম স্বাধীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএমডিসির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তারা পরিদর্শন করে গেছেন। কিছু শর্ত দিয়েছেন। সেগুলো পূরণের চেষ্টা চলছে। হয়তো দ্রুত আমরা অনুমতি পেয়ে যাব। তবে কিছু শিক্ষার্থী হয়তো কারও প্ররোচণায় আন্দোলনে যাচ্ছে’। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কলেজে পরিদর্শন শেষে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ২৫ শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমোদন দেয়। কিন্তু সেখানে ৫০ শিক্ষার্থী ভর্তি করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরে এই অনিয়ম রাবি কলেজ পরিদর্শকের নজরে আসার পর ২০১৬ সালে সেই সেশনের কার্যক্রম স্থগিত করা করে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। কিন্তু সদুত্তর না পাওয়ায় সেই সেশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
×