ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষায় ডাকসুর বিরোধিতা

প্রকাশিত: ১২:৩২, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষায় ডাকসুর বিরোধিতা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষার বিরোধিতা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা বজায় রাখতে ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। শনিবার বিকেলে ডাকসুর সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক কার্যনির্বাহী সভায় এজিএস সাদ্দাম হোসেনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সকল প্রতিনিধির সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিকেল তিনটা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত সভা চলে। ডাকসুর সভাপতি ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, ভিপি নুরুল হক নূর, জিএস গোলাম রাব্বানী, এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ ডাকসু প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট ১২ বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তোলেন ডাকসুর এক সম্পাদক। পরে অন্য ডাকসু নেতারাও তার বক্তব্যের সঙ্গে সম্মতি জানান বলে জানা গেছে। সভার প্রথম এজেন্ডা হিসেবে পূর্ববর্তী সভার কার্যবিবরণী পড়ে শোনান সদস্য রাকিবুল ইসলাম। দ্বিতীয় এজেন্ডা তোলেন জিএস গোলাম রাব্বানী। এ এজেন্ডাটি ছিল ডাকসুর মাধ্যমে ব্যয়কৃত অর্থের অডিট সম্পন্নকরণ। এ বিষয়ে বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ শিবলি রুবাইয়াত। তিনি জানান, অডিট সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যেই দুইজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পেমেন্ট অনলাইনের মাধ্যমে দেয়ার বিষয়টি ছিল তৃতীয় এজেন্ডা। মোবাইল ব্যংকিংয়ের মাধ্যমে সকল ফি পরিশোধের পক্ষে সমর্থন জানান সবাই। এটি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগ ও ডাকসুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদককে দায়িত্ব দেয়া হয়। তারা আলোচনা করে এ বিষয়টি ঠিক করবেন। চতুর্থ এজেন্ডা ছিল পরিবহনসংক্রান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন খাতে নতুন তিনটি বাস যুক্ত হবে। এছাড়া কুমিল্লা বিশ্বরোড থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত নতুন এ বাসের ব্যবস্থা করা হয়। ষষ্ঠ এজেন্ডা তোলেন ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী। এ এজেন্ডার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্য সংস্কার ও ইতিহাস সংরক্ষণে ভাস্কর্যের গায়ে পাদটীকা স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সম্পাদককে দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও সুযোগ নিশ্চতকরণ নিয়ে ছিল সপ্তম এজেন্ডা। এটি উত্থাপন করেন ডাকসু সদস্য যোশীয় সাংমা চিবল। এটি বাস্তবায়নে প্রথমেই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করার দায়িত্ব দেয়া হয় চিবলকে। উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি প্রতিবন্ধীদের সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেন। অষ্টম এজেন্ডা ছিল ডাকসুর অভিষেক অনুষ্ঠানের পরিবর্তে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়ার বিষয়ে। সবার আলোচনার ভিত্তিতে আগামী মার্চ মাসের ১ থেকে ৬ তারিখের মধ্যে নবীনবরণের সিদ্ধান্ত হয়। ক্যাম্পাসে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে করণীয় ছিল নবম এজেন্ডা। এটি উত্থাপন করেন ডাকসুর সদস্য মাহমুদুল হাসান। এর অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। সভার দশম এজেন্ডা ছিল বিভিন্ন বিভাগে অতিরিক্ত উন্নয়ন ফি আদায় সংক্রান্ত। ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং সমর্থন জানান সভার আরও কয়েকজন সদস্য। তানভীর হাসান সৈকত বলেন, উপাচার্য এটিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন এবং পরবর্তী ডিনস কমিটির মিটিংয়ে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা করার কথাও জানিয়েছেন। এগারোতম এজেন্ডা তোলেন ভিপি নূর। তিনি আবাসিক হলসমূহে প্রশাসনিকভাবে সিট বণ্টনের কথা বলেন। এর সঙ্গে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে সিট দেয়ার বিষয়টি যোগ করেন ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত। আবাসন সঙ্কট সমাধানে বাঙ্ক বেড স্থাপনের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পাশাপাশি যেসব শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব শেষ তাদের ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে হল ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভার শেষ এজেন্ডা হিসেবে ক্যাম্পাসে ভ্রাম্যমাণ দোকান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি তোলেন ডাকসুর সদস্য মাহমুদুল হাসান। এ সমস্যা সমাধানে ক্যাম্পাসে নির্দিষ্ট কিছুসংখ্যক দোকানকে অনুমতি দেয়া ও তাদের পরিচয়পত্র প্রদানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
×