ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোপার জন্য মরিয়া সাইফ স্পোর্টিং

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

শিরোপার জন্য মরিয়া সাইফ স্পোর্টিং

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত-শক্তিশালী দলগুলোর একটি হচ্ছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লীগে রানার্সআপ হবার সুবাদে তারা সুযোগ পায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে অংশ নেয়ার। ২০১৭-১৮ মৌসুমে লীগে ১২ দলের মধ্যে চতুর্থ হয়ে যোগ্যতা অর্জন করে এএফসি কাপের বাছাইয়ে খেলার। ২০১৮-১৯ মৌসুমের লীগেও তারা হয় চতুর্থ। সেবারই তারা ভারতে গিয়ে আমন্ত্রণমূলক বদৌসা কাপের শিরোপা জিতে তাক লাগিয়ে দেয়। সাইফই বাংলাদেশের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র পেশাদার ক্লাব যারা মৌসুম শুরুর আগে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করেছে বিদেশের (ভারতে) মাটিতে। দেশের ঘরোয়া ফুটবলে তিন মৌসুম ধরে খেলেও এখন পর্যন্ত কোন ট্রফি জিততে পারেনি সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। তবে এবার শিরোপাখরা ঘোচাতে মরিয়া বিগ বাজেটের ক্লাবটি। নতুন কোচ দ্রাগো মামিচের মতো অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ারও বিশ্বাসÑ আসন্ন প্রিমিয়ার লীগে এবার যে কোন বারের চেয়ে ভাল করবে দল। স্বাধীনতা কাপ, ফেডারেশন কাপ, কি প্রিমিয়ার লীগ। বরাবরই ভাল দল গড়েও শেষ পর্যন্ত কেন যেন ষে চার কিংবা কোয়ার্টারে গিয়ে থামতে হয় সাইফকে। একবার এএফসি কাপ খেলেও এখন পর্যন্ত জিততে পারেনি কোন টুর্নামেন্টের ট্রফি। এবার সেই আক্ষেপ ঘোচাতে ক্লাবটি দলে টেনেছে ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচকে। মামিচ বলেন, ‘শেষ দশদিনে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা স্কোয়াডে ঢুকেছে। আমরা এ কদিন নিজেদের ভুলত্রুটি নিয়ে কাজ করেছি। এটা সাইফের হয়ে আমার প্রথম এ্যাসাইনমেন্ট। আশাকরি দারুণ কিছু হবে।’ সাইফের একাদশে মনোযোগ দেয়া যাক। দলের পাঁচ বিদেশী ফুটবলার দেইনার, জাহাঙ্গীর, মুরালিন, এমেরি ও ফায়াকোভা দলের মূল অস্ত্র। অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার সঙ্গে মাঝমাঠ মাতাবেন রাফি-আলামিন-জাফররা। আর গোলবারের নিচে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে থাকবেন সাইফুল, ইমন ও পাপ্পু। সহ-অধিনায়ক রিয়াদুল হাসান রাফি বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে অবশ্যই চেষ্টা করব ভাল কিছু করতে।’ সাইফের পাঁচ ফুটবলার খেলেন জাতীয় দলের হয়ে। দেশের হাতে গোনা যে কটি ক্লাবের একাডেমি আছে, তার মধ্যে সাইফ একটি। এবারও তাদের বয়সভিত্তিক দল থেকে ৬ জন এসেছে মূল দলে। এই দলটা নিয়ে তাই ভীষণ আশাবাদী অধিনায়ক জামাল, ‘স্কোয়াডে অনেক তরুণ খেলোয়াড় রয়েছে, সিনিয়র খেলোয়াড় তেমন নেই। সবাই মোটামুটি ভাল, আমরা চেষ্টা করব ভাল কিছু করার। এই মৌসুমে বেশ সিরিয়াস ক্লাবটি। তাইতো চার মাস আগেই শুরু করা হয়েছে ক্যাম্প।’ সাইফের ম্যানেজার ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘এটা একটা ম্যারাথন রেস। এই রেসে যে যত বেশি ধৈর্য রাখতে পারবে, সে তত ভাল করতে পারবে। আশাকরি এবার বেটার কিছু হবে আমাদের।’ আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ফেডারেশন কাপের ফাইনালিস্ট রহমতগঞ্জের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে সাইফের এবার প্রিমিয়ার লীগ মিশন। দেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে বিদেশের মাটিতে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করা সাইফ আরও একটি ক্ষেত্রে ‘প্রথম’ নজির গড়েছে। তারাই প্রথম ৭-৮ খেলোয়াড়ের সঙ্গে চার বছরের মেয়াদে চুক্তি করেছে। একজন ফুটবলারের ক্যারিয়ার তুঙ্গে থাকে ২৪ থেকে ২৯ বছর পর্যন্ত। যাদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করা হয়েছিল তাদের অধিকাংশেরই বয়স ২০ বছরের নিচে। আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে তারা আরও ভালমানের ফুটবলার হয়ে উঠবে বলে আশা করে সাইফ। ক্লাবের ৪ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়রা হলেন : সাজ্জাদ, কবির, স্বাধীন, সাদ্দাম, রাফি, লিখন এবং রহিম। এরা সবাই সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবেরই তৈরি। জাতীয় দলের কয়েকজন ফুটবলারকে নিয়েও এবার ফেডারেশন কাপে ব্যর্থ হয় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নেয় তারা। অপ্রত্যাশিত এই হারটি মেনে নিতে পারেনি সাইফের কর্মকর্তারা। যে কারণে বরখাস্ত করা হয় মালদ্বীপরে কোচ মোহাম্মদ নিজামকে। তার জায়গায় নেয়া হয় দ্রাগো মামিচকে। মামিচ ২০১৫ সালে মালদ্বীপ জাতীয় দলেরও কোচ ছিলেন। মিয়ানমারের কোচ ছিলেন ২০১০ সালে। ক্রোয়েশিয়া যুব দলেরও কোচ ছিলেন ১৯৯০-৯৬ পর্যন্ত। এছাড়া ক্রোয়েশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারতের মোট আটটি ক্লাবের হয়ে কোচিং করান। এখন দেখার বিষয়Ñ সাইফকে নজরকাড়া সাফল্য এনে দিতে পারেন কি না মামিচ।
×