ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ নিউজিল্যান্ডের

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ নিউজিল্যান্ডের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কিউইদের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ভারতের। নিউজিল্যান্ড সফরেই কি তবে বদলা? এমন প্রশ্নে অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানিয়েছিলেন, ইমেজে-সৌন্দর্যে অনন্য কিউইরা বিশ্ব ক্রিকেটে এমন এক দল যাদের সঙ্গে ‘বদলা’ শব্দটাই যায় না। বিনয় পাশে ঠেলে মাঠে কিন্তু বদলার খেলাটা ঠিকই জমে ওঠে। বিশ্বকাপে হারের বদলার পথে প্রথমেই ৫-০ ব্যবধানে টি২০ জিতে ইতিহাস গড়ে সুপার কোহলি এ্যান্ড কোং। পরের সিরিজেই খেল দেখাল নিউজিল্যান্ড। এবার টানা দুই জয়ের পথে ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। অকল্যান্ডে শনিবার ৮ উইকেটে ২৭৩ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। এরপর ২ ওভার ৩ বল আগে ভারতকে গুটিয়ে দেয় ২৫১ রানে। ২২ রানের জয়ের দিনে দুরন্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে অভিষেকেই ম্যাচসেরা কাইল জেমিসন। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে আনুষ্ঠানিতার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে মঙ্গলবার। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলসের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৯৩ রান। নিকোলসকে এলবিডব্লিউ করে জুটি ভাঙ্গেন যুবেন্দ্র চাহাল। স্বাগতিকদের বিপর্যয়ের শুরু ১৪২ রানে টম ব্লান্ডেল আউট হওয়ার পর। বেশিক্ষণ টেকেননি গাপটিলও। ১০ ইনিংস পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া এই ওপেনার ৭৯ বলে ৭৯ রানের ইনিংসটি সাজান ৮টি চার ও ৩টি ছক্কা দিয়ে। এরপর ৫৫ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে কিউইরা। একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন আগের ম্যাচের নায়ক রস টেইলর। নবম উইকেটে জেমিসনকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৭৬ রানের জুটি গড়ে দলকে এনে দেন লড়াইয়ের পুঁজি। ইডেন পার্কে নবম উইকেটে এটিই সবচেয়ে বড় জুটির রেকর্ড। আগেরটি ছিল ৫৪ রানের, ১৯৯৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গড়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্যাভিন লার্সেন ও ক্রিস প্রিঙ্গল। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ১০৯ রানের ইনিংস খেলা টেইলর এবার খেলেন ৭৪ বলে অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস। ডানহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারের ৫১তম হাফ সেঞ্চুরি ইনিংসটি সাজানো ৬টি চার ও দুটি ছক্কায়। চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ভারত। পাঁচ ওভারের মধ্যে নেই দুই ওপেনার। ১০০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট। তৃতীয় ওভারে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। ১৯ বলে ৬ চারে ২৪ রান করা পৃথ্বী শ’কে বোল্ড করে প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের স্বাদ পান অভিষিক্ত জেমিসন। কোহলিকে বোল্ড করে সবচেয়ে বড় আঘাত হানেন টিম সাউদি। সব সংস্করণ মিলে সর্বোচ্চ নয়বার কোহলিকে আউট করলেন এই পেসার। লোকেশ রাহুল ও কেদার যাদব পাননি দুই অঙ্কের দেখা। ষষ্ঠ উইকেটে সম্ভাবনা জাগিয়েও জমেনি শ্রেয়াস আইয়ার-রবীন্দ্র জাদেজা জুটি। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শ্রেয়াস এবার ফেরেন ৫৭ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৫২ রান করে। সাইনি-জাদেজার আশা জাগানো জুটি শেষ হয় সাইনির বিদায়ে। অভিষেক ইনিংসে ৪৫ রান করা মূলত ডানহাতি এই বোলারকে বোল্ড করেন জেমিসন। ৪৯ বলের ইনিংসটি ৫ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো। ৭৩ বলে ২টি চার ও ১ ছক্কায় ৫৫ রান করেন জাদেজা। ভারতের হয়ে সাতে নেমে সবচেয়ে বেশি সাতটি হাফ সেঞ্চুরি এখন জাদেজার। ১৫৩ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে জয়ের আশা ফিকে হয়ে যায় ভারতের। তবে অষ্টম উইকেটে জাদেজা ও নবদিপ সাইনির ৭৬ রানের জুটিতে কিছুটা লড়াইয়ে ফিরলেও শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি সফরকারীরা। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে জাদেজা লং-অফ দিয়ে জেমস নিশামকে ওড়াতে গিয়ে আউট হলে সিরিজ জয়ের উচ্ছ্বাসে মাতে নিউজিল্যান্ড। দশ নম্বরে নেমে ১ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ২৫ এবং বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট নিয়ে অভিষেকেই ম্যাচসেরা কাইল জেমিসন। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড ॥ ২৭৩/৮ (৫০ ওভার; গাপটিল ৭৯, নিকোলস ৪১, ব্লান্ডেল ২২, টেইলর ৭৩*, লাথাম ৭, নিশাম ৩, ডি গ্র্যান্ডহোম ৫, মার্ক চ্যাপম্যান ১, সাউদি ৩, জেমিসন ২৫*; শার্দুল ২/৬০, চাহাল ৩/৫৮, জাদেজা ১/৩৫)। ভারত ॥ ২৫১/১০ (৪৮.৩ ওভার; পৃথ্বী ২৪, মায়াঙ্ক ৩, কোহলি ১৫, শ্রেয়াস ৫২, রাহুল ৪, কেদার ৯, জাদেজা ৫৫, শার্দুল ১৮, সাইনি ৪৫, চাহাল ১০, বুমরাহ ০*; বেনেট ২/৫৮, সাউদি ২/৪১, জেমিসন ২/৪২, ডি গ্র্যান্ডহোম ২/৫৪)। ফল ॥ নিউজিল্যান্ড ২২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ কাইল জেমিসন (নিউজিল্যান্ড)। সিরিজ ॥ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নিউজিল্যান্ড ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
×