ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ যুবাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র

ঘন ঘন বিদেশ সফর আর আমেরিকান ফুটবল

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঘন ঘন বিদেশ সফর আর আমেরিকান ফুটবল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যে স্বপ্ন নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলতে গেছে বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দল, সেই স্বপ্ন বাস্তব হয়েছে। প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে বাংলাদেশের যুব ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্য মিলেছে। এই সাফল্য কিভাবে আসল? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। সাফল্যের মূলমন্ত্রও বের হয়েছে। যুব বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে ঘন ঘন বিদেশ সফর আর আমেরিকান ফুটবলের ছোঁয়াতেই যুবারা এ বিশাল সাফল্য পেয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের যুব বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ যুব দল প্রচুর ম্যাচ খেলেছে। বিদেশের মাটিতেই বেশি ম্যাচ খেলা হয়েছে। তার সুফলও মিলেছে। ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ১২তম যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ হয়েছে। এবার যুব বিশ্বকাপের ১৩তম আসর শুরু হয়েছে ১৭ জানুয়ারি। ১২তম যুব বিশ্বকাপ শেষ হওয়া থেকে ১৩তম যুব বিশ্বকাপ শুরুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ যুব দল ৩০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে। জয় মিলে ১৮টি ম্যাচে। হার হয় ৮টি ম্যাচে। একটি ম্যাচ টাই হয়। আর ৩টি ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি। এই ম্যাচগুলোর মধ্যে বিদেশের মাটিতে ১৫টি ম্যাচ খেলা হয়। ৯টি ম্যাচে জয় মিলে। তিনটি ম্যাচে হার হয়। দুটি ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি। একটি ম্যাচ টাই হয়। ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ খেলে জয়ও মিলে। বিদেশের মাটিতে ঘন ঘন ম্যাচ খেলাতেই আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তার ফলও মিলে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন এই ঘন ঘন বিদেশে খেলার ফলেই যে এমন সাফল্য এসেছে তা বোঝাতে চেয়েছেন। বলেছেন, ‘মূল রহস্য হচ্ছে আমরা অনেক ম্যাচ খেলেছি। বিসিবি আমাদের জন্য অনেক সফরের আয়োজন করেছে। ছেলেরা ইংল্যান্ডে খেলেছে, নিউজিল্যান্ডে খেলেছে। আমরা প্রায় ৩০টি’র মতো ম্যাচ খেলেছি। জিতেছি ১৮টিতে। আমরা যখন নাভেদ নেওয়াজকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দিলাম, এরপর থেকেই দেশের বাইরে খেলাটাকে আমরা প্রাধান্য দেই। বোর্ডকে আমরা বুঝাই যে, আমরা যদি বিদেশে না খেলি তাহলে আমরা এক জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকব। তখন বোর্ড আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘শেষ দুই বছর আমরা একাদশে কোন পরিবর্তন আনিনি। ২০১৮ সালের অনুর্ধ-১৭ দল থেকে আমরা ২০ জন ক্রিকেটারকে বাছাই করি। সেখান থেকেই আমরা ১৫ জনকে নিয়েছি। তারা একসঙ্গে খেলতে খেলতে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে ভাল ধারণা পেয়ে গেছে। মূল পরিবর্তনটা আসে শেষ বিশ্বকাপের পর। যখন আমরা দেখি অনভিজ্ঞতার কারণে আমরা ম্যাচ হারছি। ফাইনাল ওভারে আমরা বোলিং এবং ব্যাটিং করতে পারছিলাম না।’ ঘন ঘন খেলার সঙ্গে অনুশীলনের ধরনেও পরিবর্তন এনে সাফল্য মিলেছে। আমেরিকান ফুটবলের ছোঁয়ায় অনুশীলন করেই সাফল্য ধরা দিয়েছে। যুবাদের স্ট্রেন্থ এবং কন্ডিশনিং কোচ রিচার্ড স্টনিয়ারই বিষয়টি খোলাসা করেছেন। সম্প্রতি তিনি ক্রিকইনফোকে জানিয়েছেন, ‘ছেলেদের জীবন পুরোই পাল্টে গেছে। তারা যেটাই করতে চাচ্ছে সেটাই করছে। এমনকি ক্রিকেট খেলার মধ্যে না থাকলেও। শরীরের মেদ কমিয়ে গতি বাড়ানোর কৌশল আমেরিকান ফুটবলারদের থেকেই রপ্ত করা হয়েছে। আমরা এ্যাজাইলিটি ড্রিলস অনুশীলন করছি যা সাধারণত আমেরিকান ফুটবলে অনুশীলন করা হয়। তারা (যুব ক্রিকেটাররা) আরও শুকিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের গতি বেড়ে যাচ্ছে। বিশ্বমানের ক্রিকেটাররা ফিটনেসের দিক থেকে যেমন হয় তারা ওই মানের হয়ে যাচ্ছে। এটা একটি অসাধারণ পরিবর্তন।’ আজ ভারতের বিরুদ্ধে ফাইনালেও সাফল্যের ধারা বজায় থাকলেই হয়। তাহলে প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার স্বাদও মিলবে।
×