ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে বাফুফের নির্বাচন নিয়ে সংগঠকদের মিলনমেলা

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

চট্টগ্রামে বাফুফের নির্বাচন নিয়ে সংগঠকদের মিলনমেলা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সর্বশেষ নির্বাচনে জয়লাভের পর সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন বলেছিলেন, আগামী চার বছর জেলা, ক্লাব এবং জাতীয় দল- এই তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবে তার কমিটি। কিন্তু ক্ষমতায় বসে আগের দুই মেয়াদের মতো তৃতীয় মেয়াদেও কথা রাখেননি। জেলা লীগ, ক্লাবগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন কিংবা শক্তিশালী জাতীয় দল গঠন এর কোনটাই করতে পারেননি। এমনকি নির্বাচনের আগে যে ২৫টি বিষয়কে সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন, সেগুলোর একটিও বাস্তবায়ন করেননি। বিগত ১২ বছরে বাফুফে একটা একাডেমি পর্যন্ত দাঁড় করাতে পারেনি। তবে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) মহাসচিব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তরফদার মোঃ রুহুল আমিন এই বিষয়গুলো সামনে নিয়ে এসেছেন। আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হবে বাফুফে নির্বাচন-২০২০। এই নির্বাচনে জয়লাভ করলে একাডেমি তৈরির পাশাপাশি একটি শক্তিশালী জাতীয় দল গঠনের লক্ষ্যে তৃণমূল থেকে ফুটবলার তুলে আনার কথা বলেছেন তরফদার রুহুল আমিন। যে দলটি বিশ্ব ফুটবলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। গর্বের লাল-সবুজের পতাকার মান উঁচু থেকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাবে। গতকাল চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু হোটেলে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের ষষ্ঠ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে গণমাধ্যমের কাছে এমন কথাই বলেন তিনি। বিডিডিএফএ সভাপতি চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিডিডিএফএ’র কার্যনির্বাহী কমিটির প্রায় ৪০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বাফুফের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন মহি ছাড়াও আশিকুর রহমান মিকু, সিরাজউদ্দিন মোঃ আলমগীর, এমবি সাইফ, মঞ্জুরুল আলম দুলালসহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মূলত বিডিডিএফএ’র নেতাদের চট্টগ্রামে একত্রিত হওয়ার এ মিলনমেলা। বাফুফে নির্বাচন-২০২০ সামনে রেখে ইশতেহার তৈরির পাশাপাশি নির্বাচনী প্যানেল গঠনে একটি কার্যকরী ও শক্তিশালী কমিটি গঠন- সভায় এটিই ছিল মূল ফেডারেশন এজেন্ডা। রুহুল আমিন জানান, সামনে বাফুফে নির্বাচন। এ সভায় মূলত নির্বাচনমুখী আলোচনা হয়েছে এবং নির্বাচনকে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে সেই বিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা কিভাবে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারি তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাকে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস এ্যাসোসিয়েশন থেকে নমিনেশন দেয়া হয়েছে এবারের নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করার জন্য। ফুটবলে সম্প্রতি যেসব টুর্নামেন্ট খেলেছে জাতীয় দল কিংবা বয়সভিত্তিক দল সেখানে দেশের জন্য এতটুকু সাফল্য বয়ে আনতে পারেনি। বিশেষ করে গত ডিসেম্বরে নেপালে অনুষ্ঠিত এসএ গেমস এবং জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপেও। জাতীয় দলের ব্যর্থতার বিষয়ে রুহুল আমিন বলেন, সম্প্রতি এসএ গেমসে আমরা নেপাল, ভুটানের কাছে হেরেছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে যে টুর্নামেন্ট হলো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সেখানে অব্যবস্থাপনা ছিল সুস্পষ্ট, ঠিক মতো তারা আয়োজন করতে পারেনি। যেসব দল টুর্নামেন্টে খেলতে এসেছে তাদের অধিকাংশের র‌্যাঙ্কিং বাংলাদেশের নিচে। দু’একটা ছিল বাংলাদেশের ওপরে। কিন্তু তাদের জাতীয় দল খেলতে আসেনি। না আসার কারণে বঙ্গবন্ধুর নামে যে পরিসরে টুর্নামেন্টটা হওয়ার কথা ছিল সারা বাঙালী জাতি যেখানে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু ভাল টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারেনি বাফুফে। দায়সারা গোছের টুর্নামেন্ট তারা করেছে। বিডিডিএফএ’র মহাসচিব জানান, নির্বাচন সামনে রেখে আমরা একটি শক্তিশালী কার্যকরী কমিটি গঠন করছি। বাফুফের যে নির্বাচন হবে আমি সভাপতি হিসেবে লড়ব। আর সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি, সদস্য কারা হবে সেসব বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি। তবে আমরা একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করব। আমাদের বিশ্বাস আমরা যে প্যানেলটা তৈরি করব এবং সেটা নির্বাচিত হবে এবং আগামী ৪ বছর আমরা যদি ক্ষমতায় থাকি ফুটবলের একটা শক্তিশালী ভিত তৈরি করতে পারব। ফুটবলের ভিত তৈরি করতে আমরা ইশতেহার তৈরিতেও কাজ করে যাচ্ছি। প্রধান যে বিষয়গুলো আছে সেখানে তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিটি স্তরে ফুটবলের চর্চাটা শুরু করতে হবে। তৃণমূল পর্যায় থেকে ফুটবল শুরু করতে হবে। উপজেলা লেভেল, জেলা, তারপর বিভাগ, ঢাকা মহানগরী পর্যন্ত যে চেইন আছে সেই চেইনটা সমন্বয় করে আমাদের সঠিক ফুটবলার বের করে আনতে হবে।
×