ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে কচ্ছপ গতি

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে কচ্ছপ গতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে চলছে কচ্ছপ গতি। অগভীর সমুদ্রে একটি ব্লক ইজারা নিয়ে ৭ বছরেও কোন সাফল্য পায়নি ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত দুটি কোম্পানি। কয়েক বছর কাজ করার পর, গভীর সমুদ্র থেকে চলে যেতে চায় কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানও। তাছাড়া বিশেষ জরিপের জন্য এখনও চূড়ান্ত চুক্তি করতে পারেনি পেট্রোবাংলা। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলছেন, দ্রুতই সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে গতি বাড়বে। যদিও একজন বিশেষজ্ঞের মতে, এলএনজি ব্যবসার বলি হচ্ছে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান। এই মুহূর্তে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ৭শ’ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে। মজুত না বাড়লে ২০৩১ সালের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে এই গ্যাস। সঙ্কটে সমাধান হতে পারত সাগরবক্ষ। যদিও গত এক দশকে সাগরের ২৬টি ব্লকে নেই কোন সুখবর। ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে ৫ বছর আগে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পরও, তেল-গ্যাসের তথ্য উপাত্তের বিশেষ জরিপ ‘মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভের’ কাজ এখনও শুরু করতে পারেনি পেট্রোবাংলা। ৪ বছর আটকে রাখার পর, গত জুনে এর অনুমোদন মিললেও চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি এখনও। বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, চূড়ান্ত চুক্তি করার আগে তাঁরা সোর্স তৈরি করে যে কারা কারা সোর্স হতে পারে এই ডিপ সি তে এক্সপ্লোরেশন করার জন্য। এটা তারা বন্ধ করতে পারে নাই এখনও। ডিসেম্বরের ৩০ তারিখ তাদের সই করার কথা ছিল, কিন্তু তারা এটাকে এক্সটেন্ড করে যাচ্ছে। পানির গভীরতা ২০০ মিটারের মধ্যে এমন একটি অগভীর ব্লকে সেই ২০১৩ সালে ইজারা পায় ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত দুই কোম্পানি। এনজিসি বিদেশ ও অয়েল ইন্ডিয়া। এত বছর পেরিয়ে গেলেও এখন অনুসন্ধান কূপ খননই শুরু করেনি প্রতিষ্ঠান দুটি। অন্যদিকে গভীর সমুদ্রের একটি ব্লকে দ্বিমাত্রিক জরিপ করার পর, এখন বেঁকে বসেছে কোরিয়ান কোম্পানি পোসক্যু-দায়্যু। এসবের বাইরে আরও কিছু উদ্যোগ থাকলেও, সেগুলোর আনুষ্ঠানিক কোন কাজ শুরু করতেই পারেনি পেট্রোবাংলা। যদিও সাগরবক্ষে মিয়ানমার আর ভারতে সাফল্য বেশ ঈর্ষণীয়। ২০১৪ সাল থেকে ১০টির বেশি বিদেশী কোম্পানি কাজ করছে মিয়ানমারে। অন্যদিকে ভারতের অগভীর সমুদ্র অন্তত ৬ টিসিএফ গ্যাস আবিষ্কার হয়েছে এই দশকে। তাহলে পিছিয়ে কেন বাংলাদেশ? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম দেখছেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস-এলএনজির ব্যবসাই বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে এ খাতে। তিনি বলেন, অনুসন্ধান কাজের মধ্যে গ্যাস উঠায় নিয়ে আসা গুরুত্বসহকারে করা উচিত। কিন্তু সেই গুরুত্বটা আমরা দেখছি না। এখানে একটা কারণ হতে পারে যে, এখন মনে হয় কোন মহল এলএনজি এনে এই এলএনজি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়ে তাদের লাভটা দেখতে পারে। এই স্থবিরতার মধ্যেই সম্প্রতি, জল-স্থল আর পাহাড়ে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে রাশিয়ান জায়ান্ট গ্যাজপ্রমের সঙ্গে একটি কৌশলগত সমঝোতা সই করেছে পেট্রোবাংলা।
×