ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুহম্মদ শফিকুর রহমান

বিএনপি নিজেই নিজের প্রতিপক্ষ

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিএনপি নিজেই নিজের প্রতিপক্ষ

বিএনপি আরেকবার প্রমাণ করল, দলটি নিজেই নিজের প্রতিপক্ষ। যে দলের এ অবস্থা তার ধ্বংসের জন্য প্রতিপক্ষের প্রয়োজন নেই, শত্রুরও প্রয়োজন নেই। বিগত মেয়র নির্বাচনে পূর্বাপর এ্যাকশন-রিএ্যাকশনও দলটিকে এমনি আবর্তে ঠেলে দিয়েছে। কিছু বড় মিডিয়া, মিডিয়া-মোড়ল, বড় বড় বুদ্ধির ঢেঁকিরাও প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে শেষ রক্ষা করতে পারেননি। বিএনপির ঘরের খবর হলো- নির্বাচনের রেজাল্ট দেখে দলের মুরব্বি কমিটি চেয়েছিলেন ধীরে-সুস্থে মূল্যায়ন করে তারপর প্রতিক্রিয়া জানাবেন বা কি করবেন না করবেন সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু বিদেশ থেকে ধমক খেয়ে মুরব্বি নেতারা পরদিনই হরতাল দিয়ে দিলেন, যা পুরোপুরি মার খেল। যদিও চাকরি বাঁচাতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেউ কেউ বলেন হরতাল সফল হয়েছে। এটা বলতে হয় তাই বলা, নইলে যে দলটির ধারাবাহিকতা রক্ষা হয় না। বিএনপি নির্বাচনে হেরেছে সব ক’টিতেই। তাদের রিএ্যাকশন ছিল ফল প্রত্যাখ্যান, আজ হরতাল। এবার ইভিএমে ভোট হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই রেজাল্ট পাবলিশ করা সম্ভব হয়েছে। নির্বাচনের পরদিন অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রবিবার প্রথম আলো যে রেজাল্ট পাবলিশড করেছে তাতে দেখা গেছে : ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস পেয়েছেন ৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৯০ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫১২ ভোট। ৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৯০-২ লাখ ৩৬ হাজার ৫১২= ১ লাখ ৮৮ হাজার ০৭৮ ভোট। অর্থাৎ ডিফারেন্স ১ লাখ ৮৮ হাজার ০৭৮ ভোট। দ্বিতীয়ত, ঢাকা উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম পেয়েছেন ৪ লাখ ১৫ হাজার ৮০২ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী তাবিথ আওয়াল পেয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৮৪১ ভোট। ৪ লাখ ১৫ হাজার ৮০২-২ লাখ ৪২ হাজার ৮৪১= ১ লাখ ৭২ হাজার ৯৬১ ভোট। অর্থাৎ ডিফারেন্স ১ লাখ ৭২ হাজার ৯৬১ ভোট। এখানে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করার মতো, ভোটের ডিফারেন্স উভয় সিটিতে দুই লাখের কাছাকাছি। নিঃসন্দেহে বলা যায়, ভোট কাস্টিং আশানুরূপ হয়নি। দুই সিটিতেই ৩০% এর কাছাকাছি। পার্সেন্টেজ যদি জাতীয় নির্বাচনের মতো ৫০-৬০% হতো তাহলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির ডিফারেন্স আরও বেশি হতো। এটাই স্বাভাবিক, এটাই বাস্তবতা। অতএব এদের আনাড়ি হরতালও বুমেরাং হয়েছে। একইভাবে প্রেস কনফারেন্স, সাংবাদিকদের (যারা দিন-রাত নয়াপল্টনে ক্যামেরা নিয়ে বসে থাকে) সঙ্গে কথাবার্তা সবই খামাখা হবে, হয়েছেও। ঘরে বসে বসে বাঘ তাড়ানোর মতো অবস্থা। যে দল এ সহজ কথা বুঝে না বা বুঝলেও বিদেশের ধমকে ঘোমটা দিয়ে বসে থাকে, সে দলের যে কোন কর্মসূচী ব্যর্থ হতে বাধ্য। অতীতেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে। বিএনপিকে কেন ভোট দেবে? - দুই সিটির বিএনপি প্রার্থীর সিলেকশন পার্টি করেছে না লন্ডন থেকে নাজিল হয়েছে; এটি বিএনপির নেতাকর্মীরা জানে না। এক/দুজন জানলেও মুখ খোলে না বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। - বিএনপি অবিভক্ত সিটিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চেহারায় কাজ করেছে কিন্তু জনগণের সামনে দৃশ্যমান কোন একটি কাজ নেই। - নয়া পল্টনের পার্মানেন্ট নেতারাও বেশ কিছু সময় ধরে নীরবতা অবলম্বন করে চলেছেন। এত বড় নির্বাচন- আগের মতো তাকে সকাল-বিকেল-রাতে প্রেস ব্রিফিং করতে দেখা যায়নি। এর অর্থ তিনি কারও ওপর ক্ষুব্ধ কি? - দুই সিটির দুই প্রার্থী নিয়ে অনেক প্রশ্ন : ক. ঢাকা উত্তর সিটির প্রার্থী তাবিথ আওয়াল দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল মিন্টুর ছেলে। ব্যবসায়ী মহল এক নামে তাকে চেনেন। তবে অনেকেই তার জীবনের একটি অধ্যায় সম্পর্কে ভালভাবে জানেন না। এই ভদ্র্রলোক রাজনীতিতে নামেন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে। তখন তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রভাবশালী নেতা হয়ে যান। এমনকি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে ফান্ড ম্যানেজমেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হত্যার ২১ বছর পর ক্ষমতায় ফিরে আসে এবং জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। ২০০০ সাল পর্যন্ত আব্দুল আউয়াল মিন্টু আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি হঠাৎ আওয়ামী লীগ ছেড়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০০১-এর অক্টোবরের নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেকেরই ধারণা, তার আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপিতে চলে যাওয়ার পেছনে রাজনীতির চেয়ে আর্থিক ইস্যু ছিল প্রধান। উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল তারই সন্তান। দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। শুনেছি ইংল্যান্ডের ইঞ্জিনিয়ার (?) এটা ভাল। তিনি সাদেক হোসেন খোকার পুত্র। মরহুম খোকা একাধারে মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মেয়র, সাবেক মন্ত্রী। অবশ্য, খোকা জীবদ্দশায় নৈতিকতার ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ-মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সরকার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলবদর মতিউর রহমান নিজামীর সহকর্মী এবং মেয়র থাকাকালে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। তদুপরি একটি রিপোর্ট হলো, ইশরাক হোসেন ছাত্রশিবিরের লোক। এই নির্বাচনের সময় শিবির কর্মীদের তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য শিবিরের পক্ষ থেকে কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। তার পরও কি এদের মতো হতে বলবেন, কেননা? খ. বিএনপির দক্ষিণের মেয়র প্রার্থীও উত্তরের মতোই একইভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। রাজনীতিতে একটি ব্যাপার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোথাও বাবার জন্য ছেলে প্রশ্নবিদ্ধ যেমন হয় তেমনি ছেলের জন্য বাবা-মা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এর উল্টোটাও হয়- সন্তানের জন্য বাবা-মা প্রশংসিত এবং গৌরবান্বিতও হয়। এই বাংলাদেশেই তার একটি বড় উদাহরণ হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বোন শেখ রেহানা। ছেলেমেয়েদের জন্য দুই বোন গর্বিত এবং শ্রদ্ধার পাত্র। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যেমন কম্পিউটার সায়েন্স তথা আইটি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এবং মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইটি উপদেষ্টা (অবৈতনিক) হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং পুত্র বাস্তব রূপদানের প্রধান ব্যক্তিত্ব। শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অটিজম নিয়ে কাজ করে প্রশংসিত। পুতুল এই বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। দুই সন্তানই বাবা-মার মতো মেধাবী এবং উচ্চ শিক্ষিত। আমেরিকার হার্ভার্ড এবং বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জনকারী। একইভাবে ছোট বোন শেখ রেহানার পুত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক এবং রূপন্তী সিদ্দিক; এরা সবাই লন্ডনের বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জনকারী। সর্বকনিষ্ঠ সন্তান রুপন্তী এখনও ছাত্রী। সজীব ওয়াজেদ জয় যেমন আইটি নিয়ে কাজ করেছেন তেমনি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকও সিআরআই (Centre for Research and Information)-এর মাধ্যমে গবেষণার কাজে প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা দিয়ে চলেছেন। কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাপারে এক কথায় বলাই যথেষ্ট। ব্রিটেনের মতো জায়গায় হাউস অব কমন্স তথা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের দু-দুইবার নির্বাচিত এমপি। দ্বিতীয়বার তো বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে ঝড় তুলেছেন। বয়সই বা কত? কনিষ্ঠ কন্যা। এখনও অক্সফোর্ডে অধ্যয়নরত। কাজ করে রোজগারের টাকা দিয়ে লেখাপড়া করছেন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা- নজিরবিহীন দক্ষতার সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে ঈর্ষণীয় উচ্চতায় প্রতিষ্ঠা করেছেন, শতবর্ষের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছেন আর কনিষ্ঠা কন্যা শেখ রেহানা সন্তানদের দেখাশোনা করছেন। তারা দুই বোন যেমন বাংলাদেশের মা- এদের জন্য, সন্তানদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ রচনা করে চলেছেন। পক্ষান্তরে বেগম খালেদা জিয়া, যাকে বিএনপি শেখ হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে চলেছেন, তার রাষ্ট্র পরিচালনা এবং সন্তান লালন-পালনের যে উদাহরণ রেখেছেন তা কি... না আর বলতে চাই না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে রাষ্ট্র পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধ একটি বড় ফ্যাক্টর। সেক্ষেত্রে বিএনপির প্রাইড করার কিছু নেই, পড়ন্ত জামায়াত কানেকশন। নগরীর উন্নয়নেও পারফরম্যান্স বিগ জিরো। কেন ঢাকাবাসী তাদের ভোট দেবে? প্রার্থীর দিক থেকেও আওয়ামী লীগের নৌকার দুই প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপির দুই প্রার্থীর কোন তুলনা চলে না, না পারিবারিক ঐতিহ্য, না লেখাপড়ায়, না রাজনৈতিক উত্তরাধিকার, না পারফরম্যান্সে। কাজেই ভোট তো মানুষ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকেই দেবে। আওয়ামী লীগ ও দলীয় মেয়রগণ রাজধানীর উন্নয়নে যত কাজ করেছে, একটার পর একটা ফ্লাইওভার নির্মাণ করে চলাচলে সঙ্কট অনেকটা নিরসন করেছেন। তবুও সঙ্কট আছে। বিশেষ করে মেট্রোরেলের চলমান নির্মাণ কাজে যানজট বেড়ে গেলেও এক/দেড় বছর পরেই মহান ঢাকাবাসী সময়ের যন্ত্রণা থেকে শতভাগ মুক্ত হতে না পারলেও অনেকাংশে মুক্ত হবে। বড় কিছু পেতে হলে কিছু খোয়াতে হয়। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা নিজে যেমন স্বপ্ন দেখেন এবং একইভাবে স্বপ্ন বাস্তবায়নও করেন। প্রায় তিন দশক আগে লন্ডনে টেমস নদীর তলদেশে টানেল দিয়ে গাড়ি করে পার হচ্ছিলাম। সেই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা আজও মনে শিহরণ জাগায়। কই? কেউ তো একবারের জন্য ভাবলেন না আমাদেরও নদীতলে টানেল হতে পারে এবং তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে। শেখ হাসিনা শুধু স্বপ্ন দেখে থাকেননি, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল বানিয়ে দিচ্ছেন যার ৬০% কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানী ঢাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন সার্ভিস বা সাবওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন হয়ে গেলে ঢাকার যানজট মোটেই থাকবে না। তখন ২০ মিনিটে জয়দেবপুর থেকে গুলিস্তান আসা যাবে। শেখ হাসিনা মনে করেন- আমাদের স্বপ্ন দেখতে হবে, স্বপ্নই যদি না দেখলাম তবে বাস্তবায়ন করবটা কি? এগিয়েইবা যাব কিভাবে? বিশ্বের কালো মানুষের অবিসংবাদী নেতা মার্টিন লুথার কিং বলেছিলেন ‘I have a dream, the dream of liberty, the dream of equality’ একইভাবে বাংলার রাষ্ট্রনেতা শেখ হাসিনা বলেন ‘I have a dream, the dream of building up poverty-free, hunger-free Bangladesh a Bangladesh Bongobondhus Golden Bangla। ঢাকা-৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ লেখক : সংসদ সদস্য সদস্য, মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটি সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেসক্লাব [email protected]
×