ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাক্ষাতকারে শেখ আব্দুল্লাহর মেয়ে খালিদা শাহ

কাশ্মীরের ইতিহাস মুছে ফেলতে চাইছেন মোদি

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 কাশ্মীরের  ইতিহাস মুছে ফেলতে চাইছেন মোদি

ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার কাশ্মীরের ইতিহাস মুছে ফেলার পাঁয়তারা করছে। কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও উপত্যকার সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা শেখ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহর মেয়ে খালিদা শাহ সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে এ মন্তব্য করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে ৫ ডিসেম্বর শেখ আব্দুল্লাহর জন্মদিনে কাশ্মীরে সাধারণ ছুটি হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর মোদি সরকার এ বছর কাশ্মীরের বর্ষপঞ্জিতে পরিবর্তন এনেছে। ছয় মাস আগে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়ে উপত্যকাজুড়ে জরুরী অবস্থা জারি হয়। এরপর সাবেক তিনজন মুখ্যমন্ত্রীকে আটকে রেখেছে ভারত সরকার। রাজধানী শ্রীনগর থেকে নেয়া এক সাক্ষাতকারে ৮৪ বছর বয়সী খালিদা শাহ বলেন, কাশ্মীরের বর্ষপঞ্জি পরিবর্তন করা খুবই দুঃখজনক। খালিদা শাহও বর্তমানে গৃহবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। তার ভাই ফারুক আব্দুল্লাহ ও ভাতিজা ওমর আব্দুল্লাহকেও আটকে রাখা হয়েছে। খালিদা শাহ বলেন, কট্টর মোদি সরকার দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার পক্ষে সরব ছিল। এ বছর শেখ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহর জন্মবার্ষিকীর ছুটি বাতিল করে মোদি সরকার সেই পথেই হাঁটল। অপরদিকে লোকজন ভয় পাচ্ছে মোদি কাশ্মীরের জনসংখ্যাগত বৈশিষ্ট্য বদলে দেয়ার চেষ্টা করছে। তারা এখানে বাইরের লোকদের জমি কেনার অনুমোদন দিয়েছে। এভাবে আস্তে আস্তে ভারতের অন্যান্য অঞ্চল থেকে হিন্দুরা এসে এখানে জমি কিনে মুসলিমদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করতে পারে। তিনি বলেন, ৭০ বছর আগে শেখ আব্দুল্লাহ ভারতের কাছ থেকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা আদায় করেছিলেন। এরপর থেকে কাশ্মীরের আলাদা পতাকা ছিল। এখানকার জন্য আলাদা আইন ছিল। কাশ্মীরের পার্লামেন্ট আইন পাস করতে পারত। এখন মোদি সরকার ১৩ জুলাই কাশ্মীরের জাতীয় দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৩১ সালের ১৩ জুলাই এক বিক্ষোভে ২২ জন কাশ্মীরী নিহত হয়েছিল। খালিদা শাহ আরও বলেন, মোদি সরকারের বর্তমান কর্মকান্ডে আমার পরিবার এখন কাশ্মীরীদের কাছে জাতীয় শত্রুতে পরিণত হয়েছে। কারণ আমরাই এক সময় ভারতের সঙ্গে থাকার পক্ষে ছিলাম। কার্যত যুগের পর যুগ ধরে আব্দুল্লাহ পরিবার কাশ্মীরে ক্ষমতায় রয়েছে। শেখ আব্দুল্লাহ ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পাশাপাশি পাকিস্তানের জাতীর জনক কায়েদে আযম মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহর কঠোর সমালোচক ছিলেন। ১৯৮২ সালে শেখ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর কার্যত কাশ্মীরজুড়ে পাকিস্তানপন্থীদের কর্মকান্ড বাড়ে। শেখ আব্দুল্লাহ বরাবর কাশ্মীরে পাকিস্তানপন্থীদের দমন করেছেন। এখন তারা আব্দুল্লাহ পরিবারকে খলনায়ক হিসেকে আখ্যা দিচ্ছে। কারণ শেখ আব্দুল্লাহর পরিবার বরাবর ভারতের পক্ষে কাজ করেছে। ভারতের প্রধান প্রধান রাজনীতিকদের সঙ্গে তাদের সখ্যতা ছিল। তারপর শেখ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর কাশ্মীরীরা ভারতের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নেয়। তারা সশস্ত্র বিপ্লব শুরু করে। কাশ্মীরের এক পক্ষ মনে করছে, আব্দুল্লাহ পরিবার বরাবর ভারতের স্বার্থ রক্ষা করেছে। তারা কাশ্মীরী জনতার সঙ্গে বেইমানি করেছে। - আলজাজিরা
×