ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা আর্ট সামিটের পঞ্চম আসর শুরু ৭ ফেব্রুয়ারি

প্রকাশিত: ১১:১৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঢাকা আর্ট সামিটের পঞ্চম আসর শুরু ৭ ফেব্রুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পকর্ম ও চিত্রকলার বৃহৎ আয়োজন ‘ঢাকা আর্ট সামিট ২০২০’ শুরু হচ্ছে ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার। রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিতে পঞ্চমবারের মতো এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশন। এবারের আয়োজনের বিশেষ প্রতিপাদ্য ‘সিসমিক মুভমেন্ট’ বা ‘সঞ্চারণ’। স্বাগতিক বাংলাদেশ’সহ ৪৪ দেশের পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠিত এবং প্রতিভাবান শিল্পী এতে অংশ নেবেন। এছাড়া দেশীয় প্রায় তিন শতাধিক শিল্পী, সমালোচক ও শিল্পানুরাগী অংশ নেবেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে থাকবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ আলোকচিত্রের বিশেষ প্রদর্শনী। পঞ্চমবারের মতো এ আয়োজন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন ঢাকা আর্ট সামিটের আয়োজক প্রতিষ্ঠান সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের কো ফাউন্ডার নাদিয়া সামদানী ও রাজিব সামদানী, চিত্রশিল্পী বিশ্বজিৎ গোস্বামী ও শিল্পকলা একাডেমির সচিব বদরুল আলম ভূঁইয়া। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিল্পকলা একাডেমি জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় নয় দিনব্যাপী ঢাকা আর্ট সামিটের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়া উপস্থিত থাকবেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, ঢাকা আর্ট সামিট সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান ফারুক সোবহান ও সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক নাদিয়া সামদানী। ঢাকা আর্ট সামিটের পঞ্চম সংস্করণের প্রধান ভেন্যু এক লাখ ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ভবন ও এর বাইরে একটি স্কাল্পচার গার্ডেন। নয় দিনের এ সামিট সাজানো হয়েছে সলো আর্ট এক্সিবিশন, পাবলিক আর্ট প্রজেক্ট, কিউরেটেড এক্সিবিশন, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, একক ও দলবদ্ধ বক্তৃতা, এক্সপেরিমেন্টাল ফিল্ম প্রদর্শনী, লাইভ আর্ট পারফর্মেন্স, পাপেট শো, প্রিন্ট মেকিং ওয়ার্কশপ’সহ শিল্প ও শিল্পকলা নানা বিষয় দিয়ে। থাকবে শিল্পবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। সামদানী আর্ট এ্যাওয়ার্ড হিসেবে থাকবে রেসিডেন্সি প্রোগাম। সার্বিক দায়িত্বে আছেন সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক নাদিয়া সামদানী। দেশী-বিদেশী ৩২ জন কিউরেটরের সমন্বয়ে গঠিত ঢাকা আর্ট সামিটের চীফ কিউরেটরের দায়িত্ব পালন করছেন সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর ডায়না ক্যাম্পবেল বেটানকোর্ট। প্রদর্শনী সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। উদ্বোধনী দিন প্রথম পারফর্মেন্স অনুষ্ঠিত হবে চিত্রশালার ৬ নং গ্যালারিতে। ওইদিন সকাল ১০টায় সামদানী আর্ট এ্যাওয়ার্ড পারফর্মেন্সে অংশ নেবেন বাংলাদেশী শিল্পী আরিফুল কবির। উদ্বোধনী দিন সন্ধ্যা ৭টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় ‘টুগেটার (ঢাকা সংস্করণ)’ শিরোনামে পারফর্মেন্সে অংশ নেবেন করাকৃত অরুণাদ্ধচল এবং এ্যালেক্স ভোজিও। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সাজানো হয়েছে একটি বিশেষ প্রদর্শনী। একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার প্রথম তলায় ‘লাইটিং দ্য ফায়ার অব ফ্রিডম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শিরোনামের প্রদর্শনী। দ্বিবার্ষিক সামদানী আর্ট এ্যাওয়ার্ড প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য বাংলাদেশের ২২ থেকে ৪০ বছর বয়সী উদীয়মান ও প্রতিভাবান শিল্পীদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানে সহায়তা করা। সংবাদ সম্মেলনে সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের কো ফাউন্ডার নাদিয়া সামদানী বলেন, এটা একটা রিসার্চ বেজ ইভেন্ট। এবার আমরা বিভিন্ন মুভমেন্ট নিয়ে কাজ করছি। প্রদর্শনীর মূল প্রবেশ পথ থেকে শুরু হবে মুগ্ধতা। প্রায় ৪শ’ মিলিয়ন বছরের ফসিলের আদলে বানানো হয়েছে প্রবেশদ্বার। এখান দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এক অন্যরকম অনুভূতি দেবে প্রতিটি দর্শনার্থীকে সেই স্থাপনা। বাংলাদেশী শিল্পীদের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কিউরেটর বিশ্বজিৎ গোস্বামী বলেন, প্রত্যেকটি বিয়ানেলেতে একটা থিম থাকে। এই থিমটাকে নিয়ে কিন্তু পুরো আয়োজনটা করা হয়। এইবারের যে থিম ‘সিসমিক মুভমেন্ট’ বাংলায় আমরা যেটাকে বলি ‘সঞ্চারণ’। এটা আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটকেও বোঝা যাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবেও একটা মুভমেন্টের মাধ্যমে কিভাবে শিল্পের বিকাশ ঘটে, এ মুভমেন্ট আমাদের জন্য কতটুকু ইমপর্টেন্ট আমাদের ন্যাচারের জন্যে এটা প্রকাশ পাবে। যাদের হাত ধরে বাংলাদেশের আর্ট বা শিল্পকলার চর্চা তাদের কন্ট্রিবিউশন আছে। জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসন, রশীদ চৌধুরী বা এসএম সুলতান ওনারা শুধু ছবিই আঁকেন নি, সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন দেখেছেন বুঝেছেন নিয়েছেন এবং এটাতে তাদের মতো করে মুভমেন্ট ঘটিয়েছেন। আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কামরুল হাসানের ছবিতে দেখি মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক বাঙালীকে ইনস্পায়ার করেছে একটি পোস্টার। তার একটির সঙ্গে ছবি আঁকার নিজস্ব একটি ভাষা তৈরি করেছেন। তাদের ছবিতে আমরা জয়নুল আবেদিন, রশীদ চৌধুরী, কাইয়ূম চৌধুরী, কামরুল হাসানকে বুঝতে পারি। একই সঙ্গে আমরা ইনস্টিটিউশনার ফ্যাকাল্টি নিয়ে যখন চিন্তা করি তখন দেখতে পাই এটা সিফটিং হচ্ছে।
×