ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ার ছাড়ার ঘোষণায় চাঙ্গা সরকারী কোম্পানি

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

শেয়ার ছাড়ার ঘোষণায় চাঙ্গা সরকারী কোম্পানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারী শেয়ার ছাড়ার ঘোষণায় সরকারী কোম্পানিগুলোর চাহিদা বেড়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ঘোষণার পরদিন সোমবারে লেনদেন ও দরবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে সরকারী কোম্পানিগুলো। মূলত এই কোম্পানিগুলোর চাহিদা বাড়ার কারণে লেনদেনও ৫শ’ কোটি টাকা ছাড়াল। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল তিতাস গ্যাসের। কোম্পানিটির দিনটিতে বিক্রেতা শূন্য অবস্থায় লেনদেন হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারী শেয়ার সাধারণ সরাসরি তালিকাভুক্ত করা হয়ে থাকে। সেই কারণে সরকারকে শেয়ার ছাড়তে হলেও বাজারকে আরও স্থিতিশীল করা এবং কোম্পানির দর আরও বাড়াতে হবে এমন আশাবাদেই সোমবারে এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারী শেয়ার কিনেছে। এছাড়া অর্থমন্ত্রী আরও বলেছেন, শেয়ার ছাড়ার আগে কোম্পানিগুলোর সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করা হবে, এতে আগের তুলনায় সম্পদমূল্য বাড়বে এমন আশাবাদেই সরকারী কোম্পানিতে ক্রেতা বেড়েছে। অস্বাভাবিক চাহিদার কারণে তিতাস গ্যাসের শেয়ার কিনতে পারেনি বিনিয়োগকারীরা। যেসব বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার আছে তাদের কেউ শেয়ার বিক্রি করতে রাজি ছিলেন না। ফলে ক্রেতা থাকলেও তিতাস গ্যাসের শেয়ার বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, তিতাস গ্যাসের শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ৩১ টাকা ৯০ পয়সা দরে। এর থেকে ১ টাকা ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৩৩ টাকা ১০ পয়সা দরে প্রথমে ১ হাজার ২০০ শেয়ার ক্রয়ের আবেদন পড়ে। তবে কেউ এই দামে শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর ৩৩ টাকা ৮০ পয়সা দরে ১০০ শেয়ার ক্রয়ের আবেদন আসে। এ দামেও কেউ শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ৩৪ টাকা ৬০ পয়সা দামে ৩৪ হাজার ৮৩৫টি শেয়ার ক্রয়ের আবেদন পড়ে। এই দামেও কোন বিনিয়োগকারী তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে তিতাস গ্যাসের শেয়ার বিক্রেতা শূন্যই থেকে গেছে। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, সরকারী মালিকানাধীন এই কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৭৫ শতাংশ রয়েছে সরকারের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং বিদেশীদের কাছে ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ শেয়ার আছে। ২০০৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৯৮৯ কোটি ২২ লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৯৮ কোটি ৯২ লাখ ২১ হাজার ৮৩১টি। গত পাঁচ বছর ধরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশের ওপরে লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে ২৬ শতাংশ, ২০১৮ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৭ সালে ২২ শতাংশ, ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। এদিকে তিতাস গ্যাসের মতো পাওয়ার গ্রিডের দর বেড়ে লেনদেন হয়েছে। আগের দিনের চেয়ে ২ দশমিক ১০ টাকা বেশি দরে কোম্পানিটির মোট ৮ লাখ ৮৯ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তবে একই খাতের ডেসকোর দর বেড়েছে ১০ পয়সা করে। পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলের দর বেড়েছে। এছাড়া ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, এটলাস বাংলাদেশ, ন্যাশনাল টিউব, ইস্টার্ন ক্যাবলের দরও বেড়েছে। একমাত্র সরকারী ব্যাংক রূপালী ব্যাংকের দর অপরিবর্তিত থাকলেও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) দর বেড়েছে। কিন্তু খাদ্য খাতের কোম্পানি ন্যাশনালটির দর কিছুটা বাড়লেও ঝিল বাংলা সুগার ও শ্যামপুর সুগার মিলের দর কিছুটা কমেছে। গত কয়েকদিন ধরেই কোম্পানিটির দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে হয়ত সোমবারে কিছুটা দর কমেছে। এছাড়া আইটি খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির দর বেড়েছে। বিবিধ খাতের বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) এবং উসমানিয়া গ্লাসের দর বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
×