ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার বিকেলে ভোট শেষে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ অভিযোগ করেন। নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এ ব্যাপারে কারো কোন সন্দেহ নেই। তাই আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে আরেক তামাশা অনুষ্ঠিত হয়েছে যা সবাই দেখেছেন। ফখরুল বলেন, আমরা অফিসে থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। সকালে ভোট শুরু হয়েছে বড় রকমের বিধি লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে। সেটি হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী সিটি কলেজে ভোট দিতে গিয়ে তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন তা সরাসরিভাবে নির্বাচনের হস্তক্ষেপের সামিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভোট প্রদান করে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। যা নির্বাচন বিধির মধ্যে পড়ে না এবং যা নির্বাচনী আচরণবিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ফখরুল অভিযোগ করেন, বিএনপির এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়েছে। যারা এই বাধা অতিক্রম করে ভোট কেন্দ্রে গিয়েছে তাদেরও সন্ত্রাসীরা ভয়ভীতি, হুমকি-ধমকি, মারধর করে বের করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে প্রিসাইডিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার গণমাধ্যমে বলেছেন এজেন্টদের টিকে থাকার সামর্থ্য থাকতে হবে। এজেন্টদের তিনি প্রতিরোধে গড়ে তোলারও পরামর্শ দেন। এই কথা বলে তিনি সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের উস্কে দিয়ে সংঘাতের দিকে যাওয়ার ইন্ধন দিয়েছেন। অথচ আরেকজন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নিজেই বলেছেন, এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজে ৭ বার ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়েও মেলাতে পারেননি। এতেই বোঝা যায় ইভিএমে ভোট ত্রুটিপূর্ণ। তিনি বলেন, যেসকল পোলিং এজেন্ট নানা বাধা উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে গেছেন তাদের দুপুর ১২টার মধ্যেই শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বের করে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে ২০০ থেকে ২৫০ জন বহিরাগত জড়ো করে রাখা হয়। সমগ্র ঢাকা শহরে পাড়া-মহল্লায় সন্ত্রাসী কর্মকা- সৃষ্টি করে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। ফলে ভোটাররা নিরাপত্তাহীনতার কারণে ভোট কেন্দ্রে যায়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতগুলোকে নির্বাচনী মাঠে দেখা যায়নি। ফখরুল বলেন, অনেক কেন্দ্রে ইভিএমে ধানের শীষের প্রতীক ছিল না। ফলে ভোটাররা ভোট প্রদান করতে পারেননি। অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে শনাক্তকরণের পর ভোট দিতে না দিয়েই কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের সঙ্গে ভোট কক্ষে প্রবেশ করে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কোন কোন কেন্দ্র থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেয়া হয়েছে। ফখরুল বলেন, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তরের ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ও তাদের প্রধান নির্বাচনী এজেন্টরা শত শত অভিযোগ রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রেরণ করলেও তা প্রতিকারে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশনের জারিকৃত ২৯ জানুয়ারির পরিপত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে কোন ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ যদি ইভিএম গ্রহণ না করে বা ম্যাচিং না হয় সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ভোট কক্ষের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার নিজের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে ওই ভোট কক্ষের মোট ভোটের সর্বোচ্চ ১ ভাগ ভোটারকে শনাক্ত করে নিজে দায়ভার নিয়ে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। প্রতিটি ভোট কক্ষের এই ১ ভাগ ভোটারের অতিরিক্ত বায়োমেট্রিক নির্বাচন কমিশন সরবারহকৃত একটি পিন নাম্বার ছাড়া সহকারী প্রিসজাইডিং অফিসার নিজের বায়োমেট্রিক দিয়ে আর খুলতে পারবেন না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রের ভোট কক্ষসমূহের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের এই ১ ভাগ এর অতিরিক্ত ভোটারের বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণ সংক্রান্ত পিন নাম্বার দুপুরের পরে ভোটকেন্দ্রসমূহে দিয়ে দিয়েছেন।
×