ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় বিদেশী দূতাবাসে জামায়াত-শিবিরকর্মী রাজনৈতিক বিশ্লেষক!

প্রকাশিত: ১০:৪২, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঢাকায় বিদেশী দূতাবাসে জামায়াত-শিবিরকর্মী রাজনৈতিক বিশ্লেষক!

শংকর কুমার দে ॥ ঢাকায় দূতাবাসগুলোতে কর্মরত বাংলাদেশের নাগরিকরা যারা ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষক হয়েছেন তাদের অনেকেই বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের উত্তরসূরি, স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের বংশধর। তারা বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর দূতাবাসে চাকরি করার আড়ালে নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষাবলম্বন করে বিদেশী রাষ্ট্রগুলোতে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, বিষোদগার করে প্রভাবিত করেছে প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোকে। এটা ফাঁস হয়েছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, যিনি ইসলামী ছাত্র শিবিরের সদস্য ছিলেন, জামায়াত সম্পৃক্ততা রয়েছে ও ’৭১-এর ঘাতক দালালদের দোসর এমন এক ব্যক্তি দূতাবাসের পরিচয় ব্যবহার করে রাজনৈতিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করাসহ বিএনপির একজন মেয়র পদের প্রার্থীর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে এই জোটের রাষ্ট্রের ঢাকার দূতাবাসগুলোতে বাংলাদেশের নাগরিকরা কাজ করে নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষক হওয়ার পর এটা ফাঁস করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। শনিবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ১০টি পশ্চিমা দেশের দূতাবাস থেকে নিয়োগ করা ৭৪ জনকে অনুমতি দেয় নির্বাচন কমিশন। এদের মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশী, যারা বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করার সুবাদে বাংলাদেশী হয়ে বিদেশী পর্যবেক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ নিতে গেলে তাদের প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ পায়। এটা তদন্ত করে দেখেছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে বাংলাদেশের নাগরিক যিনি, দূতাবাসে সিনিয়র পলিটিক্যাল এ্যানালাইসিস কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত তিনি ছিলেন ছাত্র জীবনে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সঙ্গে জড়িত। শুধু তাই নয় ঘাতক-দালাল মাওলানা মান্নানের প্রতিষ্ঠানে ছিলেন কর্মরত ও জামায়েতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে কর্মরত থেকে বিদেশী দূতাবাসের পরিচয়ে বিএনপির একজন মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনের প্রাক্কালে গোপনে বৈঠক করেছেন। এ ধরনের বিদেশী দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এটা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর দূতাবাসে যারা বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে চাকরি করছেন তাদের মধ্যে আছেন, ‘৭১ এর স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের উত্তরসূরি, বঙ্গবন্ধু খুনী চক্রের উত্তরসূরির বংশধর, বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জড়িত। মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা চালিয়েছে এমন অনেক উত্তরসূরি আছে যারা বিদেশী দূতাবাসগুলোতে চাকরি করে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির পক্ষাবলম্বন করে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, বিদেশী দূতাবাসগুলোকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রদূত ও বিদেশী রাষ্ট্রকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে। কানাডা দূতাবাসেও একজন বাঙালী কর্মকর্তা রয়েছেন যিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসাবে কর্মরত আছেন তিনিও এক সময়ে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং তিনিও সরকারের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে ডিপ্লোমেটদের প্রভাবিত করে আসছেন। ব্রিটিশ হাইকমিশনেও একজন কর্মরত আছেন যিনি অনুরূপ কাজ করছেন। বিএনপি-জামায়াতপন্থী লোকজন বিদেশী রাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোতে চাকরি করে সরকারের বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য তুলে ধরে বিষোদগারমূলক কর্মকা-ের বিবরণ তুলে ধরার কারণে বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা সরকার সম্পর্কে ভুল বার্তা পাচ্ছেন বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার রাষ্ট্রদূতের কাছে সরকার সম্পর্কে সঠিক তথ্য পৌঁছাচ্ছে না বলে মনে করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
×