ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্যপ্রযুক্তি সেবা পেতে জনগণ আবার ডাকঘরমুখী

বিলুপ্তপ্রায় সাড়ে ৮ হাজার ডাকঘর ডিজিটালে রূপান্তর ॥ মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিলুপ্তপ্রায় সাড়ে ৮ হাজার ডাকঘর ডিজিটালে রূপান্তর ॥ মন্ত্রী

ফিরোজ মান্না ॥ সারাদেশে সাড়ে ৮ হাজার ডাকঘর তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে সেবা দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ‘তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর গ্রামীণ ডাকঘর নির্মাণ প্রকল্পের’ আওতায় ডাক বিভাগকে সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ৯শ’ ডিজিটাল সেবা ডাকঘরের মাধ্যমে তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজ চলছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- ডাকঘরের বিদ্যমান জনবলের সঙ্গে ১৮ হাজার উদ্যোক্তা সংযুক্ত হয়েছে। এতে ডিজিটাল ডাকঘর নির্মাণের শক্তি বহুগুণ বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ডাক বিভাগ লাভজনক পর্যায়ে চলে যাবে। এমন আশার কথা জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রী বলেন, দেশের সাড়ে আট হাজার ডিজিটাল ডাকঘরে নগদ সেবা, সেই সঙ্গে রবির ৫ কোটি গ্রাহক অন্তর্ভুক্তি ও গ্রামীণফোনসহ বিশটি নতুন ডাকঘর ও আঠারো ডাকঘরের সংস্কার কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে। এসব ঘরের সঙ্গে নগদের এজেন্টরা জড়িত। ফলে ডিজিটাল ডাকঘরের মাধ্যমে বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণের ফলে বিদ্যমান ইউনিয়ন ডিজিটালভিত্তিক সেবা যথেষ্ট নয়। তাই মানুষের ডিজিটাল সেবার বর্ধিত চাহিদা মেটাতে ডাকঘর একই সেবা নিয়ে কাজ করছে। ডাকঘরগুলোয় যুক্ত হয়েছে মোবাইল ফিন্যান্স। ডিজিটাল ডাক সেবায় আমরা ইতোমধ্যে একটা দৃশ্যমান অবস্থায় উপনীত হয়েছি। ডাকঘরের সঙ্গে উদ্যোক্তারা ডিজিটাল বাংলাদেশের সৈনিক হিসেবে কাজ করছেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, ডিজিটাল যুগে পৃথিবী প্রতিমুহূর্তে পরিবর্তনশীল। পৃথিবীতে কৃষিযুগ পেরিয়েছে হাজার হাজার বছর। কিন্তু ডিজিটাল যুগে রূপান্তর ঘটছে প্রতি মুহূর্তে। এজন্য ডাক সেবাকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রযুক্তি নির্ভর ডাকঘরের জন্য উপযুক্ত মানবসম্পদ তৈরি অপরিহার্য। বিদ্যমান ডাক সেবাকে ডিজিটালে রূপান্তরের মাধ্যমে জনগণের কাছে দ্রুত ডাক সেবা পৌঁছাতে করণীয় চিহ্নিত করে কার্যকর উদ্যোগ হাতে নেয়া হচ্ছে। এক সময় ডাক সেবা ছিল মানুষে মানুষে যোগাযোগ স্থাপনের একমাত্র উপায়। প্রযুক্তি উন্নয়নের ফলে মানুষের হাতে হাতে যোগাযোগের ডিভাইস চলে এসেছে। সামনের দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ৫জি প্রযুক্তিযুক্ত হওয়ার পর মানুষের জীবনের যে কী পরিবর্তন ঘটবে তা কেউ আন্দাজও করতে পারছেন না। প্রযুক্তির অভাবনীয় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ডাক বিভাগকে রূপান্তর না করতে পারলে তথ্যপ্রযুক্তির কাছে ডাক বিভাগ হারিয়ে যাবে। বিভাগটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজ করেছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ডাক বিভাগের উন্নয়ন ঘটানো গেলে তবেই এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি টিকে থাকবে। মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ডাক বিভাগের উন্নয়নে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচী তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে শত বছরের পশ্চাৎপদতা পেছনে ফেলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। গত দশ বছরে দেশে সাড়ে আট হাজার ডাকঘর ‘ডিজিটাল ডাকঘরে’ রূপান্তরিত হয়েছে। প্রযুক্তি সমন্বয়ের মাধ্যমে ডাক সেবার ডিজিটাল রূপান্তরে সরকার বদ্ধপরিকর। সূত্র জানায়, কিছুদিন আগেও ডাক বিভাগ কেবল রাষ্ট্রীয় যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ডিজিটাল ডাকঘর হওয়ায় এখন ডাক বিভাগ দারুণ চাঙ্গা, বেশ কিছু কাজ হচ্ছে। এখান থেকে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে পারছেন। ডাক বিভাগ তাদের দুরাবস্থা অনেকটা কাটিয়ে উঠতে যাচ্ছে। মন্ত্রী জানান, সব ডাকঘরকে ইলেক্ট্রনিক নেটওয়ার্কের আওতায় নেয়ার একটি প্রকল্পসহ তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর গ্রামীণ ডাকঘর নির্মাণ প্রকল্প শেষ হয়েছে। জনস্বার্থের বিষয়টি চিন্তায় নিয়ে ডাক বিভাগকে কাজ করতে পারলে ডাক বিভাগ আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
×