ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্গম পর্যটন স্পট নাফাখুম

প্রকাশিত: ০৮:০১, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

   দুর্গম পর্যটন স্পট নাফাখুম

অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও শুধু উদ্যোগের অভাবে নামেই পর্যটনস্পট বান্দরবান পার্বত্য জেলার থানছি উপজেলার নাফাখুম (ঝর্না)। পর্যটকদের জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা না থাকায় স্পটটি এখন পর্যটকদের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর জেলার দুর্গম থানছি উপজেলা সদর থেকে বোট যোগে যেতে হয় রেমাক্রি মুখ। নাফাখুমে যেতেই পড়বে রেমাক্রি মুখ, পাথরের ভাঁজে ভাঁজে প্রবাহিত পানির ঝর্ণা। আর এই জায়গা থেকে পাহাড় ও বন মাড়িয়ে একাধিকবার নদী পার হয়ে ১৩ কিঃ মিঃ হেঁটে যেতে হয় নাফাখুমে। আরও জানা গেছে, নাফাখুম ঝর্ণার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর শীত মৌসুমে শত শত পর্যটক এলেও অনুন্নত যাতায়াত, পর্যটকদের জন্য পর্যটন স্পটটিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর নিহত ও আহত হবার ঘটনা ঘটছে। গত ৭ বছরে নাফাখুমে পড়ে গিয়ে নিহত হয়েছে অনন্ত ১০ পর্যটক আর আহত হয়েছে কমপক্ষে দুই শতাধিক। পর্যটন মন্ত্রণালয় বা স্থানীয় প্রশাসন কোন কাজ করেনি পর্যটন কেন্দ্রটির উন্নয়নে। ঢাকা থেকে আসা পর্যটক বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রকৃতিক এই ঝর্ণাটি পর্যটকদের জন্য খুব বিপজ্জনক, দ্রুত নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা প্রয়োজন। সরেজমিনে দেখা যায়, পাথুরে পিচ্ছিল পর্যটনটিতে কেউ পড়ে গেলে তীব্র পানির স্রোতধারার কারনে তিনি কোন কিছু আঁকড়ে ধরে প্রাণ বাঁচাবেন তার উপায় নেই, পড়লেই তিনি চলে যাবেন গভীর কূপে। ফলে মৃত্যু হাতে নিয়ে পর্যটকরা সৌন্দর্য উপভোগ করছে। থানছি থেকে রেমাক্রি মুখ পর্যন্ত সাঙ্গুনদী পথে বড় বড় পাথরের ফাঁক দিয়ে বোট চালকরা শীতকালে পর্যটকদের আনা-নেওয়া করলেও নাফাখুমে প্রতিনিয়ত পর্যটকরা দূর্ঘটনার শিকার হওয়াতে আশানুরূপ পর্যটক আসছে না বলে মনে করেন স্থানীয়রা। স্থানীয় বোট চালক উজ্জ্বল ত্রিপুরা বলেন, আমরা বোট চালিয়ে ভাত খাই, সরকার একটু সুদৃষ্টি দিলে নাফাখুমে পর্যটক আরও বাড়ত, এলাকাটি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হতো। পর্যটকদের নাফাখুমে যেতে হচ্ছে বন-জঙ্গল সাফ করে, পাহাড়ের বুকে হাঁটার মতো কোন রাস্তা নেই। ৬শ’ টাকায় একজন গাইড নিয়ে যেতে প্রশাসনের নির্দেশনা থাকলেও পর্যটকদের থাকার কোন ব্যবস্থা নেই, নেই পাবলিক শৌচাগার। থানছির রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মালিরাম ত্রিপুরা বলেন, সরকার একটু নজর দিলে রেমাক্রির বড় পাথর ও নাফাখুম হবে জেলার পর্যটন খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের প্রধান ক্ষেত্র। এই ব্যাপারে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল হক মৃদুল, নাফাখুমকে আমরা প্রাকৃতিক ভাবেই রাখতে চাই, এতো দুর্গম যে সেই স্থানে কোন অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ কোন ঠিকাদার করবে না। স্থানীয়রাও মনে করেন, দ্রুত নাফাকুম পর্যটক যাতায়তের উপযোগী সড়ক নির্মাণ ও নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হলে বছরে জেলার সর্বাধিক পর্যটক আগমন হবে এই পর্যটনটিতে। -এস বাসু দাশ, বান্দরবান থেকে
×