ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্যে শেষ আটে রিয়াল

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ৩১ জানুয়ারি ২০২০

চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্যে শেষ আটে রিয়াল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দলীয় পারফর্মেন্সের দারুণ দৃষ্টান্ত রেখে স্প্যানিশ কোপা দেল’রে ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার রাতে আসরের প্রিকোয়ার্টার ফাইনাল অর্থাৎ শেষ ষোলোর ম্যাচে স্বাগতিক রিয়াল জারাগোজাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে গ্যালাক্টিকোরা। জারাগোজার মাঠ লা রোমারেডা স্টেডিয়ামে রিয়ালের হয়ে গোলগুলো করেন ফরাসী ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে, স্প্যানিশ উইঙ্গার লুকাস ভাসকুয়েজ, ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়াস জুনিয়র ও ফরাসী স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা। এই ম্যাচেও মাঠে ছিলেন না ইনজুরি আক্রান্ত দুই তারকা গ্যারেথ বেল ও ইডেন হ্যাজার্ড। ম্যাচের শেষের দিকে বেনজেমাকে বদলি হিসেবে মাঠে নামান রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে আছে রিয়াল। সদ্যই তিন মাস পর স্প্যানিশ লা লিগায় পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ফিরেছে তারা। এই ফর্মটা অব্যাহত আছে কোপা দেল’রেতেও। যার প্রমাণ মিলল জারাগোজাকে উড়িয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে। জিদানের দলের দারুণ এই সাফল্যের মূলে আছে অটুট রক্ষণভাগ। জারাগোজার বিরুদ্ধে কোন গোল হজম না করা এই সাফল্যের আরেকটি উদাহরণ। গত নয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ দলগুলো মাত্র তিনবার রিয়ালের জাল খুঁজে পেয়েছে। এই ধারা আগামী মাসে ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলোর ম্যাচেও বজায় রাখতে চায় জিদানের দল। ম্যাচে জিদানের সেরা একাদশে ফেরেন ভিনসিয়াস, লুকা জোভিচ, ভাসকুয়েজ ও জেমস রড্রিগুয়েজ। তবে থিবাট কুর্তোয়ার পরিবর্তে গোলপোস্ট সামলানোর দায়িত্ব পড়ে ফ্রান্সের গোলরক্ষক আলফোনসে আরেওলার ওপর। শুরু থেকেই দাপট দেখানো রিয়ালকে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে টনি ক্রুসের কর্নার থেকে গোল করে এগিয়ে দেন ভারানে। ৩২ মিনিটে আবারও ক্রুসের সহায়তায় ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভাসকুয়েজ। বিরতির পর ম্যাচে ফিরতে জারাগোজা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। কিন্তু তাদের এই কৌশল কাজে দেয়নি। বরং মাত্র সাত মিনিটের মধ্যে আরও দুই গোল হজম করে বড় পরাজয়ের লজ্জা পায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে ভিনসিয়াসের পর ৭৯ মিনিটে কারভাহালের ক্রস থেকে বেনজেমা রিয়ালের হয়ে চতুর্থ গোল করেন। অথচ স্পেনের শীর্ষ ঘরোয়া লড়াইয়ে জারাগোজা একসময় নিজেদের দারুণভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে দ্বিতীয় টায়ারে নেমে যাওয়ার পর আর মূল লীগে ফিরে আসতে পারেনি। কোচ ভিক্টর ফার্নান্দেজ ম্যাচে আটটি পরিবর্তন করে দল সাজিয়েছিলেন। যেখানে ছিলেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ৩০ বছর বয়সী সাবেক অভিজ্ঞ জাপানী মিডফিল্ডার শিনজি কাগাওয়া। কিন্তু কোন কৌশলই তাদের বড় হার এড়াতে পারেনি। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে রিয়ালের হয়ে ‘৫০০’ ম্যাচ খেলার অনন্য রেকর্ড গড়েছেন মার্সেলো। মাইলফলককে স্মরণীয় করতে রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্টিনো পেরেজ মার্সেলোকে একটি বিশেষ জার্সি উপহার দেন। যেখানে ‘মার্সেলো ৫০০’ লেখা আছে। রিয়ালে বিদেশী ফুটবলারদের মধ্যে মার্সেলো এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা তারকা। তবে শীঘ্রই শীর্ষে পৌঁছে যাবেন এই ডিফেন্ডার। তার থেকে ২৭ ম্যাচ বেশি খেলে বর্তমানে সবার ওপরে আছেন তারই স্বদেশী কিংবদন্তি রবার্তো কার্লোস। মার্সেলো ২০০৭ সালে রিয়ালের জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নামেন। এরপর ধীরে ধীরে নিজেকে নিয়ে যান ক্লাবের শীর্ষ পর্যায়ে। বর্তমানে তিনি লস ব্ল্যাঙ্কোসদের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। ঐতিহ্যবাহী রিয়ালের জার্সিতে মার্সেলো এখন পর্যন্ত চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, চারটি ক্লাব বিশ্বকাপ, তিনটি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ, চারটি লা লিগা, দুটি কোপা দেল’রে ও দুটি স্প্যানিশ সুপার কাপের ট্রফি জিতেছেন। ৫০০ ম্যাচ খেলে মার্সেলো ৩৪৫ ম্যাচই জিতেছেন। যেখানে তিনি ডিফেন্ডার হয়ে গোলও করেছেন ৩৬টি। এই ৫০০ ম্যাচের মধ্যে ৩৫০ ম্যাচ খেলেছেন লীগে, ৯৭ চ্যাম্পিয়ন্স লীগে, ৩২ কোপা দেল’রে, ৮টি ক্লাব বিশ্বকাপে, ৯টি স্প্যানিশ সুপার কাপে ও ৪টি ইউরোপিয়ান সুপার কাপে।
×