ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরস্বতী পূজা সাড়ম্বরে উদ্যাপিত

প্রকাশিত: ১১:১৪, ৩১ জানুয়ারি ২০২০

সরস্বতী পূজা সাড়ম্বরে উদ্যাপিত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নানা থিম এবং বাঙালীর অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য ধারণ করে বৈচিত্র্যময় অসংখ্য অস্থায়ী পূজা ম-প। বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন, বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা, ব্যবসা-বাণিজ্য, লোকজ সংস্কৃতি ইত্যাদি নানা থিম নিয়ে তৈরি ম-পে বৃহস্পতিবার সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে সরস্বতী পূজা। উৎসবমুখর পরিবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় এ উৎসবকে ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। এদিন সারাদেশের মন্দির ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভক্তরা বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠার্থী দেবী সরস্বতীর পাদপদ্মে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেছেন। ম-পে ম-পে পূজার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াও হাতেখড়ি, প্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যারতি, আলোকসজ্জা ও মেলা বসেছে। প্রতিটি পূজা ম-পের বাণী অর্চনায় সমবেত হন নানা সাজে সজ্জিত নারী, পুরুষ, আবাল, বৃদ্ধ ও বনিতা। আবহমান বাঙালীর অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধারণ করে হিন্দুদের পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষও উৎসবে যোগ দিয়েছেন। তবে এবারের পূজার তিথি (পঞ্চমী তিথি) আগেই শুরু হওয়ায় গত বুধবারও দেশের অনেক জায়গায় সাড়ম্বরে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়। বুধবার সকাল সোয়া ৯টায় সরস্বতী পূজার তিথি (পঞ্চমী তিথি) শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত এই তিথি ছিল। এ হিসেবে এবারের সরস্বতী পূজা বুধবারের পাশাপাশি বৃহস্পতিবারও উদযাপিত হয়েছে। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সরস্ব^তী পূজায় সকাল থেকে হাজার হাজার পূজারি ও ভক্ত উপস্থিত হন। এখানে সকাল ৬টায় প্রতিমা স্থাপন, ৮টায় পূজা, সাড়ে ৯টায় পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, দুপুর ১২টায় প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় সন্ধ্যারতি এবং রাতে আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণের মেলায় ছিল বাহারি পণ্যের বিকিকিনি। গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ মন্দিরেও উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। সেখানেও বিপুল দর্শনার্থী পূজা উপভোগ করেছেন। রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম ম-পেও পূজা ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, রোকেয়া হল, কবি সুফিয়া কামাল হল, শামসুন্নাহার হল, কুয়েত মৈত্রী হল, বঙ্গমাতা ফজিলাতুননেছা মুজিব হল, নবাব ফয়জুন্নছা হল ও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলসহ বিভিন্ন হলে সাড়ম্বরে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়। প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে নেমেছিল পূর্ণার্থীদের ঢল। জগন্নাথ হলে কেন্দ্রীয় ম-প ছাড়াও এখানকার খেলার মাঠে ৬৫টি বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও অনুষদ মিলিয়ে ৭০টি ম-প স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে হল কর্মচারীদের চারটি পূজা ম-প রয়েছে। প্রতিটি বিভাগের ম-প তৈরি করা হয় নিজস্ব বিভাগীয় থিম অনুযায়ী। বরাবরের মতো চারুকলা বিভাগ এবারও জগন্নাথ হল পুকুরের মধ্যে মঞ্চ নির্মাণ করে ব্যতিক্রমী পূজার আয়োজন করে। সেখানে কাঠ, বাঁশ, বোর্ড, দড়ি, কাগজ, বেত, শোলা ইত্যাদি উপকরণে নির্মিত ৩২ ফুট দীর্ঘ বিশাল প্রতিমা দৃষ্টি কেড়েছে দর্শনার্থীদের। ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে বর্তমান বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সাজানো হয়েছিল গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ম-পটি। এই ম-পে বাংলাদেশের মানচিত্র ও গত বছর দেশে আলোড়ন তোলা ঘটনাগুলোর পেপারকাটিংও ছিল আকর্ষণের মূলে।
×