ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পকে বিপত্তিতে ফেলতে পারে বোল্টনের বই

ইমপিচমেন্ট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত রিপাবলিকানরা

প্রকাশিত: ০৯:১২, ৩১ জানুয়ারি ২০২০

ইমপিচমেন্ট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত রিপাবলিকানরা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চারিত হয়েছে। সিনেটে রিপাবলিকানদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি তৈরি হওয়ায় তা ডেমোক্র্যাটদের জন্য মোক্ষম সুযোগে পরিণত হয়েছে। ট্রাম্পকে হটাতে চার রিপাবলিকান সিনেটরের সমর্থন ডেমোক্র্যাটদের প্রয়োজন। খবর টাইমের। ইমপিচমেন্ট ইস্যুতে প্রায় সবকিছু গুছিয়ে এনেছিলেন ট্রাম্প। ক্ষমতা অপব্যবহার ও কংগ্রেসের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে ট্রাম্পকে ইমপিচ করার উদ্যোগ নিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রতিনিধি পরিষদে তাকে ইমপিচড করা গেলেও, রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে তেমন সম্ভাবনা ছিল না। কারণ, ফক্স নিউজের মতো সংবাদ মাধ্যম, টুইটার আর মিত্রদের নিয়ে প্রচার মাধ্যমে প্রায় সবকিছু নিজের দিকে নিয়ে এসেছিলেন ট্রাম্প। সিনেটে ইমপিচ হওয়া থেকে বাঁচা অবশ্য কঠিন কিছু ছিল না তার জন্য। তার নিজ দল রিপাবলিকানরাই এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ। নতুন কোন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকার প্রয়োজন নেই, এমনটা ট্রাম্প ও রিপাবলিকান পার্টি প্রায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছিল। কিন্তু তাদের বাড়া ভাতে ছাই দেন জন বোল্টন। তিনি কয়েকদিন আগেও ছিলেন ট্রাম্প শিবিরের প্রিয় মুখ। বেশ বৈরী পরিস্থিতিতেই তাকে হোয়াইট হাউস ছাড়তে হয়েছিল। হয়তো সেই তিক্ততার শোধ তুলতে দেরি করেননি বোল্টন। তিনি একটি বই লিখছেন যাতে এমন সব তথ্য আছে যা ইউক্রেন ইস্যুতে ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেমন বোল্টনকে ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, ইউক্রেন যদি বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত না করে, তাহলে তাদের তিনি সরকারী সাহায্য দেবেন না। এমন তথ্য প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর সিনেটে বিপাকে পড়েন রিপাবলিকানরা। রিপাবলিকান শিবির বলেছে, ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ায় আর কারও সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে না। ট্রাম্পের সাবেক ঘনিষ্ট সহচর ও দেশটির সাবেক প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন তার একটি অপ্রকাশিত বইতে কিছু তথ্য তুলে ধরেন যা ট্রাম্পকে সরাতে কাজে লাগতে পারে। জন বোল্টনও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আগ্রহী। কিন্তু রিপাবলিকান শিবির সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইমপিচমেন্ট কর্যক্রমে তারা আর কারও সাক্ষ্য গ্রহণ করবে না। নতুন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য এখন অন্তত চার রিপাবলিকান নেতার সমর্থন দরকার। সিনেটের অধিকতর উদারপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত মেইন অঙ্গরাজ্যের সুসান কলিন্স ও উটাহর মিট রমনি স্বশরীরে ডেমোক্র্যাটদের নতুন সাক্ষী উপস্থিত করার প্রস্তাবে সমর্থনে ভোট দিতে পারেন। সুশান কলিন্স সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের সহকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে ইতোমধ্যেই কথাবার্তা শুরু হয়েছে। যদি বোল্টনের বক্তব্য সত্য হয়, তাহলে ডেমোক্র্যাটরা এতদিন ধরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করে আসছেন, তা আরও জোরালো হবে। কারণ ইউক্রেনকে বাইডেনের বিরুদ্ধে চাপ দিতে তিনি সরকারী সাহায্যকে ব্যবহার করেছেন। ক্ষমতার এই অপব্যবহার তিনি করেছেন মূলত নিজের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও ডেমোক্র্যাট দলীয় শীর্ষ প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে রাজনৈতিকভাবে কাবু করতে। আলাস্কার সিনেটর লিসা মুরকাউস্কি বলেন, আমি বোল্টনের মুখ থেকে প্রকৃত সত্য শুনতে চাই। টেনেসির সিনেটর লামার আলেক্সান্ডার বলেন, আমি আসলে কোন পথে আগাব এখন সিদ্ধান্ত নেইনি। মিট রমনি বলেন, জন বোল্টনকে সাক্ষ্য দেয়ার পক্ষে কমপক্ষে ৪ রিপাবলিকান সিনেটর ভোট দেবেন, এমন সম্ভাবনা বেড়েছে। তিনি বলেন, বোল্টনের প্রাসঙ্গিকতা এখন অনেক স্পষ্ট। চার রিপাবলিকান ও সব ডেমোক্র্যাট সিনেটর পক্ষে ভোট দিলে বোল্টনকেও সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাবে।
×