ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন

‘এ রকম রক্ষণাত্মক ক্রিকেট অতীতে দেখিনি’

প্রকাশিত: ১২:০১, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

‘এ রকম রক্ষণাত্মক ক্রিকেট অতীতে দেখিনি’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান সফরে টি২০ সিরিজে বেহাল দশা হয়েছে বাংলাদেশ দলের। তা হয়েছে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাতেই। মন্থর গতির ব্যাটিংয়ে দুই টি২০তেই অল্প স্কোরেই বাধা পড়েছে বাংলাদেশ দল। প্রথম টি২০তে ১৪১ রান করার পর দ্বিতীয় টি২০তে ১৩৬ রান করে হেরেছে বাংলাদেশ। ২-০ ব্যবধানে সিরিজে হেরেছে। সিরিজ ক্রিকেটাররা এখন দেশে আছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও ক্রিকেটারদের সঙ্গেই সোমবার গভীর রাতে বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন। বুধবার সিরিজ নিয়ে নিজের অভিব্যক্তি জানান। তিনি বলেন, ‘এ রকম রক্ষণাত্মক ক্রিকেট দেখিনি।’ তিনি এ বাংলাদেশ দলকে চিনতেও পারছেন না! বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘অনেক দিন পর বাংলাদেশের খেলা দেখে মনে হয়েছে এটা বাংলাদেশ দল না। মনে হয়েছে সাধারণ খেলার উল্টোটা খেলেছে দল। এ রকম পরিস্থিতি কখনও দেখিনাই। ১২-১৪ ওভার যাওয়ার পরও এ রকম রক্ষণাত্মক ক্রিকেট দেখিনি। এটা একদম নতুন ব্যাপার।’ সিরিজে নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘অনেক কিছু আসলে এখনও বুঝতে হবে। খেলোয়াড়, কোচ এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বসতে হবে। কয়েকটা প্রশ্ন ছিল আমার। রিয়াদ, তামিমের সঙ্গে বসেছিলাম। প্রশ্নটাই ছিল- ব্যাটিং এমন কেন? এত বছর পর পাকিস্তানে আসলাম। ব্যাটিং নিলাম কেন টস জিতে। আমরা চেজ ভালই করি। ওরা বলছিল- এটা ব্যাটিং পিচ, তাই নিয়েছে। খেলা দেখে তা মনে হয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচে ওরা বলেছিল ১৫০-এর লক্ষ্য। এখন তো ১৮০ মিনিমাম ধরা হয়। কিন্তু ওরা হয়তো মনে করেছে ১৫০ যথেষ্ট। এটা কেন- সেটা আর জিজ্ঞেস করা হয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচের পর আবার বসেছিলাম। তখন অনেক কথা হয়েছে। দিবারাত্রির টেস্টেও দেখেছি টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছি। অচেনা পরিস্থিতিতে। দিবারাত্রির টেস্টে আমরা আগে খেলেনি। পাকিস্তানে কি আমরা উইকেট বুঝতে পারিনি? ওরা কি উইকেট বোঝেনি? সেটা বললে তো আমরা সাহায্য করতে পারতাম। তামিম যখন ছিল না, গত দুটি সিরিজে, তখন লিটন দাস ও নাঈমকে ওপেন করিয়েছি। আবার সৌম্য আছে। যে ওপেন করে। দ্বিতীয় ম্যাচে নাঈম আউটের পর- লিটন বা সৌম্যকে না নামিয়ে হঠাৎ করে মেহেদিকে নামানো হয়েছে। আমার মনে হয় না এটা লজিক্যাল। সেটা হলে তিনে লিটনের নামার কথা। চারে যেহেতু মুশফিক নাই, রিয়াদ আসতে পারে। তার অনেক ইচ্ছা উপরে খেলার। কিন্তু ওকে মনে হয়েছে পারলে সবার শেষে নামে। সব আপনাদের বলা যাবে না। একটা জিনিস স্পষ্ট- ১৩০-১৪০ করে কারও সঙ্গেই বসা যাবে না। ওদের সঙ্গে আবার বসতে হবে।’ এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার পথ কী? পাপন বলেন, ‘এখানে অনেক বিষয় আছে, যা আমরাও ফেস করছি। এখনও আমরা কয়েকটি বিষয়ে স্ট্রাগল করছি। যেমন ধরেন- ইন্ডিয়া সিরিজের ঠিক আগে, তিনদিন আগে শুনলাম সাকিব খেলতে পারবে না। এটা বড় ধাক্কা। ইন্ডিয়ার মতো দেশের সঙ্গে সিরিজের আগে, ওই সময় সাকিবের রিপ্লেসমেন্ট পাওয়া কঠিন। ওর কোন রিপ্লেসমেন্ট আমাদের নাই। তামিম গেল না, এটা বড় ধাক্কা। ওপেনিংয়ে নতুন কাউকে খোঁজা দরকার ছিল। আমরা নাঈমকে নামালাম। এবার তামিম ফেরত এলো। এবার মুশফিক বলল ও যাবে না। এখন চার নিয়ে সমস্যা হলো। আগে থেকে বললে আমরা সমাধান করতে পারি। কিন্তু হঠাৎ করে তো হয় না। এখন সামনের টেস্টে নতুন কাউকে নিলাম। একটা টেস্টের জন্য। একটা টেস্টে খেলানো যায়? অন্তত তিনটা ম্যাচ তো খেলানো দরকার। এরপর জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে মুশফিক খেলবে। কিন্তু তারপর আবার পাকিস্তানে টেস্ট। তখন আবার চেঞ্জ। প্রতি খেলার আগে পরিবর্তন করা খুব কঠিন।’ মাঠে পরিকল্পনা প্রয়োগের সঙ্কট দেখেছেন? পাপন বলেন, ‘কোচর সঙ্গে কথা বলতে হবে। প্লেয়াররা কোচের কথা কিছু বলেনি। কে ডিসিশনগুলো দিচ্ছে, তা জানতে হবে। টার্গেটটা কম হয়েছিল। প্লেয়ারদের হয়তো অতি আত্মবিশ্বাস ছিল। এটা কখনোই উচিত না। আজকের (বুধবার) খেলা দেখেন- নিউজিল্যান্ড ও ইন্ডিয়া। লাস্ট চার বলে তিন রান নিতে পারেনি, অথচ সুপার ওভারে ২০ রান নিয়ে ফেলেছে। টি২০তে এত কম রান করে জেতা যায়।’ টেস্ট খেলতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে পাপন যাওয়ার কথাই জানান, ‘প্রথম থেকেই আমরা সিকিউরিটিটা দেখা পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। আমরা বলেছিলাম টি২০ দেখে বলব। যে সিকিউরিটি দেখেছি- এর চেয়ে বেশি সিকিউরিটি সম্ভব না। আমরা সিকিউরিটি নিয়ে সন্তুষ্ট। এরপরও যে কোন জায়গায় যে কোন কিছু হতে পারে। টেস্ট খেলতে না যাওয়ার কোন কারণ নাই। কারণ এটা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ওয়াকওভার দেয়ার কোন মানে নাই। আমার মনে হয় আমরা টেস্ট খেলতে যাচ্ছি।’
×