ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিসিএল দিয়েই টেস্ট প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

বিসিএল দিয়েই টেস্ট প্রস্তুতি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজ শেষ। এখন সামনে আছে একটি টেস্ট। এই টেস্টের জন্য টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা একত্রে প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) প্রথম রাউন্ড খেলে সেই প্রস্তুতি নেয়া হবে ক্রিকেটারদের। শুধু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের আগেই যে বিসিএল খেলে প্রস্তুতি সারবে বাংলাদেশ টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা এমন নয়। তারা জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্টের আগেও বিসিএল খেলেই মূল প্রস্তুতি সারবে। মাঠে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং অনুশীলনের চেয়ে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলে প্রস্তুতি নেয়া স্বাভাবিকভাবেই ভাল হবে। বিসিএল শুরু হবে শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি। ৩১ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টটি শুরু হবে ৭ ফেব্রুয়ারি। জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররা এবার বিসিএলে খেলবেন। তাতে বোঝাই যাচ্ছে, বিসিএলে প্রথম রাউন্ড খেলেই পাকিস্তান সফরে প্রথম টেস্ট খেলতে যাবেন ক্রিকেটাররা। চারদিনের প্রথম শ্রেণীর ম্যাচটি খেলেই পাকিস্তান গিয়ে একদিন অনুশীলন করার সুযোগ পেয়ে প্রথম টেস্ট খেলতে নামবেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টটি শেষে ১২ ফেব্রুয়ারি সকালেই দেশে ফিরে আসার কথা টেস্ট দলের ক্রিকেটারদের। দেশে ফিরেই আবার ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাওয়া তৃতীয় রাউন্ডে খেলতে নামবেন তারকা ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানে যখন প্রথম টেস্ট খেলবেন ক্রিকেটাররা, তখন দেশে ৭ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি বিসিএলের দ্বিতীয় রাউন্ড শেষ হয়ে যাবে। তাই তৃতীয় রাউন্ড খেলবেন তারকা ক্রিকেটাররা। এই রাউন্ড শেষ হতেই আবার জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্টটি খেলতে নামবেন। টেস্টটি ২২ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। মাঝে ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি দুইদিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচও হবে। এই প্রস্তুতি ম্যাচে টেস্ট দলের কয়েকজনকেও দেখা যাবে। আবার ১৭ ফেব্রুয়ারি বিসিএলে তৃতীয় রাউন্ড শেষে চারদিন যে সময় মিলবে, সেই সময়টি মিরপুরে অনুশীলন করেও কাটাবে বাংলাদেশ টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা। তবে দলের ক্রিকেটারদের বিসিএলে ম্যাচ খেলেই আসল প্রস্তুতি হবে। সেই প্রস্তুতি কাজেও দেবে বলে মনে করছেন সৌম্য সরকার। তিনি বলেছেন, ‘সবাই যদি দুটি দিন অনুশীলনের চেয়ে মানসিকভাবে একটু বেশি চিন্তা করে লাল বল নিয়ে, তাহলে মনে হয় কাজ হবে। এতদিন সবাই টি২০ লেভেলে ছিল। সেখান থেকে যখন লাল বলের ম্যাচ খেলবে তখন একটা ফিল আসবে, এখানে ম্যাচ খেলা এক রকম আর ম্যাচ থেকে যাওয়া আরেক রকম।’ বিসিএলে বাংলাদেশ টেস্ট দলের ব্যাটসম্যানদের ভালভাবে পরখ করা হবে। পাকিস্তানে গিয়ে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় টি২০ ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় ২-০ ব্যবধানে সিরিজ শেষ হয়। খালি হাতে দেশে ফিরেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। সফরে ব্যাটসম্যানরা এমনই ব্যর্থ হন, যা নিয়েই আছে রাজ্যের ভাবনা। প্রথম টি২০তে ১৪১ রান করার পর দ্বিতীয় টি২০তে ১৩৬ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। টেস্টে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা কেমন করেন, সেদিকেই বিশেষ নজর থাকবে। কারণ, রান না করতে পারলে যে টেস্টে ভাল ফল আনা অসম্ভব। টি২০’র বেহাল দশা যদি টেস্টেও বজায় থাকে, তাহলে ম্যাচ পাঁচদিনে গড়াবে; তার নিশ্চয়তা নেই। ১২ ফেব্রুয়ারি নয়, দেশে আগেও ফিরে আসতে হতে পারে বাংলাদেশ টেস্ট দলের ক্রিকেটারদের। অবশ্য বাংলাদেশ টি২০ দল যখন পাকিস্তানে সিরিজ খেলতে থাকে, তখন দেশের মাটিতে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মুমিনুল হক, সাইফ হাসান, সাদমান ইসলামরা টেস্টের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। ব্যাটিং পরামর্শক নিল ম্যাকেঞ্জির তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত হন। কিন্তু ম্যাচ প্রস্তুতিটাকেই আসল মনে হচ্ছে। আর তাই তারকা ক্রিকেটারদের বিসিএলে খেলায় জোড় দেয়া হচ্ছে। টেস্ট দলে স্বাভাবিকভাবেই থাকছেন না নিষিদ্ধ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। মুশফিকুর রহীম যে পাকিস্তান সফরে কোন ম্যাচ খেলতে যাবেন না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। তাতে করে এই দুই ক্রিকেটারের অভাব পূরণ করতে হবে। এজন্য ক্রিকেটারও খোঁজা হচ্ছে। সর্বশেষ ভারত সফরের টেস্ট সিরিজের অধিনায়ক ছিলেন মুমিনুল হক। এবারও নিশ্চয়ই তিনিই থাকছেন অধিনায়ক। যেহেতু দলে তার স্থান পাকা। ওপেনার তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের থাকাও নিশ্চিত। লিটন কুমার দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, সাইফ হাসান, নাঈম হাসানও টেস্ট দলে থাকছেন। আল আমিন হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, এবাদত হোসেন চৌধুরীরও দলে থাকার সম্ভাবনা জোরালো। মুস্তাফিজুর রহমানকে এবার টেস্টে রাখা হবে কিনা, তা নিয়ে আছে সংশয়। তবে শফিউল ইসলাম সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলামের মধ্যে সবাই অথবা একাধিক ক্রিকেটারও সুযোগ পাবেন, তা নিশ্চিতই। বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) প্রথম রাউন্ড চলতে থাকবে। এরমধ্যেই টেস্ট দল ঘোষণা হয়ে যাবে। তবে বিসিএলে ব্যাটসম্যানদের নৈপুণ্য দেখা হবে। বোলারদের দিকেও নজর থাকবে। কারণ, একাদশ গঠন করতে বিসিএলের প্রথম রাউন্ডের নৈপুণ্য বিবেচনায় থাকবে। ইমরুল প্রথম রাউন্ড খেলবেন না। তিনি যে বিপিএলের সময় হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে ভুগেছেন, তা এখন বিদ্যমান। তাই ইমরুল নিশ্চিতভাবেই থাকছেন না পাকিস্তান সফরের প্রথম টেস্টের দলে। ওপেনার সাদমান ইসলামও না থাকাদের তালিকায় পড়ে যেতে পারেন। ম্যাকেঞ্জির তত্ত্বাবধানে প্রস্তুতির সময় বাঁ কব্জির চোট আবার ফিরে আসে। ইনজেকশন দেয়া হয়েছে। তা কতটা কাজে লেগেছে, দেখা হবে। এ মুহূর্তে বিশ্রামে আছেন সাদমান। তিনিও প্রথম রাউন্ড খেলতে পারবেন না। ইমরুলের সঙ্গে সাদমানকেও হয়ত প্রথম টেস্টের দলে দেখা যাবে না। নিল ম্যাকেঞ্জি ভালভাবেই ব্যাটসম্যানদের দিকে দৃষ্টি রাখবেন। পাকিস্তান সফরে টি২০ সিরিজে ব্যাটসম্যানরা, বিশেষ করে তামিম ইকবাল যে মন্থর ব্যাটিং করেছেন, তা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। তামিমই যা একটু ভাল করতে পারেন। তারপরও সমালোচনা থেকে বাঁচতে পারছেন না। বাকি ব্যাটসম্যানদের অবস্থা আরও কাহিল! আর তাই ব্যাটসম্যানদের দিকেই বেশি নজর থাকবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট খেলতে যাওয়ার আগে বিসিএলেই আসল প্রস্তুতি নেবেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা।
×