ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলে অসংখ্য পরিবর্তন

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলে অসংখ্য পরিবর্তন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী বা জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষণে এবারও সকল বোর্ডেই অসংখ্য ভুল ধরা পড়েছে। পুনঃনিরীক্ষণে পরিবর্তন হয়েছে অনেক পরীক্ষার্থীর ফল। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে বহু শিক্ষার্থী। ফেল করার পর খাতা চ্যালেঞ্জ করেও সকল বোর্ডেই পাস করেছে অনেকে। বাকিদেরও বিভিন্ন গ্রেডে ফল পরিবর্তন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ফল পরিবর্তন হয়েছে ঢাকা বোর্ডে। সর্বশেষ জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদনের পর বুধবার পৃথক পৃথকভাবে শিক্ষা বোর্ডগুলো নিজেদের ফল প্রকাশ করেছে। যেখানে ফলের ব্যাপক পরিবর্তনের চিত্রই ধরা পড়েছে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে যোগাযোগ করে ফল পরিবর্তনের তথ্য পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও স্ব স্ব বোর্ডে গিয়ে নিজেদের ফল জানতে পারছেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে পাস করেছে ফেল করা ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী। ফেল করা দুইজন শিক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ঢাকা বোর্ডে ৩৯ হাজার ৫০৩ জন পরীক্ষার্থী ৫৪ হাজার ৬২৯টি খাতা চ্যালেঞ্জ করে ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করেছিলেন। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে ৪৩ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা চার পরীক্ষার্থী। এছাড়া ফল পুনঃনিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩ জন। তিন হাজার আট জন জেএসসি পরীক্ষার্থী চার হাজার ১৫৬টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে ১১৮ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ১০২ জন পরীক্ষার্থী। যশোর শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে ৫৯ পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ৬১ পরীক্ষার্থী। এছাড়া ফল পুনঃনিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে নয় হাজার ৭৫৫ জন। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে ৯২ পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ৯৭ পরীক্ষার্থী। ফল পুনঃনিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯২ জন। সিলেট শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে ৪৫ পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ২৮ পরীক্ষার্থী। এ ছাড়া ফল পুনঃনিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৫ জন। মাদ্রাসার জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট বা জেডিসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে নতুন করে ৪০ পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। ফেল করা ১৭০ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ পরিবর্তন হয়েছে ১০৬ জন পরীক্ষার্থীর। সাধারণ বোর্ডের মতো মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের জেডিসি পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফলও বুধবার প্রকাশ করা হয়। বোর্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত ফল চ্যালেঞ্জ করেন সাত হাজার ২৯ জন আবেদনকারী। তারা মোট দশ হাজার ৪৫টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেন। আবেদনকারীদের মধ্যে মোট ৩১৬ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এদের মধ্যে ফেল থেকে পাস ১৭০ জন, জিপিএ পরিবর্তন ১০৬ জনের আর নতুন করে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ৪০ জন। এভাবে প্রতিটি বোর্ডের অসংখ্য শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কেন ফলাফলে বিশাল এই সংখ্যা পরিবর্তন? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষা বোর্ডগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সকলেই বলছেন, সব সময়েই দ্রুত ফল প্রকাশের কারণে তাড়াহুড়াই এই অবস্থার কারণ। মূলত তিন ধরনের ভুল ধরা পড়ছে। এক, কিছু খাতায় নম্বরের যোগ ফল ঠিক ছিল না। দুই, কিছু উত্তরের নম্বর যোগ করা হয়নি। আর তিন, ওএমআর ফরমে বৃত্ত ভরাটেও বেশ বিছু ভুল পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, পুনঃনিরীক্ষণে সাধারণত মোট ৪টি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কিনা, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে ওঠানো হয়েছে কী না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কিনা।
×