ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমরা এর চেয়ে ভাল দল ॥ মাহমুদুল্লাহ

প্রকাশিত: ১২:০২, ২৯ জানুয়ারি ২০২০

আমরা এর চেয়ে ভাল দল ॥ মাহমুদুল্লাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান সফরে গিয়ে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে হেরেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় টি২০ ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। দুই ম্যাচ হেরে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হারে বাংলাদেশ। হার একটি দলের হতেই পারে। কিন্তু যেভাবে ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছে তা একটি টেস্ট খেলুড়ে দলের কাছে কারোরই কাম্য নয়। ব্যর্থতার বোঝা মাথায় নিয়েই সোমবার গভীর রাতে বিসিবি’র ভাড়া করা বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার। দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেছেন, ‘যেমন খেলেছি, আমরা এরচেয়ে ভাল দল।’ প্রথম টি২০তে বোলিংটা ভাল হলেও ব্যাটিং আর ফিল্ডিং যাচ্ছে তাই হয়েছে। ব্যাটিংয়ে ১৪১ রানের বেশি করা যায়নি। ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছে। আবার বল হাতে যখন বোলাররা লড়াই করছেন, তখন ফিল্ডাররা একের পর এক ক্যাচ, রান আউট, ফিল্ডিং মিস করেছেন। তাতে দল শেষ ওভারে গিয়ে ৫ উইকেটে হারে। দ্বিতীয় টি২০তে কোন বিভাগেই নজরকাড়া যায়নি। ১৩৬ রান করে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হার হয়েছে বাংলাদেশের। পাত্তাই পায়নি মাহমুদুল্লাহবাহিনী। যদিও তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচ হওয়া এ সিরিজে ব্যাটিংয়ে তামিম ইকবালই (৫২.০০ গড়ে ১০৪ রান) সবচেয়ে বেশি রান এবং বোলিংয়ে শফিউল ইসলাম (৩ উইকেট) সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন। একজন ব্যাটসম্যানই দুই ম্যাচ মিলিয়ে শতরান করতে পেরেছেন। তিনি তামিম। আর বল হাতে একজনই ৩ উইকেট নিতে পেরেছেন। তিনি শফিউল। কিন্তু তামিম এত ভাল করার পরও দল এত খারাপ করল কেন? কারণ বাকি ব্যাটসম্যানরা যে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করেছেন। তামিম এত রান করলেও ধীরগতিতে এই রান তুলেছেন। তাতে সমালোচনাও হয়েছে। আর শফিউল নিজেকে মেলে ধরেই সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা দুই ম্যাচেই খারাপ করায় বোলাররা শত চেষ্টা করেও কাজের কাজ করতে পারেননি। স্কোরবোর্ডে রানই যে ব্যাটসম্যানরা বেশি তুলতে পারেননি। সিরিজ জেতার আশা নিয়ে পাকিস্তানে যাওয়া বাংলাদেশ দলের এমন পারফর্মেন্সে অবাক হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামও। তিনি বলেছেন, ‘মাঠে বাংলাদেশ দলের মধ্যে কোন আক্রমণাত্মক ভাব দেখিনি।’ বাংলাদেশ টি২০ দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ বলেছেন, ‘প্রতিভা আছে, সম্ভাবনা আছে, কিন্তু আমরা নিজেদের দক্ষতার প্রয়োগ যথেষ্ট ভালভাবে করতে পারিনি। ঠিকঠাক বাস্তবায়ন করতে পারিনি, যেটা ওরা করেছে। আমরা যথেষ্ট ভাল খেলতে পারিনি, পারফর্ম করতে পারিনি। মাঠের খেলা নিয়ে আমি হতাশ। আমরা যেমন খেলেছি, আমরা এরচেয়ে ভাল দল। এই ফরমেটে এখনও আমরা ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলার পথ খুঁজছি। মোমেন্টামের সন্ধান করছি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমাদের দেখতে হবে, কোন কোন জায়গায় আমরা উন্নতি করতে পারি। এই সংস্করণে আমাদের ক্রমাগত উন্নতি করে যাওয়া প্রয়োজন। এই মুহূর্তে আমাদের হাতে আছে বেশ তরুণ একটা দল। ওদের যথেষ্ট সুযোগ দিতে হবে, সময় দিতে হবে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য। এরপর হয়তো ওরা ভাল পারফর্মেন্স করতে পারবে।’ পাকিস্তানেরও কৃতিত্ব দিতে ভুলেননি মাহমুদুল্লাহ। জানিয়েছেন, ‘ক্রিকেটীয় দিক থেকে বলব আমি খুব হতাশ নিজেদের পারফর্মেন্সে। পাকিস্তানীদের কৃতিত্ব দিতে হবে। প্রথম ম্যাচে আমরা কিছুটা লড়াই করেছিলাম। পরের ম্যাচে তারা সহজেই জিতেছে। এখন আমাদের বসতে হবে, ভাবতে হবে কোথায় উন্নতি করা দরকার। এই একটা ফরমেট যেখানে আমাদের অনেক উন্নতির জায়গা আছে। তারা এক নম্বর দল, আমরা নয় নম্বর। কিন্তু আমরা আরও ভাল পারফর্ম করতে চেয়েছি। আমরা প্রয়োগ করতে পারিনি। তারা আমাদের থেকে ভাল করেছে।’ পাকিস্তান সফরে প্রাপ্তি বলতে আসলে কিছুই নেই। খালি হাতেই ফিরেছে দল। এরপরও তামিমের ব্যাটিং নৈপুণ্যই প্রাপ্তি মনে করছেন মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘প্রাপ্তির জায়গাটা আমার কাছে মনে হয় একটু কমই। আমি যদি শুধু প্রাপ্তির কথা বলতে যাই, তাহলে তামিমের ব্যাটিংয়ের কথাই বলব। কারণ উইকেটের আচরণ যেমন ছিল তা বুঝেই ও’ ব্যাটিং করেছে। অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ও ভাল করেছে।’ ব্যাটিং ব্যর্থতাও সামনে তুলে ধরেছেন মাহমুদুল্লাহ। বলেছেন, ‘আমার মনে হয় একসঙ্গে ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা ওভাবে ভাল করতে পারিনি। উইকেট ওরকম ব্যাটিং সহায়ক ছিল না। তারপরও আমার মনে হয় যে আমাদের সেই সামর্থ্য আছে যে আমরা আরেকটু ভাল করতে পারতাম।’ তবে বোলাররা ভাল করেছেন বলেই মনে করছেন মাহমুদুল্লাহ। তিনি বোলারদের নৈপুণ্য নিয়ে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় বোলিং ইউনিটের কথা বলতে গেলে বোলাররা মোটামুটি ভাল কাজ করেছে। প্রথম ম্যাচে বোলাররা ভাল বোলিং করেছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা ব্যাটিংয়ে বড় কিছু করতে পারিনি, এটা একটা কারণ হতে পারে। আমার কাছে মনে হয় ওভারঅল আমাদের ব্যাটিংটা আর ভাল হতে হবে টি২০তে।’
×