ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রিং সাইন কর্তৃপক্ষ আইপিওয়ের টাকা নিয়ে পালায়নি

প্রকাশিত: ০৯:৩৪, ২৯ জানুয়ারি ২০২০

রিং সাইন কর্তৃপক্ষ আইপিওয়ের টাকা নিয়ে পালায়নি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রিং সাইন টেক্সটাইলের বিদেশী পরিচালকরা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ নিয়ে নিজ দেশে চলে গেছেন বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। এমন গুজবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোম্পানিটি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। যার কারণে কোম্পানিটির সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। অথচ আইপিওর অর্থের টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ নেই এবং কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাবেই ওই অর্থ রয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, আইপিও অনুমোদনের পর থেকেই একটি পক্ষ কোম্পানিটি সম্পর্কে নেতিবাচক গুজব ছড়িয়েছে। পরবর্তীতে লেনদেন শুরুর পরেও এই চক্রের কৌশল কিছুই পাল্টায়নি। এর আগেও কোম্পানিটি সম্পর্কে নেতিবাচক খবরের কোন সত্যতা মেলেনি। কিন্তু ওই গুজবেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এবারও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে। বলির পাঠা হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। অসাধু গুজব রটনাকারীরা কোন লাভে শুরু থেকেই কোম্পানিটির নিয়ে কারসাজি করছেন সেটিও স্পষ্ট নন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে কোম্পানি সচিব আশরাফ আলী বলেন, রিং সাইন একটি বৃহৎ এবং হাজার কোটি টাকার টার্নওভারের কোম্পানি। এ কোম্পানিতে ৩ জন স্বতন্ত্র পরিচালকসহ মোট ১২ জন পরিচালক রয়েছেন। যার ৯ জনই বিদেশী পরিচালক এবং সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন। তবে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিদেশী পরিচালকেরা আইপিও ফান্ড নিয়ে ভেগে গেছেন বলে গুজব ছড়িয়েছে। ওই মহলের অপপ্রচারের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সচেতন হতে হবে। এছাড়া বিনিয়োগকারীরা সঠিক তথ্য জানার জন্য কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি বলেন, একটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইপিও ফান্ড ব্যবহার নিয়ে রিং সাইনকে অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করছে। যা নিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি রিং সাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সুং ওয়ে মিন এবং পরিচালক ও এমডির বোন সুং ওয়েন লি অ্যাঞ্জেলা এবং পরিচালক ও এমডির মামী হাসিয়ো লিউ ই চাই নিজ দেশ গিয়েছেন। এমডির নিকট আত্মীয় মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে তারা নিজ দেশে গিয়েছেন। আর এটাকেই একটি মহল রিং সাইনের পরিচালকেরা আইপিও ফান্ড নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে গুজব ছড়িয়েছে। ব্যক্তিগত স্বার্থে কোন একটি মহল এই গুজব ছড়াতে পারে বলে মনে করছে রিং সাইন কর্তৃপক্ষ। তবে তারা আগামী সপ্তাহে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বাংলাদেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে। তারা চায়না নববর্ষকে কেন্দ্র করে এখনও বিদেশে রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিং সাইন কর্তৃপক্ষ একাধিক ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করে। তবে সম্প্রতি একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের হিসাবে থাকা আইপিও ফান্ডগুলো ওই ব্যাংকে স্থানান্তর করতে বলেন। একইসঙ্গে ওই ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হুমকি দেন। কিন্তু রিং সাইনের পর্ষদ অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায়। এমন সিদ্ধান্তে ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান রিং সাইনের বিদেশী পরিচালকদের সরাসরি হুমকি দিয়েছেন। এতে অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছেন রিং সাইনের বিদেশী পরিচালকরা। গত ১০-১২ দিন ধরে রিং সাইনের আইপিও ফান্ড আত্মসাৎ নিয়ে শেয়ারবাজারে নানা ধরনের গুজব রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- কোম্পানিটির বিদেশী পরিচালকেরা আইপিওতে উত্তোলিত ১৫০ কোটি টাকার মধ্যে ৯০ কোটি টাকা নিয়ে বিদেশ চলে গেছেন। তারা আর দেশে ফিরবেন না। এমন খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রিং সাইন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ রাখা, না রাখা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিনিয়োগকারীরা। রিং সাইনের ব্যাংক স্টেটমেন্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির আইপিও ফান্ডের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকে ৪টি হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে আইপিওতে বাংলাদেশীদের আবেদনের জন্য ১টি, বিদেশীদের মধ্যে ডলারের জন্য ১টি, ইউরোর জন্য ১টি এবং পাউন্ডের জন্য ১টি হিসাব।
×