ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১০৬

বৈশ্বিক পর্যটনে ভাটা

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ২৯ জানুয়ারি ২০২০

বৈশ্বিক পর্যটনে ভাটা

চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ানোয় নিষিদ্ধ হয়েছে চীনাদের বিদেশ ভ্রমণ। ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য এ এক বিরাট ধাক্কা। কারণ বহু দেশ চীনা পর্যটকদের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। খবর বিবিসি, এপি ও পিপলস টাইমসের। গত কয়েকদিনে কোটি কোটি চীনার বিভিন্ন দেশে যাওয়ার কথা ছিল। করোনা ভাইরাসের ফলে ওইসব নাগরিক সফর বাতিল করেন। এর ফলে বিশ্বের বহু দেশের হোটেল, ক্যাসিনো, বিমানসংস্থা ও পর্যটক জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থাসহ অন্যান্য শিল্প কার্যত বন্ধ রয়েছে। কারণ চান্দ্র নববর্ষ উপলক্ষে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চীন থেকে কোটি কোটি পর্যটক বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যান। করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এক শ’ ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে পাঁচ হাজারের অধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এক চীনা কর্মকর্তা জানান, নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসে মোট ১০৬ জন মারা গেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। সংক্রমণ ঠেকাতে উহানসহ হুবেই প্রদেশের কয়েকটি শহর অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে গণপরিবহন। নববর্ষের ছুটি দু’দিন বাড়িয়ে দিয়ে অনেক সরকারী দফতরের কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। ২০০২ সালে সার্স এবং ২০১২ সালের মার্সের মতোই একই গোত্রভুক্ত করোনা ভাইরাস। ভাইরাসটি মূলত মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে। সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথাও থাকতে পারে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। সাধারণ ফ্লুর মতোই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়াতে পারে এ ভাইরাস। লক্ষণগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। কারও ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও দেখা দিতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এটি মোড় নিতে পারে নিউমোনিয়া, কিডনি বিকল হওয়ার দিকে। পরিণতিতে মৃত্যু ঘটতে পারে। মানুষের দেহে ভাইরাস সংক্রমণের পর লক্ষণ দেখা দিতে পারে এক থেকে ১৪ দিনের মধ্যে। দুই দশক আগে চীনে সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ব অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময় বিশ্ব অর্থনীতিতে চীনের অবদান ছিল মাত্র চার দশমিক তিন ভাগ। সেট এখন ১৬ দশমিক তিন শতাংশে পৌঁছেছে। হংকংয়ে চীনবিরোধী বিক্ষোভ, বেজিং-ওয়াশিংটন বাণিজ্য লড়াই প্রভৃতি কারণে চীনে পর্যটকের সংখ্যা এমনিতেই কমে গেছে। এরপর করোনা ভাইরাস পর্যটন শিল্পকে আরও নাজুক অবস্থায় নিয়ে গেছে। ২০১৯ সালে ১৩ কোটি ৪০ লাখ চীনা পর্যটক বিদেশ সফর করেন। নববর্ষের সময় এ সংখ্যা আরও বাড়ে। এবার নববর্ষে ৭০ লাখ চীনার দেশের বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। চীনের এসব পর্যটকের প্রধান গন্তব্যস্থল হংকং, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এবং জাপান। তবে চীনারা সবচেয়ে বেশি দিন অবস্থান ও অর্থ খরচ করে প্যারিস, লন্ডন, মিলান ও নিউইয়র্ক শহরে। চীনা পর্যটক কমায় বেশি ক্ষতির শিকার হবে প্রতিবেশী দেশগুলো। পাশাপাশি ইউরোপ ও আমেরিকার ওপর এর প্রভাব পড়বে।
×