ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তৃতীয় ও শেষ টি২০ বাংলাদেশের

হোয়াইটওয়াশ না সান্ত¡নার জয় আজ?

প্রকাশিত: ০৮:১২, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

হোয়াইটওয়াশ না সান্ত¡নার জয় আজ?

মিথুন আশরাফ ॥ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে হার হয়ে গেছে বাংলাদেশের। এক ম্যাচ হাতে রেখেই হার হয়েছে। ২-০ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম টি২০তে ৫ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয় টি২০তে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদবাহিনী। আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দুপুর ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এই ম্যাচে হারলেই হোয়াইটওয়াশ হবে বাংলাদেশ। আর জিতলে মিলবে সান্ত¡নার জয়। এখন হোয়াইটওয়াশ না সান্ত¡নার জয় নিয়ে দেশে ফিরবে বাংলাদেশ? সেই প্রশ্নই থাকছে। পাকিস্তানের মাটিতে কখনই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এবার সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে পাকিস্তান সফরে যাওয়া হয়। উল্টো সিরিজ হার হয়ে গেছে। এখন এক ম্যাচ জিতে অন্তত পাকিস্তানে প্রথমবার জেতার স্মৃতি নিয়ে দেশে ফেরা গেলেই হলো। নাহলে আবারও খালি হাতেই ফিরতে হবে বাংলাদেশ দলকে। পাকিস্তানের মাটিতে এর আগে দুইবার দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। সর্বপ্রথম ২০০৩ সালে ও শেষবার ২০০৮ সালে সাড়ে ১১ বছর আগে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের মাটিতে সর্বপ্রথম ২০০৩ সালে ৩ ম্যাচের টেস্ট ও ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। এর পাঁচ বছর পর ২০০৮ সালে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে ও এক ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলে। একবার ২০০১ সালে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের একটি টেস্ট ও ২০০৮ সালে এশিয়া কাপের একটি ওয়ানডে খেলতেও যায় বাংলাদেশ। সেই ২০০১ সাল থেকে পাকিস্তানে খেললেও এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের মাটিতে একটি ম্যাচও জেতা যায়নি। ২০০১ সাল থেকে এবারের সফরের আগ পর্যন্ত চার টেস্ট, একটি টি২০ ও ১১টি ওয়ানডে খেলে সবকটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার আরও দুটি টি২০তে হার হয়েছে। যদি আজ না জেতা যায় তাহলে টি২০তে পাকিস্তানের মাটিতে চার ম্যাচ হার হয়ে যাবে। আর এবার হোয়াইটওয়াশও হয়ে যাবে বাংলাদেশ। প্রায় সাড়ে ১১ বছর পর পাকিস্তান সফরে গেছে বাংলাদেশ দল। সর্বশেষ ২০০৮ সালের জুলাইয়ে পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়েছিল বাংলাদেশের। এবার তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তান সফরে গিয়েও কী খালি হাতেই ফেরা হবে? সেই প্রশ্নই উঠছে। যেখানে সিরিজ জয়ের আশা দেখা হয়েছে, সেখানে একটি ম্যাচও জেতা যাবে না? পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অবশ্য সবমিলিয়ে এর আগে টি২০ ম্যাচ খেলা হয় ১০টি। দুটি টি২০তে জয় মিলে। ৮টিতেই হার হয়। সেই জয়গুলো নিজ দেশের মাটিতে পায় বাংলাদেশ। এবার পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে আরও ২টি টি২০ হার হয়। অবশ্য এখনই পাকিস্তানের মাটিতে একটি জয়ও মিলবে না শেষ পর্যন্ত, তা বলা মুশকিল। কারণ এবারের যে সফর সেখানে শুধু টি২০ ম্যাচই থাকছে। এবার পাকিস্তান সফরটি তিনধাপে করা হয়েছে। শুরুতে টি২০ সিরিজটি শেষ হলে এরপর টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টটি খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় ধাপে ফেব্রুয়ারিতে ৭ থেকে ১১ তারিখে প্রথম টেস্ট হবে। টেস্টটি খেলে চলে আসবে বাংলাদেশ দল। আবার এপ্রিলে পাকিস্তান সফরে যাওয়া হবে। তখন তৃতীয় ধাপে ৩ এপ্রিল একটি ওয়ানডে ও এপ্রিলের ৫ থেকে ৯ তারিখ দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আজ যদি হারে বাংলাদেশ তাহলে টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার সঙ্গে খালি হাতেও ফেরা হবে। টেস্ট সিরিজেও যে খুব আশা থাকছে তা নয়। তবে এপ্রিলে যে পাকিস্তানের মাটিতে একটি ওয়ানডে আছে তাতে বাংলাদেশের জয় মিলতেও পারে। বাংলাদেশের ফেবারিট ফরমেটই যে ওয়ানডে। তবে সেই ওয়ানডে ম্যাচে কি হবে তা সময়ই বলবে। কিন্তু এখন শেষ টি২০ নিয়েই যত ভাবনা হচ্ছে। দুটি ম্যাচে হার হয়ে গেছে। বাজে পারফর্মেন্স মিলেছে। তা নিয়ে তো আর বসে থাকলে চলবে না। যেহেতু এখনও একটি ম্যাচ বাকি আছে। আর এই ম্যাচে জিতলে অন্তত সান্ত¡নার জয় মিলবে, সেই চেষ্টাই করতে হবে। বাংলাদেশ টি২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ যেমন বলেছেন, ‘এখনই নিশ্চিত বলতে পারছি না যে, শেষ ম্যাচে আমরা কোন পরিকল্পনা নিয়ে খেলব। হয়তো বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়দের পরীক্ষা করে দেখা হবে। তবে আমাদের শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে এবং ম্যাচটাও জিততে হবে।’ কিন্তু তা কী সম্ভব? টি২০ র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ আছে ৯ নম্বরে। সেখানে পাকিস্তান আছে ১ নম্বরে। পার্থক্যটা এখানেই গড়া হয়ে যায়। আর যেভাবে দুই টি২০তে পাকিস্তান খেলেছে তাতে টি২০তে বাংলাদেশ যে কতটা পিছিয়ে তাই বোঝা গেছে। প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো সেই পার্থক্য বুঝিয়েও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘তারা (পাকিস্তান) দেখিয়ে দিয়েছে, কেন তারা টি২০ র‌্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বর দল। আর আমরা শেষের দিকের। এ মুহূর্তে দক্ষতা ও সামর্থ্যে দুই দলের অনেক পার্থক্য। আমাদের এখনও অনেক দূর এগোনোর বাকি।’ এই এগিয়ে যাওয়া যে কবে হবে? তার কোন নিশ্চয়তা নেই। ডোমিঙ্গো যেমন বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা এখনও শেখার পর্যায়েই আছেন, ‘তারা দারুণ একটা বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে কঠিন উইকেটে খেলেছে। আশাকরি তারা অনেক কিছুই শিখেছে।’ এই শিক্ষার দিন যে কবে শেষ হবে। সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। সামনেই টি২০ বিশ্বকাপ। অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হবে বিশ্বকাপ। এ জন্য দল গোছানোর কাজ আগে থেকেই শুরু হয়েছে। আর তাই তো বিপিএলে ভাল পারফর্ম করা ক্রিকেটারদের দলে ভেড়ানো হয়েছে। কিন্তু ক্রিকেটাররা বিপিএলে আলো ছড়ালেও টি২০ ক্রিকেটের মধ্যে থেকেই পাকিস্তান সফরে টি২০ সিরিজ খেলতে গেলেও কাজের কাজ করতে পারছেন না। আজ যদি তৃতীয় ও শেষ টি২০তেও না পারেন তাহলে বাংলাদেশ টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হবে। জিতলে মিলবে সান্ত¡নার জয়। কোন স্মৃতি কপালে জুটবে?
×