ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বরগুনায় নিয়ন্ত্রণ হারানো বাস থেকে পালাল চালক ;###;অন্যত্র নিহত ৭

বাস চাপায় প্রাণ গেল একই পরিবারের তিনজনের

প্রকাশিত: ১১:১৫, ২৬ জানুয়ারি ২০২০

বাস চাপায় প্রাণ গেল একই পরিবারের তিনজনের

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ সড়কে প্রাণহানি কোনক্রমেই থামছে না। সড়কে ঝরল আরও ১০ প্রাণ। এর মধ্যে বরগুনার আমতলীতে বাসচাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাইভেটকার খাদে পরে এক দম্পতি, বরিশালে নারীসহ দু’জন এবং ময়মনসিংহের ভালুকায় এক মিস্ত্রি, হবিগঞ্জের মাধবপুরে পথচারী ও মাদারীপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত ও শনিবার পৃথক দুর্ঘটনায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতদের। জানা গেছে, পটুয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা কুয়াকাটাগামী ‘মায়ের দোয়া পরিবহন’ বাসটি পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী একে স্কুল চৌরাস্তায় স্পীডব্রেকারের কাছে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। পরে বাসটি একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এরপর বাসটির চালক চলন্ত গাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বাসটি চালু অবস্থায় প্রথমে দুটি অটোরিক্সা চাপা দেয়। বাসের চাপায় দুটি অটো দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এরপরে বাসটি সামনে চলতে থাকে। দ্রুতগতিতে চালকহীন বাসটি সাত পথচারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে একই পরিবারের তিনজন মা নুপুর বেগম (৩০), ছেলে নিশাত (১০) ও বড় বোনের মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী লামিয়া (১৫) নিহত হয়। নিহত নুপুরের ছোট মেয়ে মমতা (৬), পথচারী শাহাবুদ্দিন (৫৬) ও গ্রাম্য চিকিৎসক জব্বার (৪০) আহত হয়। আহতদের মধ্যে জব্বারকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একই পরিবারের তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় আমতলীতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত তিনজনের বাড়ি আমতলীর দক্ষিণ রাওগা গ্রামে। নিহত নুপুরের স্বামী আবুল হোসেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী। আবুল হোসেনের গ্রামের বাড়ি কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামে। আহত শিশু মমতাকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কিন্তু শিশু মমতা জানে না তার মা, ভাই ও বোন বেঁচে নেই। মমতাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অনবরত মমতা কাঁদছে আর বলছে, তোমরা আমার মায়ের কাছে নিয়ে চল। আমার মা কোথায় ? প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ এনায়েত করিম, আবদুর রহিম দোলন ও আশ্রাব আলী বলেন, চালকহীন বাসটি দ্রুতগতি একটি মাইক্রোবাস, দুটি অটোরিক্সা ও ৬-৭ পথচারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়। বরিশালে নারীসহ হত ২ বরিশালে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ দু’জন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো শেরেবাংলা সড়কের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের ছেলে রাকান (৫) ও মেহেন্দীগঞ্জের কাজিরহাট থানার কাজিরবাদ গ্রামের মৃত জামাল খানের স্ত্রী শেফালী বেগম (৫০)। শুক্রবার রাতে কাজিরহাট থানার গাবতলী এলাকা থেকে অটোরিক্সায় কাজিরবাদ যাচ্ছিলেন শেফালী বেগম। পথিমধ্যে দীঘিরপাড় এলাকায় পৌঁছলে তার গায়ের চাঁদর অটোরিক্সার ইঞ্জিনের সঙ্গে জড়িয়ে গলায় ফাঁস লেগে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী মুলাদী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে এদিন সকালে শেরে বাংলা সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার চাপায় রাকান (৫) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। নিহত রাকান ওই এলাকার বাসিন্দা এবং নৌবাহিনীর পেটি অফিসার রফিকুল ইসলামের পুত্র। রূপগঞ্জে দম্পতি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাইভেটকার খাদে পরে ধ্রুব কান্ত সাহা ও তার স্ত্রী অজন্তা সাহা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মৃত ধ্রুব কান্ত সাহার মেয়ে স্বর্ণালী সাহা গুরুতর আহত হয়। শুক্রবার রাতে কাঞ্চন পৌরসভার কালাদী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, শুক্রবার রাতে ধ্রুব কান্ত সাহা তার প্রাইভেটকারে স্ত্রী অজন্তা সাহা ও মেয়ে স্বর্ণালী সাহাকে নিয়ে নরসিংদী থেকে নিজ বাসভবন বসুন্ধরায় যাচ্ছিলেন। এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক দিয়ে বসুন্ধরার বাসায় যাওয়ার পথে কালাদী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক প্রাইভেটকারটিকে ধাক্কা দিলে সেটি খাদে পরে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ধ্রুব কান্ত সাহা ও তার স্ত্রী অজন্তা সাহা মারা যান। মেয়ে স্বর্ণালী সাহা গুরুতর আহত হয়। মাধবপুরে পথচারী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাধবপুরের দরগা গেট এলাকায় দ্রুতগামী বাসের চাপায় জানে আলম (৩৫) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছে। শনিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তা পারাপারের সময় ঢাকাগামী ‘ইউনিক পরিবহন’ তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিহত জানে আলম লাখাইয়ের বুল্লা গ্রামের কাছম আলীর ছেলে। ভালুকায় মিস্ত্রি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভালুকা পৌরসভার ‘দিদার ইঞ্জিনিয়ারিং’র সামনে শনিবার ভোরে রাস্তা পার হতে গিয়ে শফিক মিস্ত্রি (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ভালুকা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মৃত ধলি আকন্দের ছেলে শফিক মিস্ত্রিকে ময়মনসিংহগামী অজ্ঞাত একটি প্রাইভেটকার চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। মাদারীপুরে যুবক শুক্রবার রাতে মাদারীপুর সদরের ধুরাইল ইউনিয়নের হবিগঞ্জ ব্রিজের সামনে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় গুরুতর আহত হন আরও দু’জন। জানা যায়, ধুরাইল ইউনিয়নের হবিগঞ্জ সেতুতে দুই দিক থেকে আসা মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে চরখাগদী এলাকার খালেক হাওলাদারের ছেলে সুজন হাওলাদার (২০), ফয়সাল (২২) ও রাজৈরের শাওন গুরুতর আহত হন। আহতদের চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দু’জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
×