ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনী

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনী

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ২১ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনী হয়েছে বৃহস্পতিবার। গত ৩-২৩ জানুয়ারি ২০২০ দ্বিতীয়বারের মতো ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২০’-এর আয়োজন করা হয়। দেশের ৬৪টি জেলা, ৬৪টি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের পাঁচ হাজারের অধিক শিল্পী ও শতাধিক সংগঠনের অংশগ্রহণে একাডেমির নন্দন মঞ্চে আয়োজিত উৎসবে ঐতিহ্যবাহী লোকজ খেলা, লোকনাট্য ও সারাদেশের শিল্পীদের বিভিন্ন নান্দনিক পরিবেশনার মাধ্যমে এ উৎসব সাজানো হয়। প্রতিদিন ৩টি জেলা, ৩টি উপজেলা, জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী ও সংগঠনের পরিবেশনা ছিল। এ ছাড়াও একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে একটি লোকনাট্য পরিবেশিত হয়। উৎসবের সমাপনী দিনে নন্দন মঞ্চে সমাপনী আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির সচিব মোঃ বদরুল আনম ভূঁইয়া। আলোচনা শেষে জাতীয় সঙ্গীতের পর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় এ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিল্পীদের পরিবেশনায় কোলাজ গান পরিবেশন করে শিল্পী সাফান, সুপ্ত, শুশমী, অমিত, সাফিন ও লিতি। বরগুনা জেলার পরিবেশনায় জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, বাবুল কৃষ্ণ সাহার পরিচালনায় ‘সাগর পাড়ের মানুষ মোরা, বিশ্ববাসী চিনলো তোমায়’ ২টি সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী প্রতাপ, সুজন, রক্তিম, আকাশ, প্রবাস, ঝুমা, নিশাত, হিরা, দিপান্বীতা, আশালতা ও ছানিয়া। মেহেদী হাসান বেলালের নৃত্য পরিচালনায় ‘মোগো মেজাজ বোলে গরম এবং দেশে দস্যু এলোমেলা’ ২টি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে শিল্পী মেহেদী, নিশাদ, শাহরিয়া, নাঈম, রিফাত, অন্তু, দীপ্তি, তাহরিমা, ফারজানা ও জিসমি। যন্ত্রে সোহিনী রাগ পরিবেশন করে শিল্পী বাবুল, কালিদাস, আরিফুর রহমান, শিপন, বিপুল, শুভ ও শামিম হোসেন। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী মিলন চন্দ্র কর্মকার। মুন্সীগঞ্জ জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, ‘শোক একটি মুজিবরের থেকে ও বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ ২টি সমবেত সঙ্গীত এবং ‘দে তালি বাঙালি ও কারার ওই লৌহ কপাট’ গানের কথায় ২টি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে মুন্সীগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্য শিল্পীরা, ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙ্গামাটির পথ’ যন্ত্রে সুর তোলেন মুন্সীগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির যন্ত্রশিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী শিশির রহমান এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী শিতল। খাগড়াছড়ি জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, ‘শৈল থেকে সমতটে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও বাঙালউ জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত দেশাত্মবোধক গান এবং একটি মুজিবরের থেকে’ ২টি সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী মোঃ ফারুক, মোঃ জুয়েল, উত্তম রায়, নিয়ং মারমা, সুমি আক্তার, অনুশ্রী চাকমা, উলিপ্রু মারমা, উক্রাসং মগ, পাখী ত্রিপুরা, তৃষিতা চাকমা, প্রত্যাশা চাকমা ও সুকর্না দে। ‘চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও বাঙালী ভাষার গানের কথায় দেশাত্মবোধক গান এবং চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী জুম নৃত্য’ পরিবেশন করে নৃত্যশিল্পী রিয়া চাকমা, রুবিনা চাকমা, রেশমী চাকমা, জেনিয়া চাকমা, হেলী চাকমা, সুফিয়া চাকমা, মেমাচিং মারমা, প্রমিস চাকমা, সাচিং মারমা, রূপান্তর চাকমা ও সমর বিজয় চাকমা। যন্ত্রে চট্টগ্রামের পাহাড়ী গানের সুর তোলেন শিল্পী গৌতম মনি চাকমা, প্রেমেন্দু চাকমা, মঙ্গল কান্তি চাকমা, রতœ সেন চাকমা, ডেবিট চাকমা, মান্তি প্রিয় চাকমা, শ্যামল চৌধুরী, এসএস প্রাবন ও রাকেশ দে। ‘মুজিব তোমার সোনার বাংলা’ পরিবেশন করে জাতীয় পর্যায়ের কন্ঠশিল্পী শাইলু শাহ ও অনুশ্রী চাকমা এবং উপজেলা পর্যায়ের শিল্পী শাফিন আরমান। চট্টগ্রাম জেলার পরিবেশনার শুরুতে জেলা ব্রান্ডিং ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের কথায় সমবেত সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চট্টগ্রামের শিল্পীবৃন্দ। এ ছাড়াও যন্ত্রসঙ্গীত এবং জাতীয় পর্যায়ের ও উপজেলা পর্যায়ের কণ্ঠশিল্পীদের পরিবেশনায় একক সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।একাডেমি প্রাঙ্গণে রাত ৮টায় দর্শনীর বিনিমেয়ে মঞ্চস্থ হয় সজল কান্তি সরকারের রচনা ও গৌতম কর তপনের নির্দেশনায় এবং একতা নাট্য সংস্থার পরিবেশনায় ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য ধামাইল পালা ‘রাই কিশোরী’। সঙ্গীত পরিচালনায় সোহেল রানা ও কণ্ঠশিল্পী ফারজানা আক্তার আশা। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্চিনাগু-সম্পা পাল, মৌলি তালুকদার, নোভা চৌধুরী, রুহি দেবনাথ, মাশিয়াত সুবহে আলম মাহি এবং বৃষ্টি ম-ল, পাখি বৈদ্য, পিংকি সরকার, বন্যা সরকার হিয়া, সাজনা আক্তার ইতি। যন্ত্রে সহযোগিতা করেছেন কপির ঋষি, কৌশল দাস বিজন এবং সোহেল রানা। গত ৩ জানুয়ারি একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, এমপি। উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এনডিসি। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির সচিব মোঃ বদরুল আনম ভূঁইয়া।
×