ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তুরস্কে আফগান শরণার্থীদের নতুন স্রোত

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

 তুরস্কে আফগান শরণার্থীদের নতুন স্রোত

কয়েক দশক আগে আফগানিস্তানে সোভিয়েত হস্তক্ষেপে হাজার হাজার আফগান পার্শ্ববর্তী ইরানে পালিয়ে যায়। বর্তমানে ওই শরণার্থীদের অনেকে নতুন আশ্রয় লাভের জন্য আবারও অন্য একটি দেশ তুরস্কে পালিয়ে যাচ্ছে। তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সৃষ্ট ভয়াবহ অর্থনৈতিক অবস্থা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। ওয়াশিংটন পোস্ট। লাখ লাখ আফগান শরণার্থী গতবছর বিপদসঙ্কুল সুদীর্ঘ দুর্গম সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী দেশ তুরস্কে প্রবেশ করেছে। দেশটিকে এর মধ্যেই পালিয়ে আসা আফগান শরণার্থীদের ভারি বোঝা বহন করতে হচ্ছে। তুরস্ক প্রায় ৪ লাখ শরণার্থী সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের মতে, বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষের এটা সবচেয়ে বড় সংখ্যা। এখানে নিবন্ধনকৃত আফগান শরণার্থীর সংখ্যাই ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি। তুরস্ক এ শরণার্থী স্রোত নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে। কিন্তু সাহায্য সংস্থাগুলো বলেছে, ইরান থেকে আগত তাদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ইরানী সীমান্ত থেকে প্রায় ৫০ মাইল পশ্চিমে পূর্বাঞ্চলীয় তুর্কী শহর ভুয়ানে ক্রমবর্ধমান শরণার্থীদের রাস্তায়, পার্কে ও বাস টার্মিনালে ঘুমাতে হচ্ছে। তুর্কী কর্তৃপক্ষ তাদের অন্যত্র চলাচলে বাধা দিচ্ছে। এদের অনেকেই ইরানে জন্মগ্রহণ করেছে বা সেখানে বাস করেছে কয়েক বছর। নতুন করে এ অনভিপ্রেত সঙ্কট সৃষ্টির কারণ, ইরানের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ। তার প্রশাসনের প্রত্যাশা, এ চাপে তেহরান এর পরমাণু শক্তি ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীর অবসান ঘটাবে। এ কৌশলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ব্যাংকিং ট্র্যানজেকশন, তেল রফতানি, ইরানের যান সংক্রান্ত সেক্টরে সরবরাহ ও আরও কিছুর ওপর কঠোর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা। ইরান নগদ অর্থের তহবিল বৃদ্ধি, আফগান শরণার্থীদের এলাকাসহ সমগ্র দেশে অসন্তোষ হ্রাসের জন্য নবেম্বরে আকস্মিকভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উপাত্তে বলা হয়, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে তুরস্কে প্রবেশকারীদের মধ্যে বৃহত্তম গ্রুপ হচ্ছে আফগানদের। সরকার বলেছে, গতবছর ১ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি কাগজপত্রহীন আফগান তুরস্কে প্রবেশ করেছে। এ সংখ্যা ২০১৮ সালের সংখ্যার চেয়ে প্রায় ১ লাখ বেশি। চড়াই-উতরাই যাত্রার পথে তাদের অনেকের মৃতদেহ দেখা যায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবস্থায়। কেউ কেউ বিপদসঙ্কুল পথে জীবনীশক্তি হারিয়ে মৃত্যুর কবলে ঢলে পড়ে বা বিশৃঙ্খলা, গোলমাল ও অন্ধকারের মধ্যে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে নিঃশেষ হয়ে যায়। কেউ কেউ বলে, তুর্কী বা ইরানী নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় বা পাচারকারীদের বিপুল অর্থের দাবি মেটাতে না পেরে তাদের পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে দেয়া হয়।
×