ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চীনে এ পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু

করোনা ভাইরাস ॥ সাময়িক বন্ধ উহানের গণপরিবহন

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ২৪ জানুয়ারি ২০২০

  করোনা ভাইরাস ॥ সাময়িক  বন্ধ উহানের গণপরিবহন

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে এর উৎস চীনের উহান শহরের গণপরিবহন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে যাচ্ছে নগর কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া নতুন চন্দ্রবর্ষের ছুটির দিনগুলো যখন কোটি কোটি চীনা নাগরিক দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করবে তখন উহানের এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দাকে শহর না ছাড়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিবিসি। শ্বাসযন্ত্রে অসুখ সৃষ্টিকারী নতুন এ ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবে চীনে এ পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ও প্রায় ৬০০ লোক আক্রান্ত হয়েছে। ‘হাঁচি, কাশির মাধ্যমে’ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকা এ রোগটি চীনের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি সুদূর যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য কয়েকটি দেশেও ছড়িয়েছে। ভাইরাসটির বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ধারণা করা হয়, চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর উহানের একটি পশু বাজারে অবৈধভাবে চলা বন্যপ্রাণী ব্যবসা থেকে গত বছরের শেষ দিকে প্রাণঘাতী এ করোনা ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন দেশে কয়েকজন আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যুর সব ঘটনা উহান যে প্রদেশে অবস্থিত সেই হুবেইতেই ঘটেছে। উহানের স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে তারা সব বহির্গামী ট্রেন সার্ভিস ও উড়োজাহাজের ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ রাখবে এবং দুপুর ১টা থেকে বাস, সাবওয়ে ও ফেরি সার্ভিসও বন্ধ রাখবে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া নগরবাসীদের শহর না ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় সরকার। বুধবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল নয়জন এবং আক্রান্ত ৪৪০ জন। একদিনেই সরকারী হিসাবে আরও আটজনের মৃত্যু ও ১০০ জন এতে আক্রান্ত হলেন। চীনের এই ভাইরাস নিয়ে জরুরী বৈঠক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত এই ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে সংস্থাটি। চীন ছাড়াও এখন পর্যন্ত তাইওয়ান, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে যুক্তরাষ্ট্রেও একজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। চীনের উহান শহর থেকে ম্যাকাও যাওয়া একজন পর্যটকের দেহেও এই ভাইরাস পাওয়া গেছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে উহান থেকে ফেরা এক ব্যক্তিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে পরীক্ষা করা হয়। তবে তার শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া যায়নি। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের উপ-পরিচালক লি বিন বলেন, করোনা ভাইরাসের উৎস এবং এটি কিভাবে ছড়িয়ে পড়ে তা জানতে গবেষণার পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। ২০০২-০৩ সালে সার্স ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে প্রায় ৮০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল। ওই সময় প্রাদুর্ভাবের বিভিন্ন তথ্য গোপন করেছিল চীনের কমিউনিস্ট সরকার। কিন্তু এবার জনগণের উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আক্রন্তের সংখ্যার প্রতিদিনের হালনাগাদ দিচ্ছে তারা। বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনে কর্তৃপক্ষ বুধবার পর্যন্ত ৫৭১ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা ও ১৭ জনের মৃত্যু হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। এর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী আরও আটজনের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত চারজনকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে থাইল্যান্ড, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের প্রত্যেকে একজন করে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে।
×