নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ২২ জানুয়ারি ॥ ওসির সামনে ধর্ষণ মামলার সাক্ষীকে মারধরের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনার প্রধান আসামি মালিগাছা ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরীফের ছোট ভাই আরিফ এখনও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ঘটনায় পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীমা আক্তার মিলিকে প্রধান করে ৩ সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটি এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।
পাবনা সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মঙ্গলবার রাতে পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ মামলার সাক্ষী আলিমকে মারধরের ঘটনায় মিরাজুল ইসলামকে এবং এক মাস আগে দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলার আসামি ফিরোজ প্রামাণিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে এই ঘটনায় চারজন গ্রেফতার হলো। জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর রাতে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রামের মোঃ পাঞ্জাব প্রামাণিকের ছেলে ফিরোজ প্রামাণিক তার সহযোগীরা মালিগাছা ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের একটি বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে এক যুবতীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে ধর্ষক ফিরোজকে আটক করে। তবে অন্যরা পালিয়ে যায়। এদিকে ধর্ষক ফিরোজকে আটকের পর ধর্ষকের বাবাসহ মালিগাছা ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফের সন্ত্রাসী বাহিনী ধর্ষক ফিরোজকে ছাড়িয়ে নিতে ধর্ষিতার বাড়িতে উপস্থিত হয়। এ সময় চেয়ারম্যান শরীফ ধর্ষককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার কথা বলে ফিরোজকে নিজ জিম্মায় নেয়। ধর্ষিতার বাবা সন্ত্রাসী বাহিনীর চাপের মুখে চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফের কাছে ফিরোজকে হস্তান্তর করেন। চেয়ারম্যান ধর্ষক ফিরোজকে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনা জানতে পেরে ধর্ষিতা পরের দিন ২১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৭টায় নিজে ধর্ষকের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বিচার দাবি করে। এ সময় ধর্ষক ফিরোজসহ চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী ধর্ষিতাকে বেধড়ক মারপিট করে। ধর্ষিতাকে মারপিট করার পূর্বে সন্ত্রাসীরা তাকে আবারও গণধর্ষণ করে। পরে সন্ত্রাসীরা ধর্ষিতাকে মৃত ভেবে ধর্ষিতার বাড়ির এলাকার ফাঁকা জায়গায় ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা ধর্ষিতাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে ২১ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফসহ ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় ৯ (১) ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন ২০০৩ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই মামলায় তিন আসামিকে গ্রেফতার করে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: