ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অধিক ফলনের আশায় উত্তরাঞ্চলে আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষীরা

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ২৩ জানুয়ারি ২০২০

 অধিক ফলনের আশায় উত্তরাঞ্চলে আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষীরা

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ আগামী মধুমাসে আমের ফলন বাড়াতে এখন থেকেই আমের রাজধানী খ্যাত উত্তরের নওগাঁ জেলার পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় বাগানে বাগানে আমচাষীরা এখন বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে তারা কীটনাশক দোকান থেকে কীটনাশক সংগ্রহ করে অতিরিক্ত মজুরি দিয়ে হলেও তারা আম গাছে কীটনাশক স্প্রে-করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগেরদিনে দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছিল আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত। বর্তমানে পর পর কয়েকবছর ধরে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আম বহির্বিশ্বসহ দেশের রাজধানী এবং প্রায় প্রতিটি জেলায় সুনামের সঙ্গে স্থান করে নেয়ায় দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ এক নামে এখন সাপাহার উপজেলাকে চিনে ও জানে। আমের সিজন আসলেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা সাপাহারে এসে ভিড় জমায়। গতবছর আমের মৌসুমে শুধু সাপাহার উপজেলা সদরে অবস্থিত আড়াই শতাধিক আমের আড়ত থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকার আম বিক্রি হয়েছে বলে আম আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্রী কার্তিক সাহা জানিয়েছেন। উপজেলা সদরের আমবাগান মালিক সাংবাদিক তছলিম উদ্দীন, পিছল ডাঙ্গা গ্রামের দেলোয়ার হোসেন, জবই গ্রামের শাহজাহান আলীসহ একাধিক আমবাগান মালিকরা জানান, সাপাহার উপজেলার সব জায়গার মাটি আম চাষের উপযোগী। এজন্য এখানকার কৃষককুল ধানের বদলে আমচাষে ঝুঁকে পড়েছেন। তাছাড়া এখানকার জমি অপেক্ষাকৃত উঁচু ও অসমতল। সেচ সঙ্কট প্রবল। বর্তমানে এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকার ধান বিক্রি করতে পারা যায়। পক্ষান্তরে ওই এক বিঘা জমিতে আম চাষ করে কমপক্ষে ১ লাখ টাকার আম বিক্রি করা যায়। তফাৎটি আকাশ পাতাল ব্যবধান হওয়ায় এখানকার কৃষকরা এখন আম চাষে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলায় যে লোকের ১০ শতাংশ জমি রয়েছে, সেও তার ওইটুকু জমিতে কয়েকটি আম গাছ লাগিয়েছেন। বর্তমানে সাপাহারে কোন অচেনা ব্যক্তি আসলে চারিদিকে চোখে পড়বে শুধু আমের বাগান আর বাগান। গেল বছর উপজেলায় ৬ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর এর পরিধি আরও ব্যাপকতা লাভ করে এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে উন্নীত হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি দফতর থেকে জানা গেছে। পর পর কয়েকবছর ধরে এলাকায় আম চাষে এক বিপ্লব ঘটে। সরকারের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি ইতোমধ্যেই এই উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা নির্ধারণসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। উপজেলাসহ আশপাশের আমচাষীরা অচিরেই এখানে একটি অত্যাধুনিক আম সংরক্ষণাগার ও জুস জেলি তৈরির কারখানা স্থাপনের জন্য সরকার ও দেশের বিত্তবানদের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
×