সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের সম্মানজনক অবস্থান দৃশ্যমান। দক্ষিণ এশিয়ায় একেবারে শীর্ষে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ২০২০ সালে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৫৩টি দেশের মধ্যে ৫০তম। নারী-পুরুষের ফারাক অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কমে যাওয়ার বাস্তবতা সবাইকে মুগ্ধ করছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো শিল্পোন্নত পরাশক্তিও বাংলাদেশের পেছনে। দক্ষিণ এশিয়ার ভারতের অবস্থান বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাতারে ১১২তম। উন্নয়নের নিরন্তর অগ্রগামিতার বাংলাদেশ সফলভাবে লিঙ্গ বৈষম্যকে উত্তরণ করতে সময়োপযোগী যে কর্ম প্রকল্প সম্প্রসারিত করে সেটাই সংশ্লিষ্টদের জীবনমান উন্নয়নে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। শিক্ষা সম্প্রসারণে বাংলাদেশ এগিয়েছে একেবারে বিশ্ব কাতারে। প্রাইমারী, জুনিয়র ও মাধ্যমিক শিক্ষায় ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে যাচ্ছে প্রায় সমানতালে। আধিপত্যও বিশ্ব প্রতিবেদনে নন্দিত হয়েছে। উঠে এসেছে সূচকের প্রথম স্থানে। বিশ্ব সভায় প্রশংসিত এমন অগ্রগামিতা বাংলাদেশের সার্বিক জনগোষ্ঠীর জন্য অনন্য উপহার। এমন নজির পিছিয়ে পড়া অন্য অনেকের জন্য উদ্দীপকের ভূমিকায় থাকবে। তৃণমূল থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সেভাবে এগুতে পারেনি। অবশ্য বৈশ্বিক অবস্থায়ও নারীর রাজনৈতিক কর্তৃত্বের নজির খুব বেশি নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য এখনও সেভাবে কমেনি। বিশেষ করে কৃষি, শিল্প, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে নির্মাণ শ্রমিকদের বেতনের ফারাক দৃশ্যমান। এখন থেকেও দেশকে অগ্রগামিতার সফল সূচকে নিয়ে যেতে হবে। বিশ্ব প্রতিবেদনটি উল্লেখ করে। বাংলাদেশ নারী-পুরুষের বৈষম্যকে ৭০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পেরেছে। তবে অধিকার এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে নারীর ক্ষমতা সেভাবে বাড়েনি। এখানে এখনও পুরুষের আধিপত্য প্রতীয়মান। সম্পত্তির মালিকানায় নারীদের পিছিয়ে পড়ার তথ্যও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ২০১৭ সাল থেকেই বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় লিঙ্গ বৈষম্যকে নিরসনকল্পে বিশ্বে তার অবস্থান নিশ্চিত করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবাইকে টপকে শীর্ষ অবস্থানে নিজের কর্মপ্রক্রিয়াকে সমতাভিত্তিক সমাজ তৈরিতে প্রথম স্থানে নিয়ে আসে। নারীর ক্ষমতায়নে অর্ধাংশ পিছিয়ে পড়া এই গোষ্ঠীর ব্যাপারে সরকারের বিশেষ কর্মসূচী প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পার্থক্যের তারতম্য কমতে শুরু করে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় আগামী দশ বছরে স্বপ্নের বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট গন্তব্য আরও গতিশীল হবে, এমন প্রত্যাশা থাকবে বাংলার ঘরে ঘরে।
শীর্ষ সংবাদ: