ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম গণহত্যার নির্দেশদাতাদেরও বিচার করা উচিত ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৯:৫৫, ২২ জানুয়ারি ২০২০

  চট্টগ্রাম গণহত্যার নির্দেশদাতাদেরও বিচার করা  উচিত ॥  তথ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ চট্টগ্রামে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি গণহত্যার বিচার হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, তবে তখন ঢাকা থেকে যারা ওই হামলা পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তদন্ত করে তাদের বিচার করা উচিত। মঙ্গলবার সচিবালয়ের তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির নবনির্বাচিত পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে জনসভা করার জন্য চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে গাড়ি বহর নিয়ে আসছিলেন। সেই গাড়ি বহরের সামনে একটি মিছিল ছিল, সেই মিছিলে আমি ছিলাম। আমরা যখন কোতোয়ালির মোড় অতিক্রম শুরু করি তখন থেকে গুলি শুরু হয়। নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। তথ্যমন্ত্রী বলেন, যদিও নিহতের সংখ্যা বলা হচ্ছে ২৪, কিন্তু এ সংখ্যাটা আরও বেশি। কারণ সেদিন অনেক লাশ গুম করে ফেলা হয়েছিল। আমাদের হিসাব মতে, সেটি অবশ্যই ৩০ জনের বেশি। কারও কারও মতে, সেটি ৩৬। কিন্তু অনেক লাশ গুম করে ফেলার কারণে সংখ্যা কমে এসেছে। ৩২ বছর পর এ হত্যা মামলার রায় হয়েছে। এ জন্য অবশ্যই আমরা সন্তুষ্ট। হাছান মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি এ গণহত্যা চালানোর জন্য ঢাকা থেকে যারা নির্দেশ দিয়েছিল তাদেরও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। এই যে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরের মিছিলে গুলি, তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে ১৯ বছর আগে সিপিপি’র সমাবেশে যেভাবে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, সে ঘটনারও যে বিচার হয়েছে এ জন্য সন্তোষ প্রকাশ করছি। ২৪ জানুয়ারির হামলা ও সিপিবির সমাবেশে হামলা গণতান্ত্রিক শক্তিকে এবং প্রগতিশীল শক্তিকে ধ্বংস করার জন্যই এসব হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, যারা এ হামলা করেছিল, তাদের উত্তরসূরিরা কিন্তু এখনও সক্রিয়। আমাদের এ জন্য এখনও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। ১৯৮৮ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় ছিলেন। তাহলে এটা তার নির্দেশে হয়েছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা থেকে এ রকম নির্দেশ না থাকলে চট্টগ্রামে পুলিশ প্রশাসন এভাবে দেশের বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের সভাপতির মিছিলে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চালাতে পারে না। সুতরাং তখন যারা ক্ষমতায় ছিল নিশ্চয় তাদের পক্ষ থেকেই নির্দেশটা এসেছিল। কিন্তু কে নির্দেশ দিয়েছিল সেটি এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। সেটি তদন্তের বিষয়। কিন্তু তদন্ত করে যারা নির্দেশ দিয়েছিল তাদেরও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তারা তো আপনাদের মহাজোটেরই অংশ, এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের কোন মহাজোট নেই। আগে মহাজোট ছিল। উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের আমলে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা মামলার রায়ে পাঁচজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। ঘটনার ৩২ বছর পূর্ণ হওয়ার চারদিন আগে সোমবার (২০ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ (ভারপ্রাপ্ত) ইসমাইল হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
×