ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নন-ক্যাডার ৮ম ও তদুর্ধ গ্রেডে নিয়োগে কোটা থাকছে না

প্রকাশিত: ১০:২৬, ২১ জানুয়ারি ২০২০

 নন-ক্যাডার ৮ম ও তদুর্ধ গ্রেডে নিয়োগে কোটা থাকছে না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নন-ক্যাডার ৮ম ও এর উপরের গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে আর কোটা পদ্ধতি থাকছে না। সোমবার নন-ক্যাডার ৮ম ও তদুর্ধ গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বণ্টন পদ্ধতি সংক্রান্ত পরিপত্র সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া ২০১৯ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ছিল ৭৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০১৯ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এই অনুমোদনের কথা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পিএসসি গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি ৮ম ও তদুর্ধ গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে নাকি আগের কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে, তা স্পষ্ট করার অনুরোধ জানিয়েছিল। কোটা বাতিলের পরিপত্রে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগে কোটা না রাখার বিষয়টির উল্লেখ থাকলেও ৮ম-১ম গ্রেডে নিয়োগে কোটার বিষয়ে কিছু বলা ছিল না। তিনি বলেন, পরিপত্র সংশোধনের পর ৮ম গ্রেড থেকে এর উপরের অর্থাৎ ১ম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন কোটা থাকবে না। কোটা বাতিলের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের স্পষ্টকরণের জন্য বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন (পিএসসি) প্রস্তাব পাঠালে সেই প্রস্তাব অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন সচিবালয় থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি নন-ক্যাডার ৮ম ও তদুর্ধ গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে নাকি আগের কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে, এ বিষয়টি স্পষ্টকরণের জন্য অনুরোধ করা হয়। তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে। সেখানে বলা হয়, ৯ম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণী) এবং ১০ম থেকে ১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণী) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হবে। ৯ম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণী) পদে সরকারী নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো। তিনি আরও বলেন, পরিপত্রে ৯ম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণী) এবং ১০ম থেকে ১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণী) পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলেও আগের ১ম শ্রেণীভুক্ত ৮ম ও তদুর্ধ গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বণ্টন পদ্ধতি কী হবে সে বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন ৯ম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড ছাড়াও ৮ম ও তদুর্ধ গ্রেডের কোন কোন পদে সরাসরি নিয়োগ দিয়ে থাকে। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এ শ্রেণীর পরিবর্তে গ্রেড উল্লেখ করা হয়েছে এবং আগের ১ম শ্রেণীর পদ বলতে ৯ম ও তদুর্ধ গ্রেডের পদকে বোঝানো হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে ‘৯ম গ্রেড’ এর স্থলে ‘৯ম ও তদুর্ধ গ্রেড’ উল্লেখ করে পরিপত্রটির সংশোধন প্রয়োজন বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে ৯ম থেকে যত উপরের দিকের যাক সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন কোটা পদ্ধতি থাকবে না। বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের ক্ষতি পূরণ বৃদ্ধির প্রস্তাব মন্ত্রীসভায় অনুমোদন মন্ত্রিসভা সোমবার বিমান দুর্ঘটনায় কোন ব্যক্তির মৃত্যুু বা আঘাত জনিত ক্ষতিপূরণের অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ১.১৭ কোটি টাকা করার প্রস্তাবসহ ‘আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) আইন, ২০২০’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। নতুন আইনে প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ দেশী টাকায় ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬শ’ টাকা (প্রায়) থেকে বাড়িয়ে এক কোটি সতেরো লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা (প্রায়) করা হয়েছে। আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন প্রদান করা হয়। মন্ত্রিসভার বৈঠকের বিষয়ে পরে বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের অবহিতকরণকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিসভা আকাশ পথের যাত্রীদের সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে মন্ট্রিল কনভেনশন-১৯৯৯ এর আলোকে এই আইনটির খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, মন্ট্রিল কনভেনশনটি অনুস্বাক্ষর এবং যাত্রীর মৃত্যু, আঘাত ও মালামাল নষ্ট/ হারানোর ক্ষতিপূরণ প্রদান সহজীকরণের জন্য মন্ট্রিল কনভেনশনের আলোকে আকাশ পথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন-১৯৯৯) আইন, ২০২০-এর খসড়াটি প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আইনটি প্রণীত হলে হলে যাত্রীর মৃত্যু/আঘাত, ব্যাগেজ ও কার্গো ক্ষতি/হারানোর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের হার পূর্বের থেকে অনেক বৃদ্ধি পাবে। এ সংক্রান্ত আইনটি প্রণীত না হওয়ায় ২০১৭ সালে নেপাল বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা নামমাত্র ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সচিব বলেন, পুরাতন আইনে (ওয়ারশ কনভেনশন) মৃত্যু বা আঘাত জনিত ক্ষতিপূরণের হার ছিল ২৫ লাখ ফ্রাঙ্ক বা বাংলাদেশী মুদ্রয় ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬শ’ টাকা প্রায়। নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ মিলবে এক লাখ এসডিআর বা ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৪ মার্কিন ডলার। যা দেশী মুদ্রায় প্রায় এক কোটি সতেরো লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা হবে। ফ্লাইট বিলম্বের কারণে পরিবহনকারীর দায় হবে এক হাজার এসডিআর বা ৫ হাজার ৭৩৪ মার্কিন ডলার। যা অতীতে ২০ ডলার ছিল। ব্যাগেজ হারানো বা বিনষ্টের জন্য অতীতের দায় ২০ মার্কিন ডলার পার কেজি থেকে বেড়ে এক হাজার এসডিআর বা এক হাজার ৩৮১ ডলার পার কেজি হবে। এছাড়া কার্গো বিনষ্ট বা হারানোর জন্য ২০ ডলার পার কেজি থেকে নতুন আইনে ক্ষতিপূরণের অংশ বেড়ে ১৭ এসডিআর বা ২৪ ডলার পার কেজি হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যাত্রীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে, যাত্রীর সম্পত্তির বৈধ প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে এই আইনের বিধানাবলী মোতাবেক ক্ষতিপূরণের অর্থ ভাগ করা যাবে। সংশ্লিষ্ট উড়োজাহাজের পক্ষ/বিমাকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে অথবা আদালতের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে।
×