ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ময়মনসিংহ নগরবাসী জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ২১ জানুয়ারি ২০২০

ময়মনসিংহ নগরবাসী জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ খনন ও উচ্ছেদ না করায় নগরীর সেহরা, মাকড়জানি ও কাটাখালি- ৩টি প্রধান খালই এখন ময়লা-আবর্জনা জমে ভরাটসহ বেশিরভাগ জায়গা জবরদখল হয়ে গেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে নগরীতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে নগরবাসী। সমস্যা সমাধানে নানা উদ্যোগের কথা জানালেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু। ইতোমধ্যে নগরীর একাংশে আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপ বসিয়ে এর পানি পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলা হচ্ছে। তবে নগরীর দক্ষিণ ও পশ্চিমাংশের পানি নিষ্কাশনে খাল খননের পাশাপাশি খালের ওপর থেকে অবৈধ জবরদখলদের উচ্ছেদ কার্যক্রম হাতে নেয়ার কথা জানান সিটি মেয়র। স্থানীয় সূত্র জানায় নগরীর মালগুদাম, সেহরা মুন্সিবাড়ি, চামড়াগুদাম, চরপাড়া মোড়, নয়াপাড়া, মাসকান্দা ও দীঘারকান্দা হয়ে সেহরা খালটি মিশেছে নগরীর দক্ষিণাংশের পাগারিয়া নদীতে। আবার পাগারিয়া খালের প্রবাহ মিশেছে পুরনো ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে। নগরীর বাঘমারা ও কৃষ্টপুর এলাকার পানিও নিষ্কাশিত হয়ে থাকে সেহরা খালে। কিন্তু সেহরা খালের চরপাড়া মোড়, নয়াপাড়া, মাসকান্দা ও দীঘারকান্দা অংশের বেশিরভাগ জবরদখল হয়ে গেছে। খালের গাইড দেয়ালের ওপর অনেকে নির্মাণ করেছেন বহুতল স্থাপনা। অনেক জায়গা জবরদখলের কারণে সঙ্কুচিত ও সরু হয়ে গেছে। খননের অভাবে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে ভরাট হয়ে গেছে পুরো খাল। জবরদখল ও ভরাটের কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতে খাল উপচে পানির প্রবাহ ছড়াচ্ছে সড়কের ওপর। আর ভারি বর্ষণ হলে তো কথাই নেই। খালের ময়লাযুক্ত পানি ঢুকে পড়ে নগরীর বাসাবাড়িতে। একই অবস্থা মাকড়জানি ও কাটাখালি খালের। গুরুত্বপূর্ণ মাকড়জানি খালটি নগরীর রামবাবু রোড ও বিদ্যাময়ী স্কুলের পাশ থেকে নতুন বাজার লেভেল ক্রসিং, সুইপার কলোনি, নওমহল, আকুয়া ও দীঘারকান্দা হয়ে মিশেছে দক্ষিণের পাগারিয়া নদীতে। ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে এই খালেরও এখন মরণদশা। দখল আর ভরাট দূষণে অনেক জায়গায় খালের অস্তিত্বই নেই। কাটাখালি খাল ভরাটের কারণে কলেজ রোড ও আউটার স্টেডিয়াম এলাকার বেশিরভাগ বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় গৃহবন্দী হয়ে পড়েন নগরবাসী। আউটার স্টেডিয়াম এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সেলিম সাজ্জাদ অভিযোগ করে জানান, সিটি কর্পোরেশনের গাফিলতির কারণেই প্রতি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। এসব এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণে প্রকল্প গ্রহণে মাস্টারপ্ল্যান করার কথা জানান সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী উপসচিব আনোয়ার হোসেন। নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের ৩টি খাল জবরদখল মুক্ত করতে উচ্ছেদ ও খননসহ বিউটিফিকেশন করার পরিকল্পনা রয়েছে নয়া মাস্টারপ্ল্যানে। মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন হলেও শুরু হবে উচ্ছেদ ও খননের কাজ। দখল- দূষণ ঠেকাতে এসব খালের পানির প্রবাহ বাড়িয়ে লেকের সৌন্দর্য বর্ধন করা হবে বলে জানান সিটি কর্পোরেশনের এই কর্মকর্তা। এদিকে নগরীর ব্রহ্মপুত্র লাগোয়া গাঙিনাপাড়, দুর্গাবাড়ি রোড, মহারাজা রোড, স্টেশন রোডসহ আশপাশ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপ বসানো হয়েছে। নগরবাসী ইতোমধ্যে এর সুফল পাচ্ছে। আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপলাইন স্থাপনের মাধ্যমে এসব এলাকার পানি ফেলা হচ্ছে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে। ফলে বৃষ্টির পর দ্রুত সময়ে পানি নেমে যাওয়ায় কমে গেছে ভোগান্তি। নগরবিদরা জানান, পুরো ময়মনসিংহ সিটিকে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা হলে নগরবাসীর ভোগান্তি থাকবে না।
×