ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনায় কওমি মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের মামলা

প্রকাশিত: ০৩:২৯, ২০ জানুয়ারি ২০২০

নেত্রকোনায় কওমি মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের মামলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ কওমি মাদ্রাসার এক সুপারের বিরুদ্ধে ওই মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে কেন্দুয়া থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। রবিবার রাতে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপারের নাম আব্দুল হালিম ওরফে সাগর(৩৫)। তিনি কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের চর-আমতলা কোনাবাড়ি গ্রামের ফারুখ মিয়ার ছেলে এবং দুই সন্তানের পিতা। এদিকে ধর্ষণের পর অন্তসত্ত্বা হওয়া ছাত্রীটি(১১) কবিরাজি ওষুধ খেয়ে গুরু গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পর তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, আব্দুল হালিম ওরফে সাগর রোয়াইলবাড়ি বাজারের কাছে ‘রোয়াইলবাড়ি আশরাফুল উলুম জান্নাতুল মাওয়া’ নামে একটি কওমি মাদ্রাসা পরিচালনা করেন। তিনি ওই মাদ্রাসার সুপার। বিভিন্ন এলাকার ১০-১৫ জন ছাত্রী ওই মাদ্রাসার বোর্ডিংয়ে থেকে লেখাপড়া করে। প্রায় তিন-সাড়ে তিন মাস আগে সুপার আব্দুল হালিম গাড়াদিয়া গ্রামের এক ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ওই ছাত্রীর বাবা মাদ্রাসাটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি। কিন্তু লজ্জায় মেয়েটি ধর্ষণের ঘটনাটি গোপন রাখে। ওই ঘটনার কিছুদিন পর মেয়েটির মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ হয়ে যায়। তখন ওই ছাত্রী বিষয়টি সুপার আব্দুল হালিমকে জানায়। আব্দুল হালিম গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে কলার ভিতর কবিরাজি ওষুধ পুরে তা খেতে দেন। বাড়িতে যাওয়ার পর ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার যৌনাঙ্গ দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তখন তার বোন ও পরিবারের অন্যান্য স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদের পর মেয়েটি প্রকৃত ঘটনা খুলে বলে। ফলে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর সুপার আব্দুল হালিম বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আর্থিক লেন-দেনের মাধ্যমে মিমাংসার চেষ্টা চালান। অসুস্থ ছাত্রীটিকে অন্য এলাকায় সরিয়ে নিয়ে গ্রাম্য ডাক্তারের মাধ্যমে চিকিৎসা করান। কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মেয়েটির বাবা কেন্দুয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রবিবার রাতে মামলা রেকর্ড করা হয়। এছাড়া অসুস্থ ছাত্রীকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বজনরা জানান, মেয়েটির অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। কেন্দুয়া থানার ওসি রাশেদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ প্রাপ্তির পরপরই আসামী আব্দুল হালিমকে গ্রেফতারের জন্য এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তিনি আত্মগোপন করে আছেন। তাকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে। এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহজাহান মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ছাত্রীর অভিভাবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
×