ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে নিন্ম মানের দল নিয়ে অসন্তোষ

প্রকাশিত: ১২:০০, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে নিন্ম মানের দল নিয়ে অসন্তোষ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসর চলছে। ১৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ-ফিলিস্তিন ম্যাচ দিয়ে আসরের পর্দা উঠেছে। প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনের কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়েছে। মাঠের পারফর্মেন্স যেমন হতাশ করেছে সমর্থক থেকে বোদ্ধাদের। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এই টুর্নামেন্ট যার মধ্য দিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে মুজিববর্ষের সূচনা হয়েছে। অথচ মর্যাদার এমন আসরেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি। নিম্নমানের দল এনে আগেই টুর্নামেন্টের জৌলুস নষ্ট করা হয়েছে। জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা বলে দর্শকদের ধোঁকা দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। টুর্নামেন্টের সাদামাটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছে। প্রচার-প্রচারণা থেকে র‌্যালি আয়োজন সবখানেই অবহেলার ছাপ ছিল সুস্পষ্ট। এ যেন বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির পাঁয়তারা। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আয়োজন থেকে দল নির্বাচন, র‌্যালি থেকে জাতীয় দলের পারফর্মেন্স- এসব বিষয় নিয়ে গতকাল গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। তার কথায় আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু না থাকলে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে কোন ভূখ- থাকত না। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২০২০ সাল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। ফুটবলের প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট দিয়ে জন্মশতবার্ষিকী কার্যক্রমের শুরু। এমন টুর্নামেন্টে নিম্নমানের, অপরিচিত দল এনে দায়সারা আয়োজন সত্যিই হতাশাজনক। এত তাড়াহুড়ো করে টুর্নামেন্ট আয়োজনের কারণ কী? দায়সারা টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বাফুফে নির্দিষ্ট কোন উদ্দেশ্য সাধন করতে চায়- প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন রুহুল আমিন। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট’ দেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় আয়োজন। বাফুফে আয়োজনে অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। অথচ চট্টগ্রাম আবাহনী সাধারণ একটি ক্লাব। এই ক্লাব ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ’ আয়োজন করে দেশব্যাপী আলোড়নের সৃষ্টি করেছে। মরা ফুটবলে প্রাণের সঞ্চার করেছে। ফুটবলবিমুখ দর্শককদের মাঠে ফিরিয়ে এনেছে। গত বছরের শেষের দিকে আমরা শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছি। একটি সফল আয়োজন ছিল সেটি। গ্যালারি ছিল দর্শকপূর্ণ। উন্নতমানের ক্লাবগুলো খেলে গেছে। ফুটবলের মানও ছিল বেশ উন্নত। একটি ক্লাব (চট্টগ্রাম আবাহনী) যদি এমন চমৎকার আয়োজন করতে পারে তাহলে বাফুফে কেন হাস্যকর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টকে আয়োজন করছে কারও বোধগম্য নয়।। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে একটি র‌্যালির আয়োজন করে বাফুফে। দুটি ঘোড়ার গাড়ি, সামনে একটি ব্যানার আর নিজেদের কিছু লোকবল নিয়ে বাফুফে ভবনের গলিতে সাধারণমানের এক র‌্যালি আয়োজন করে বাফুফে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর লোগো সংবলিত ব্যানার থাকলে জাতির জনকের বড় কোন পোস্টার ছিল না। সেখানে ছিলেন না কোন ক্লাব সংগঠক কিংবা সাবেক ফুটবলার। রুহুল আমিন বলেন, শুরুর আগে আমরা দেখলাম বাফুফে একটি র‌্যালির আয়োজন করেছে। যে র‌্যালিতে জেলা, বিভাগ, ক্লাব ফুটবলের কর্তারা কেউ ছিলেন না। দায়সারাভাবে র‌্যালি করে বাফুফে আসলে কি বোঝাতে চাইছে তা অস্পস্ট। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে মানহীন দল এনেও প্রথম ম্যাচে জয়ের মুখ দেখতে পারিনি বাংলাদেশ। বাফুফে থেকে বলা হচ্ছে ফিলিস্তিন র‌্যাঙ্কিংয়ের ওপরের সারির দল। কিন্তু যে দলটির কথা বলা হচ্ছে অর্থাৎ জাতীয় দল সেই দলটি এবারের টুর্নামেন্টে খেলতে আসেনি। গোল্ডকাপে অংশ নেয়া ফিলিস্তিন জাতীয় দলে খেলে এমন খেলোয়াড়ের সংখ্যা মাত্র ৬ জন। বাকিরা বয়সভিত্তিক এবং ঘরোয়া লীগে খেলেন এমন খেলোয়াড়। এমন সময় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজন করা হয়েছে যখন জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা এসএ গেমস, ফেডারেশন কাপ খেলে মোটামুটি ক্লান্তই। মাঠের পারফর্মেন্সে খেলোয়াড়দের ক্লান্তির ছাপ দেখা গেছে। জাতীয় দলের প্রস্তুতিও ঠিকমতো হয়নি। গোল্ডকাপ শুরুর মাত্র ৭দিন আগে কোচ জেমি ডে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন। সামনে বাফুফের নির্বাচন। তা নিয়েই মহাব্যস্ত বাফুফের কর্তারা। মাঠে একটা নামকাওয়াস্তের টুর্নামেন্ট শুরু করে দিয়েছে কাপ জেতার লক্ষ্যে। অথচ এই নিম্নমানের দলের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে হোঁচট খেয়েছে। এখন ভাগ্যে কি আছে সময় ভাল বলতে পারবে। শুক্রবার শেষ হয়েছে বঙ্গবন্ধু বিপিএল ক্রিকেট । যার উদ্বোধনী থেকে সমাপনী অনুষ্ঠানে ছিল দারুণ চমক। ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখেও তো শেখা উচিত ছিল বাফুফের।
×