ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাগরিক সেবা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থীর

প্রকাশিত: ১১:১২, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

নাগরিক সেবা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচিত হলে নাগরিক সেবা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী। শনিবার দিনভর প্রচারকালে তারা এই অঙ্গীকার করেন। সকালে খিলগাঁও তালতলায় নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোটারদের কাছে গণসংযোগকালে কারচুপির জন্যই ইভিএমে ভোট নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেন, আমাদের ইভিএম বন্ধের দাবি যৌক্তিক। ইভিএম বন্ধের জন্য সংলাপ চাই। দুপুরে পুরান ঢাকার ইসলামপুরে গণসংযোগকালে দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক বলেন, নির্বাচিত হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন বেগবান করব। সকাল সাড়ে দশটায় উত্তরের ২৩নং ওয়ার্ডের খিলগাঁও তালতলা মার্কেট থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন তাবিথ আউয়াল। পরে ২২, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ডের মহল্লায় মহল্লায় গণসংযোগ করেন। এ সময় বিভিন্ন পথসভায় তিনি কয়েক দফা বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের বক্তব্যে ইভিএম নিয়ে আমাদের যে শঙ্কা সেটি প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জাল ভোট ঠেকাতে প্রস্তুত রয়েছে কি না এটিই এখন ভোটারদের প্রশ্ন। তাবিথ আউয়াল বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার শুক্রবার স্পষ্ট করেই বলেছেন কেন্দ্র দখল করা গেলে ইভিএমে জাল ভোট দেয়া যাবে। তার এই বক্তব্যের পর ইভিএম নিয়ে আমাদের বক্তব্য সত্য প্রমাণিত হওয়ায়, আশঙ্কা আরও বেড়েছে। কারণ, ক্ষমতাসীনরা কেন্দ্র দখল করতে চাইলে নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা ঠেকানোর চেষ্টা করবে না। তিনি বলেন, জনগণ ভোট দিতে চায়, ভোট দেয়ার পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তাবিথ বলেন, ভোটারদের মধ্যে কিছুটা ভয়-ভীতি কাজ করছে ঠিকই কিন্তু এবার তারা সব ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ভোটাররা চায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে। তিনি বলেন, সব ভোট কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় নিরাত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটাররা আমাদের জানিয়েছেন যত বাধাই আসুক না কেন তারা সব মোকাবেলা করে কেন্দ্রে যাবেন, ভোট দেবেন। ভোট কেন্দ্রে আমরা থাকব, নেতাকর্মীরা থাকবে, এবার জনগণও থাকবে। আমাদের ওপর প্রতিপক্ষ হামলা করলেও আমরা শক্ত অবস্থানে থাকব। ভয়-ভীতি আমাদের কাবু করতে পারবে না। তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্ত একটি সিটি কর্পোরেশন উপহার দিতে পারব। তিনি বলেন, মেয়র ও কাউন্সিলর সকলকেই জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতে হবে। তাহলেই মানুষের সেবা নিশ্চিত হবে। পার্ক, খেলার মাঠ, ফুটপাথ দখলমুক্ত রাখতে হবে। শুধু প্রতিশ্রুতি দিলেই হবে না, কাজ করতে হবে। আমরা দায়িত্ব পেলে কাজ করে দেখিয়ে দিতে চাই। তাবিথ বলেন, দেশের মানুষের গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে। এখন জনগণ ভোট দিতে পারে না। এবার বিএনপির নেতাকর্মীরা ভোটারদের সাহস জোগাবে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যেতে আর ভোটাররা যাতে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দিতে পারে সে সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, ইসির ওপর মানুষের আস্থা নেই। তারা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এরপরও আমরা দেখতে চাই নির্বাচন কমিশন কি করে ভোট সুষ্ঠু হলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত। তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে গণসংযোগে আরও অংশ নেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন, নিপুণ রায় চৌধুরী, আকরামুল হাসান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ। এদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও তাবিথ আউয়ালের বাবা আবদুল আউয়াল মিন্টু শনিবার বেলা এগারোটায় স্কলাস্টিকা স্কুলসংলগ্ন এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ করেন। এ ছাড়া তাবিথ আউয়ালের মা নাসরিন আউয়াল মিন্টু ১৭নং ওয়ার্ডের খিলক্ষেত ও কুড়িল কাজীবাড়ী এলাকায় গণসংযোগ করেন। দুপুর বারোটায় পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে ভোটারদের সঙ্গে গণসংযোগ শুরু করেন দক্ষিণের বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক। পরে তিনি ইসলামপুর, ৩২ ও ৩৩ নং ওয়ার্ড ও বংশাল থানা এলাকায় গণসংযোগ করেন। মেয়র নির্বাচিত হলে নগরবাসীর নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে আধুনিক ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন ইশরাক । ইশরাক বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ময়লা আবর্জনার স্তূপ, সেখান থেকে মশা-মাছির বিস্তার ঘটছে। এতে নানা রকম রোগজীবাণু সৃষ্টি হচ্ছে। নির্বাচিত হলে এসব সমস্যার সমাধান করে এ শহরকে বাসযোগ্য ঢাকা হিসেবে গড়ে তুলব। তিনি বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে ঢাকা ওয়াসাকে সঙ্গে নিয়ে আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেমের আওতায় নিয়ে আসব। বিশুদ্ধ পানির জন্য ওয়াসার সঙ্গে বসে সঞ্চালন লাইন প্রতিস্থাপন করব। যথাসময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে যথাযোগ্য মানের ওষুধ প্রয়োগ করে এডিস মশার প্রজনন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডেঙ্গু বিস্তার রোধ করব। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির মাধ্যমে আমাদের কাজ সম্পূর্ণ করব। এ সময় ইশরাকের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
×