ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যৌতুক দিতে না পারায় ঘরছাড়া সুখি দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

যৌতুক দিতে না পারায় ঘরছাড়া সুখি দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী, ১৮ জানুয়ারি ॥ সুখি বেগমের (২২) কপালে সুখ সইল না। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় ঘর ভাঙ্গছে তার। গ্রাম্য সালিশে বিচার না পেয়ে নিরুপায় হয়ে এখন দুই শিশু সন্তান নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সুখি বেগমের বাবার নাম ইউনুস মাওন। নাজিরপুর ইউনিয়নের রামনগর তাঁতেরকাঠি গ্রামে তার বাড়ি। সুখি জানায়, ২০১৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের নিজ তাঁতেরকাঠি গ্রামের সানু হাওলাদারের ছেলে রেজাউল করিমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার স্বামীকে নগদ ৩ লাখ টাকা, তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ মালামাল দেয়া হয়। স্বামীর সংসারে সুখে শান্তিতেই ছিলেন তিনি। গত বছর জানুয়ারি মাসে তার স্বামী রেজাউল ব্যবসার নামে তার কাছে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই টাকা দিতে না পারায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে নির্যাতন করতেন তাকে। কেবল ৪ বছরের শিশু সন্তান সুমাইয়ার কথা ভেবে তিনি সব নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করেন। কিন্তু একপর্যায়ে তাকে স্বামীর ঘর ছাড়তে হয়। তখন তিনি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত আগস্ট মাসে তাদের দাম্পত্য কলহ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সালিশ হয়। ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের মধ্যস্থতায় সিদ্ধান্ত হয় সুখি তার স্বামীর সঙ্গেই থাকবেন। এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তার স্বামী রেজাউল করিম ওই দিন কৌশলে সুখিকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তার স্বামী আর খোঁজখবর নেয়নি। এরমধ্যে তার কোলজুড়ে আসে সামিয়া নামের আরেক কন্যা সন্তান। সামিয়ার বয়স তিন মাস। কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার খবরটি তার স্বামীকে জানানো হলে তিনি ক্ষুব্ধ হন। ছেলে না হওয়ার অজুহাত তুলে তাকে ঘরে তুলতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর নিরুপায় হয়ে সুখি পুনরায় ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের শরণাপন্ন হন। তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। সেই অনুযায়ী সুখি ১৫ দিন আগে তার স্বামীর বিরুদ্ধে বাউফল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু এরপরেও তিনি কোন প্রতিকার পাননি। পুলিশ তার অভিযোগটি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। শনিবার সকালে সুখি তার দুই অবুঝ সন্তান নিয়ে বাউফল প্রেসক্লাবে আসেন। সুখি তার স্বামীর বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারের আসায় দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন।
×