ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিলের পানি আটকে ঘের ॥ নিষ্কাশন দাবি

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

বিলের পানি আটকে ঘের ॥ নিষ্কাশন দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ১৮ জানুয়ারি ॥ টেপুর বিলে বোরো আবাদের দাবিতে কৃষকরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্মারকলিপি পেশ করেছে। জেলা প্রশাসক কেশবপুরে এলে তার কাছে বিল সংলগ্ন এলাকার শত শত কৃষক টেপুর বিলের পানি নিষ্কাশনের দাবি জানান। এ সময় জেলা প্রশাসক ঘের মালিককে দিয়ে বিলের মাছের ঘেরের পানি নিষ্কাশন করানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। নির্বাহী অফিসার এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কৃষকদের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বন্যাকবলিত হাসাডাঙ্গা, নাগোরঘোপ, চিনাটোলা, মধ্যকুল, রতনদিয়া, হাবাসপোল গ্রামসহ ৮-১০ গ্রামের সীমান্তবর্তী স্থানে প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমি নিয়ে টেপুরবিল অবস্থিত। এলাকাবাসী ওই বিলের একমাত্র ফসল বোরো ধান উৎপাদন করেন। এসব গ্রামের মানুষ অতিদরিদ্র এবং কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। ১০-১২ বছর আগে ৩০ পৌষের মধ্যে পানি নিষ্কাশন করে কৃষকদের ধান উৎপাদনের সুযোগ করে দেয়ার শর্তে বিলটি লিজ হিসেবে গ্রহণ করেন হাসাডাঙ্গা গ্রামের আবু তালেব মোড়লের ছেলে সুলতান মোড়ল। কিন্তু গত ১৪ জানুয়ারি পানি নিষ্কাশনের সময় শেষ হয়ে গেলেও এখনও বিলে অথৈই পানি রয়েছে। বিল সংলগ্ন এলাকার কৃষকরা এখনও বোরো বীজতলা তৈরি করতে পারেনি। ঘের মলিক পানি নিষ্কাশনের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় এলাকার শত শত কৃষি পরিবার হতাশায় ভুগছেন। জলাবদ্ধতার এ সমস্যা নিরসনে গত ১২ জানুয়ারি এলাকার শহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, প্রদীপ দেবনাথসহ শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি ইউএনও’র কাছে দেয়া হয়। কৃষক শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ওই বিলের উৎপাদিত ধান এলাকার মানুষের সারাবছরের রুটি রুজি। কৃষকরা যখন বিলের পানি নিষ্কাশনের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছেন তখন ওই ঘের মালিক বিলটি বারো মাসের জন্য লিজ নেয়ার জন্য তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রেখেছেন। গত ১৬ জানুয়ারি যশোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউল আলম মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়ির ইউনিয়নের চিংড়া ভূমি অফিস ও কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা পরিদর্শনে আসেন। এ খবর জানতে পেরে টেপুর বিল সংলগ্ন এলাকার শত শত কৃষক উপজেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে ওই বিলের পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়ে আবারও স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক কৃষকদের সমস্যা শুনে রবিবারের মধ্যে ওই ঘের মালিককে ডেকে টেপুর বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদের সুযোগ সৃষ্টির নির্দেশনা প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূসরাত জাহান জানান, অভিযোগ পেয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিলের ঘের মালিক সুলতান মোড়লের ম্যানেজার দীপঙ্কার বলেন, ওই ঘেরের অনেক কৃষক তাদের জমি বারো মাসের জন্য ডিড করে দিয়েছে। কিছু কৃষক তা না মেনে বোরো আবাদের জন্য পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছে। যে কারণে সময়মতো পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিরসনে অচিরেই কৃষকদের নিয়ে বসা হবে।
×