ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

নানামুখী উদ্যোগের প্রভাব দেরিতে পড়ল পুঁজিবাজারে

প্রকাশিত: ০৯:১০, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

নানামুখী উদ্যোগের প্রভাব দেরিতে পড়ল পুঁজিবাজারে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে গত সপ্তাহে নানা উদ্যোগের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে। শুরুতে না হলেও কিছুটা দেরিতে এই উদ্যোগের প্রভাব পড়েছে। তবুও গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস উত্থানে আর দুই কার্যদিবস পতনে লেনদেন হয়েছে। বাড়া-কমার হিসাব শেষে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে বাড়ার চেয়ে বেশি কমেছে সূচক। সপ্তাহটিতে সূচকের সঙ্গে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেনও কমেছে। আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করার কারণে পতনটা ছিল অপ্রত্যাশিত। তবে সেই পতন থামিয়ে গত বৃহস্পতিবার ছাড়া আর বাকি দুই দিনে সূচকের আহামরি উত্থান ছিল না। যার কারণে সার্বিক বিচারে পতন থামলেও গড়ে সূচক কমেছে। গত বৃহস্পতিবারে শেয়ারবাজারে পতনের রাশ টানতে এগিয়ে আসেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ার কেনার নির্দেশ দেন আইন সীমার মধ্য থেকে। এরপর রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক, সোনালী, রূপালী, জনতা ও অগ্রনী ব্যাংকের এমডিরা বৈঠকে শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। মৌখিক নির্দেশনা পাওয়ার পর অগ্রনী ব্যাংক কিছু শেয়ার ওইদিন কিনেছে। চলতি সপ্তাহে এটির আরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জানা গেছে, গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ হাজার ৩২০ কোটি ৭৩ লাখ ৭ হাজার ৯২১ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ২৫৬ কোটি ৩৯ লাখ ৮৮ হাজার ১৬৩ টাকা বা ১৬.২৬ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৫৭৭ কোটি ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪ টাকার। ডিএসইতে গত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ২৬৪ কোটি ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৮৪ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৩১৫ কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ২১৬ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৫১ কোটি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৬৩২ টাকা বা ১৬..২৬ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৭ পয়েন্ট বা ১.১৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৫০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট বা ০.৫৯ শতাংশ এবং সিএসই-৩০ সূচক ০.২২ পয়েন্ট বা ০.০২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৪০ পয়েন্ট ও ১ হাজার ৪০৬ পয়েন্টে। ডিএসইতে চালু হওয়া নতুন সূচক সিডিএসইটি ২ পয়েন্ট বেড়ে ৮৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৫৮টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৬০টি বা ১৭ শতাংশের, কমেছে ২৭৭টির বা ৭৭ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির বা ৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহজুড়ে ৫৫ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৬ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬৫ কোটি ১২ লাখ ৩৮ হাজার ১৩৫ টাকার। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৯ কোটি ৮৭ লাখ ৫৩ হাজার ৫৫৯ টাকা বা ১৫ শতাশ কমেছে। গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬৮ পয়েন্ট বা ১.৩২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৬০০ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসসিএক্স ১০০ পয়েন্ট বা ১.৩০ শতাংশ এবং সিএসআই ১০ পয়েন্ট বা ১.২৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৭ হাজার ৬৩৪ পয়েন্ট এবং ৮০২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ১০৭ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ এবং সিএসই-৫০ সূচক ১ পয়েন্ট বা ০.০৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০ হাজার ৮৬৬ পয়েন্ট এবং ৯২৫ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ২৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের হাত বদল হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৭টির বা ১৫ শতাংশ, দর কমেছে ২৩১টির বা ৭৮ শতাংশ এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির বা ৭ শতাংশ।
×