ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আফগানিস্তানকে পাশ কাটিয়ে নতুন পথে পাক-মার্কিন সম্পর্ক

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

আফগানিস্তানকে পাশ কাটিয়ে নতুন পথে পাক-মার্কিন সম্পর্ক

গত ৪০ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানের সম্পর্কে প্রধান ইস্যু ছিল আফগানিস্তান। যদিও আফগানিস্তানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কিভাবে বা কখন পরিবর্তিত হবে তা ঠিক অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে তার কার্যক্রম হ্রাস করবে এবং ভবিষ্যতে অন্যরকমভাবে জড়িত থাকবে। পাকিস্তানের জন্য এটা উপলব্ধি করা জরুরী যে তালেবান সফল হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে অনেকাংশে দায়ী করবে। দ্য হিল। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বহু ত্যাগ এবং এই অঞ্চলে তাদের নিরাপত্তা উদ্বেগ মূলত ভুলে যেতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামান্য সহানুভূতি নিয়ে পাকিস্তানকে এখনও যারা রয়েছে তাদের পাশাপাশি আরও কয়েক মিলিয়ন শরণার্থীকে সামলাতে হবে। সুতরাং পাকিস্তানকে আহ্বান জানানো উচিত যে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত খলিলজাদ আফগানিস্তানকে আলোচনার টেবিলে আনতে সফল হতে পারেন তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান কি করতে পারে সে সম্বন্ধে তারা গভীরভাবে ভাবুক। পাকিস্তানকে আরও নিশ্চিত করতে হবে যে নতুন আফগান সরকার সেইসব সন্ত্রাসীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না যারা এখনও পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে। বলা হয়ে থাকে যে, আফগানিস্তানের বাইরেও যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানের সঙ্গে অনেক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি রয়েছে। একপক্ষীয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করা। জনসংখ্যার ভিত্তিতে পাকিস্তান বর্তমানে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। আগামী ১০ বছর নাগাদ পাকিস্তানের জনসংখ্যা ২৪৫ মিলিয়ন হবে। পাকিস্তানে বৈশ্বিকভাবে বিশাল সংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে। যদি তাদের শক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় তবে এই তরুণরা নিজেদের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ হিসাবে প্রমাণ করতে পারে। তবে, যদি তাদের শক্তি উৎপাদনশীল উপায়ে কাজে না লাগানো যায় তাহলে এটি একটি জনসংখ্যাতাত্ত্বিক টাইমবমে পরিণত হবে। পাকিস্তানের জনসংখ্যা অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া এবং নাইজিরিয়ার মতো একই লীগে রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিটি দেশের সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক, জনগণের সঙ্গে জনগণের, প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং উদ্ভাবনের সম্পর্ক রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত ও গভীর সম্পর্ক হওয়া উচিত। কৃষি ক্ষেত্রের দিক থেকে পাকিস্তান আরেকটি আর্জেন্টিনা বা ইউক্রেনে পরিণত হতে পারে। পাকিস্তানের জিডিপির ২০ শতাংশ আসে কৃষি ক্ষেত্র থেকে এবং এ খাতে দেশটির ৪৩ শতাংশ কর্মশক্তি নিয়োগ হয়। পাকিস্তানের রফতানিতে কৃষি বিশাল ভূমিকা পালন করে এবং তা প্রায় ৮০ শতাংশ। পাকিস্তানের পর্যটন ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটির প্রাচীন ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার জন্য পাকিস্তান সুপরিচিত।
×