ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৪০ দিনের কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে বাবা!

প্রকাশিত: ১০:২০, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

  ৪০ দিনের কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে বাবা!

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ১৭ জানুয়ারি ॥ আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার সময় ছেলেসন্তান না হওয়ায় জিদনী নামে ৪০ দিন বয়সী এক কন্যাসন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে পাষন্ড বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে এবং বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। অজ্ঞাত লোককে আসামি করে শিশুটির মা হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী গ্রামের জাহাঙ্গীর সিকদার ও সীমা দম্পতির সোহাগী (৯) এবং জান্নাতী (৩) নামে দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। এর পর গত ৮ ডিসেম্বর ওই দম্পতির আরেকটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। বাবা কন্যাসন্তান জন্মের বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। তিনি একটি ছেলেসন্তানের আশা করছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার সময় বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার জিদনীকে নিয়ে ঘরে শুয়েছিল। এ সময় তার স্ত্রী সীমা বেগম এবং তার শাশুড়ি পারুল বেগম ঘরের বাইরে চাল ঝাড়ার কাজ করছিলেন। শিশুটির মা সীমা বেগম এবং নানি পারুল বেগম কাজ শেষে রাত ১১টার সময় ঘরে প্রবেশ করে জিদনীকে দেখতে না পেয়ে চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এবং বাড়ির অন্যান্য লোকজন ছুটে এসে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঘরের পেছনের ডোবা থেকে ঘুমানোর কাঁথা-বালিশ এবং বিছানাপত্রসহ জিদনীর লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ রাত ৩ টার সময় লাশ উদ্ধার করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পাষ- বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। এলাকাবাসীর ধারণা, পর পর দুটি কন্যাসন্তান থাকার পরও আকেটি কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়ায় রাগে পাষন্ড বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার নিজ কন্যাশিশু জিদনীকে পানিতে ফেলে হত্যা করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়না বেগম জানান, কন্যাসন্তান হওয়ার পর স্ত্রী সীমার সঙ্গে রাগ করে কোন কথা বলত না স্বামী জাহাঙ্গীর সিকদার। এবং সন্তান জিদনীকে নতুন কোন কাপড়চোপড়ও কিনে দেয়নি সে। পানিতে ফেলে শিশু হত্যার খবর পেয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মহরম আলী ও আমতলী, তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়দ রবিউল ইসলাম এবং আমতলী থানার ওসি শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মা সীমা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত লোককে আসামি করে শুক্রবার দুপুরে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কোন তথ্য পাওয়া গেলে তাকে আসামি করা হবে।
×