ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ এখন সম্ভাবনার দেশ ॥ মোমেন

প্রকাশিত: ১০:১৯, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

 বাংলাদেশ এখন  সম্ভাবনার দেশ ॥ মোমেন

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধ্যান-ধারণা চিন্তা হচ্ছে মানুষের কল্যাণ ও দেশের উন্নয়ন। তার এই চিন্তা চেতনার কারণেই দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন দেশ নয়, এখন ‘ল্যান্ড অব অপরচুনিটি (সম্ভাবনার দেশ)। এই মুজিববর্ষে সারা বিশ্বকে আমরা তা জানান দিতে চাই। এজন্য বিশ্বজুড়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করা হবে। বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলদেশের মানুষের জন্য নয়, সারাবিশ্বের নির্যাতিত মানুষের অধিকারের কথা বলেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বঙ্গবন্ধুর নামে সড়ক ও স্থাপনার নামকরণের কাজ চলছে। এবার ইউনেস্কো যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনে সম্মত হয়েছে। গত ৭ জানুয়ারি সরকারের তৃতীয় মেয়াদের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটের উন্নয়নে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেগুলো ক্রমান্বয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে। চলমান উন্নয়নের চিত্র ও আগামী দিনের কর্মব্যবস্থা নিয়ে তিনি শুক্রবার বিকেলে সিলেট সার্কিটহাউসে সংবাদ সম্মেলন করেন। পররষ্ট্রমন্ত্রী তার মেয়াদে সিলেটে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো উল্লেখ করে বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলো প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহের কারণে বাস্তবায়ন হচ্ছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ৬ লেন হচ্ছে। এই মহাসড়ক নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে এডিবি। মহাসড়ক ৬ লেন হলে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় সিলেট থেকে ঢাকায় যাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এছাড়া সিলেট-আখাউড়া রেলপথ ডাবল গেজ করার পরিকল্পনার কথা জানান মন্ত্রী। রেলপথ সংস্কার ও আধুনিকায়নের পাশাপাশি সিলেট রুটে চলাচলকারী ট্রেনে নতুন বগি সংযোজন ও নতুন ট্রেন চালুর কথাও জানান তিনি। ওসমানী বিমানবন্দর থেকে শীঘ্রই সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরটিকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করতে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ কাজের অর্থ বরাদ্দ হয়ে গেছে। মাস দুয়েকের মথ্যে এর টেন্ডার হবে এবং মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ দ্রুতই শুরু হবে। মন্ত্রী জানান, সিলেটে একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জায়গা ইতোমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। শীঘ্রই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে। মন্ত্রী বলেন, সিলেট বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল নগরী হবে। এই লক্ষ্যে কাজ চলছে। জনগণ ঘরে বসে অন লাইনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য পাবে। ভূমি অফিস থেকে পর্চা নিতে, থানায় গিয়ে জিডি করতে আর সেখানে যেতে হবে না। এতে নাগরিক সুবিধা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে যে কোন সেবার জন্য ৩৩৩-এ কল করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া পুরো সিলেটকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে যার মাধ্যমে সিলেটে অপরাধের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে ১২শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বরাদ্দ। সিলেটের সৌন্দর্যবর্ধন এবং জলাবদ্ধতা দূরীকরণে যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সিলেটে শিক্ষার মান উন্নয়নে এক সঙ্গে ৬০টি নতুন ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণের কাজ চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, ১২৮ কলেজে আড়াই থেকে ৮ কোটি টাকা পর্যন্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া শাহপরাণ দরগাহে দৃষ্টিনন্দন করা, সুরমা নদী খনন, নদীর তীর রক্ষা, সিলেটের ট্রাক ও বাস টার্মিনালকে নতুনভাবে আধুনিকায়ন করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এসব মেগা প্রকল্প ছাড়াও সিলেটের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সৌন্দর্যবর্ধন ও অবকাঠামো উন্নয়নে চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের বর্ণনাও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গত একবছরে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ক্যাজুয়ালিটি বিভাগ চালু করা, নতুন পরিসরে ইমার্জেন্সি বিভাগ চালু, নতুন এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ চালু, নতুন আরেকটি মেডিসিন ওয়ার্ড চালু, আইসিইউ-২ নামে নতুন আরেকটি আইসিইউ বিভাগ চালু, অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত নতুন একটি সিটিস্ক্যান মেমিন চালু, নবজাতকের জন্য বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্র চালু, বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট চালু এরমধ্যে অন্যতম।
×