ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শর্ত ভেঙ্গে পদ্মায় বালু উত্তোলন ॥ উপেক্ষিত নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

  শর্ত ভেঙ্গে পদ্মায় বালু  উত্তোলন ॥ উপেক্ষিত  নিষেধাজ্ঞা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক বালু ব্যবসায়ী পদ্মা নদীর তীরের কাছাকাছি এলাকা থেকে দেদার বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন। এতে রাজশাহী শহরসহ নির্মাণাধীন মেগাপ্রকল্প ‘বঙ্গবন্ধু হাইকেট পার্ক’ রক্ষা বাঁধের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। ইতোমধ্যেই নতুন নির্মিত এ বাঁধের দুটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে। এই বালু ব্যবসায়ী নাম আনোয়ার হোসেন। তার বাড়ি নগরের বুলনপুর এলাকায়। তিনি নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। জেলার পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের মদনপুর, কসবা ও চারহরিপুর মৌজার বালুমহালের তিনি ইজারা নিয়েছেন। কিন্তু ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে তিনি নদীর তীরের নিকটবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করছেন। শর্ত ভেঙ্গে বালুমহালের বাইরে গিয়ে সোনাইকান্দি এলাকায় নতুন নির্মিত পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধের পাশ থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এ কারণে নতুন বাঁধের দুইটি স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে চিঠি দেয়া হয়। এর পরও সেখান থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে এই বালুকারবারি। তবে বালু মহালের ইজারাদার আনোয়ার হোসেনের দাবি তারা ইজারা শর্ত মেনেই বালু উত্তোলন করছেন। রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইজারার নিয়ম অনুযায়ী নদী তীরের দেড় কিলোমিটারের বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন করার শর্তে তাদের বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়েছিল। অথচ আনোয়ার হোসেন নদীর তীরের এক কিলোমিটারের ভেতরেই বালু উত্তোলন করছেন। অভিযোগ পেয়ে গত মঙ্গলবার বিকেলে পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবুল হায়াত বালুমহালে অভিযান চালান। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিনি আনোয়ার হোসেনের ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন। সেই সঙ্গে ওই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ দেন। একই অভিযোগে রজব আলী নামের আরেক ইজারাদারের নবগঙ্গা ও হাড়ুপুর বালুমহালের বালু উত্তোলনের কারণে একই দন্ড দেয়া হয়। তবে তিনি রাতে বালু উত্তোলন করলেও বুধবার সকাল থেকে বন্ধ রাখেন। আর আনোয়ার হোসেন বালু তুলেই চলেছেন। হরিপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সাইদুর রহমান বাদল বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার পর রাত থেকেই আনোয়ার হোসেন সোনাইকান্দি এলাকায় পদ্মার তীর রক্ষা নতুন বাঁধের নিচ থেকে বালু উত্তোলন শুরু করেন। ওই বালুমহালের কাছে গিয়ে দেখা যায়, আগের স্থান থেকেই চারটি খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। আগের মতোই নতুন বাঁধের নিজ থেকে বালু নিয়ে কিছুক্ষণ পরপর বালুভর্তি ট্রাক রাস্তায় উঠে আসছে। পবার হরিপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মাহফুজ আলী বলেন, তার ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতদিন ধরে তারা একই জায়গা থেকে বালু তুলছেন। এভাবে নদীর পাড়ের এত কাছে থেকে বালু তোলা হলে এলাকার ভাঙ্গনের হুমকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
×