ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উদ্বোধনের অপেক্ষায় বাঁশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

 উদ্বোধনের অপেক্ষায় বাঁশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ‘বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই, মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই’? যতীন্দ্র মোহন বাগচীর কাজলা দিদি কবিতাটি এখনও মনে করিয়ে দেয় কালের আবর্তে হারানো বাঁশ বাগানের কথা। সেই বাঁশ বাগানের ঐতিহ্য ফেরাতে উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় স্থাপিত হয়েছে আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের প্রথম ওই কেন্দ্রটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষার দিন গুনছে। আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র রিসার্স অফিসার আনিসুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নির্দেশনায় ওই গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। কার্যক্রম শুরু হলে এ অঞ্চলের ৩০ থেকে ৪০ গুণ বাঁশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। প্রক্রিয়াকরণের প্রশিক্ষণ প্রদান করে চার থেকে পাঁচ গুণ বাঁশের আয়ু বাড়ানো হবে। তিনি জানান, বর্তমানে ১৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন কেন্দ্রটিতে। ডোমার বন বিভাগের পাশে মনোরম পরিবেশে দুই একর জমির ওপর নির্মিত প্রতিষ্ঠানটি ২৬ জনবল নিয়ে শীঘ্রই পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করতে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। আঞ্চলিক ওই গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, কাঠের আসবাবপত্র তৈরিতে বন ধ্বংসের হার ব্যাপক। বনের গাছ বাঁচাতে বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করা হলে গাছ রক্ষা পাবে। একটি বাঁশঝাড়ের ৩০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত উৎপাদন ক্ষমতা থাকে। বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র দর্শনীয় ও পরিবেশবান্ধব। এর স্থায়িত্ব প্রায় ২৫ বছর, দামও অর্ধেক। একটি সেগুন গাছ পরিপক্ব হতে সময় লাগে অন্তত ৪০ বছর। আর একটি বাঁশ পরিপক্ক হতে সময় লাগে তিন থেকে চার বছর। গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে সমাপ্তের পরিকল্পনা থাকলেও সেটি এখন অপেক্ষায় উদ্বোধনের। রংপুর বিভাগের ৫৮ উপজেলার আধুনিক পদ্ধতিতে বাঁশ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রটির। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে ৩৩ জাতের বাঁশ রয়েছে। রংপুর অঞ্চলের সাধারত মোথা থেকে বাঁশের চাষ হয়। উন্নত পদ্ধতি কঞ্চি কলম থেকে বাঁশ চাষে উৎপাদন বেশি হয়। কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করবে কেন্দ্রটি। পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে ওই বাঁশ থেকে শৌখিন আসবাবপত্রসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের বিভিন্ন উপকরণ তৈরির প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
×