ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

টেলিভিশন ভাষণে রুহানি

যুদ্ধ এড়াতে সংলাপ চায় তেহরান

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

 যুদ্ধ এড়াতে সংলাপ  চায় তেহরান

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বৃহস্পতিবার বলেছেন, তিনি যুদ্ধ এড়িয়ে যেতে চান। জানুয়ারির গোড়ার দিকে তেহরান ও ওয়াশিংটন এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সরাসরি সামরিক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের আগে রুহানির এই প্রচারণা একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তেহরান এবং পশ্চিমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচী নিয়ে উচ্চ উত্তেজনা বিরাজ করছে। তিনি বলেন, বিশ্বের সঙ্গে সংলাপ এখনো ‘সম্ভব’। টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তব্যে রুহানি বলেছেন, ‘সরকার প্রতিদিন সামরিক সংঘাত ও যুদ্ধ প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে।’খবর এএফপির। জানুয়ারির গোড়ার দিকে মার্কিন ড্রোন হামলায় বাগদাদে ইরানের প্রধান জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার কিছুদিন পর, ইরান ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে এ অঞ্চলে নতুন যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি হয়। মার্কিন সামরিক বাহিনীর বক্তব্য অনুসারে, তবে ওই হামলায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোন প্রাণহানি ঘটেনি। রুহানি বলেন,‘ ইরানের মধ্যপ্রাচ্য সামরিক কৌশলের’ কারিগর কাশেম সোলাইমানি হত্যার ‘ক্ষতিপূরণস্বরূপ’ ওই হামলা চালানো হয়েছিল। ইরান মার্কিন প্রতিহিংসার ব্যাপরে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে গিয়ে ওই হামলার কয়েক ঘণ্টা পর ভুলবশত ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করে। এবং মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় বিমানে আরোহণ করা ১৭৬ যাত্রীর সকলে নিহত হয়। যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল ইরান ও কানাডার নাগরিক। কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রী বৃহস্পতিবার এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য ইরানকে চাপ দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। ইরান আগের চেয়ে বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে ॥ ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, ২০১৫ সালে পরমাণু সমঝোতা সই করার আগে তেহরান যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করত এখন তার চেয়ে বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। বৃহস্পতিবার ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫৯তম বার্ষিক বৈঠকে বক্তৃতা দেয়ার সময় রুহানি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আণবিক জ্বালানির প্রশ্নে ইরান কোন বাধা মানবে না। ড. হাসান রুহানি বলেন, ‘আমরা পরমাণু সমঝোতা সই করার আগের চেয়েও এখন বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছি এবং আমরা অলস বসে ছিলাম না। চুক্তির অপরপক্ষগুলো যদি তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে তাহলে আমরাও একই রকমের ব্যবস্থা নেব।’ প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশকে এই পরমাণু সমঝোতা হতে বের করে নিয়েছেন তখন ইরান ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছে, ট্রাম্পের মতো ভুল করেনি। এর পরিবর্তে বরং ইরান পরমাণু সমঝোতার প্রতি অনুগত দেশগুলোকে তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে। ইরানের এই অবস্থান সঠিক ছিল এবং ইরানের ভূমিকার কারণে মার্কিন মিত্র দেশগুলো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করেছে। রুহানি বলেন, পরমাণু সমঝোতার মাধ্যমে তেহরান প্রমাণ করেছে, বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন ছিল। পরমাণু সমঝোতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেন, ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত আচরণ শুধুমাত্র ইরানের জন্য নয় বরং সারাবিশ্বের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে। সম্প্রতি ইরানের পরমাণু সমঝোতা ইস্যুকে কেন্দ্র করে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিষয়ে ইউরোপের দেশগুলোর ওপর ট্রাম্প যে চাপ সৃষ্টি করেছেন তারও নিন্দা ও সমালোচনা করেন রুহানি। ইরানের প্রেসিডেন্ট তার বক্তৃতায় আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানামুখী চাপ সত্ত্বেও আগের যেকোন সময়ের চেয়ে তার দেশ এখন বেশি শক্তিশালী এবং মার্কিন ষড়যন্ত্র ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও উন্নয়নের সে পথ ধরে রাখবে ইরান। সম্প্রতি ইরানের সামরিক বাহিনী দু’টি মার্কিন ঘাঁটিতে যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তার প্রশংসা করেন হাসান রুহানি।
×